- রূপক সাহা
দরজাটা খুলে দিয়েই সরমা সোজা কিচেনের দিকে চলে গেল। এক পলক তাকিয়ে অখিলেশ বুঝতে পারলেন, বাড়িতে অশান্তি হয়েছে। না হলে প্রতিদিনের মতো সরমা জিজ্ঞেস করত, ‘এত দেরি হল কেন গো ?’
অফিস থেকে তাড়াতাড়ি… সন্ধে ছ’টায় ফিরে এলেও সরমা একই প্রশ্ন করে। সরকারি অফিস থেকে অবসর নেওয়ার পর অখিলেশ জয়েন করেছেন একটা রিয়েল এস্টেট কোম্পানিতে। অফিস সেই সল্টলেকের পাঁচ নম্বর সেক্টরে। বজবজে গঙ্গার ধারে চারটে বড় টাওয়ার তোলার কাজ চলছে। সাইটে গেলে কোনও কোনও দিন অখিলেশের সত্যিই ফিরতে রাত ন’টা–সাড়ে ন’টা হয়ে যায়। সরমা যাতে দুশ্চিন্তা না করে সেজন্য আগেভাগে ফোন করে তিনি জানিয়ে দেন, দেরি হতে পারে। বাড়ি ফেরার পর সেদিনও সরমা একটাই প্রশ্ন করে, ‘ অফিসের গাড়িতে ফিরলে, না কি উবরে?’
স্বামী-স্ত্রীর সংসার। ছেলে প্রবাল আমেরিকায় চাকরি করে এক সফটওয়্যার কোম্পানিতে। মেয়ে ঝিমলি বরের সঙ্গে থাকে বেঙ্গালুরুতে। আত্মীয়স্বজনদের সঙ্গে মোটামুটি সদ্ভাব বজায় রেখে চলে সরমা। এমনিতে সাংসারিক কোনও সমস্যা নেই অখিলেশের। কিন্তু রোজ এক অশান্তি। তুচ্ছ কারণে কাজের মেয়ে পদ্মার সঙ্গে সরমার ঝামেলা। মুখে মুখে তক্ক করার বদ অভ্যাস পদ্মার। এই কারণে কোনও বাড়িতে বেশিদিন টিকতে পারে না। আশ্চর্য, সরমার কাছে ও পাঁচ-পাঁচটা বছর রয়ে গেল কী করে, তা ভেবে অখিলেশ অবাক হন। মাঝে বেশ কয়েকবার মেজাজ দেখিয়ে পদ্মা কাজ ছেড়ে দিয়েছিল। কিন্তু দু’ চারদিন পর নিজেই আবার ফিরে আসে। যেন কিছুই হয়নি, এমন ভাব দেখিয়ে গেরস্থালির কাজ শুরু করে দেয়।
গল্ফ গ্রিনে নতুন আবাসনে অখিলেশ যখন প্রথম ফ্ল্যাট কেনেন, তখন পদ্মা শুধু বাসন মাজা, জামাকাপড় কাচা আর ঘর ঝাঁট দেওয়ার কাজ করত। বছর খানেক আগে প্রবাল আমেরিকায় চলে যাওয়ার পর মাকে বলেছিল, ‘সংসারের জন্য অনেক সময় দিয়েছ মা। এ বার রান্নার ভারটা চাপিয়ে দাও পদ্মামাসির উপর। যা লাগে, আমি এখান থেকে পাঠিয়ে দেব।’ কথাটা শুনে অখিলেশ মুচকি হেসেছিলেন তখন। চট করে হেঁশেল ছেড়ে দেওয়ার মতো মানুষ সরমা নয়। কোথায় কী ফোড়ন দিতে হবে, কোথায় কতটা আদা বা টমেটো, লংকা বা চিনি, তা নিয়ে রোজ খিটিমিটি পদ্মার সঙ্গে। পদ্মা কিচেনে ঢোকার পর থেকে ছ’টা করে তেলের প্যাকেট আনতে হচ্ছে প্রতি মাসে। আগে যেখানে তিনটের বেশি লাগত না। অখিলেশের সামনেই পদ্মা একদিন বলে ফেলেছিল, ‘তোমাগো যে কী টেস, আমি বুঝি না বৌদি । এত কম ত্যালে রান্না … আমাগো বস্তিরও কেউ মুখে দিব না।’
শুনে খুব অসন্তুষ্ট হয়েছিলেন অখিলেশ। সরমাকে বলেও ফেলেন, আজই তুমি দূর করে দেবে পদ্মাকে। কিন্তু সরমা তাতে সায় দেয়নি। উলটে, মোলায়েম স্বরে বলেছিল, ‘ওর কথা ধোরো না তো। পাগলি টাইপের। কোথায় কী বলতে হয়, জানে না। এত অল্প টাকায় রাঁধুনি তুমি কোত্থাও পাবে না। সকাল আটটায় কাজে আসে। বেলা এগারোটার মধ্যে সব কাজ কমপ্লিট করে। ফের সন্ধেবেলায় এসে টুকটাক জিনিস এনে দেয়। রুটি বানিয়ে দিয়ে যায়। ঠিকে লোকেরা কোত্থাও এত সময় দেয় না।’
কথাগুলো শুনে তাল মেলাতে পারেন না অখিলেশ। এই সরমাই দিন দুই আগে নালিশ করেছিল, ‘পদ্মাকে নিয়ে কী করি বলো তো? ও কিচেনে ঢোকার আগে আমার গ্যাস সিলিন্ডার চল্লিশ-বিয়াল্লিশ দিনের আগে ফুরাত না। এই মাসে মাত্তর ছাব্বিশ দিনে রান্নার গ্যাস ও শেষ করে দিল । এতবার মানা করেছি, বার্নার হাই করে সবজি কুটতে বোসো না। আমার কোনও কথাই ও কানে নেয় না।’
পদ্মার বিরুদ্ধে অভিযোগের তালিকা দীর্ঘ। আজ বাড়ির পরিবেশটা থমথমে কেন, তা আন্দাজ করার ফাঁকেই হাত-মুখ ধুয়ে, পোশাক বদলে রোজকার মতো টিভিতে টক শো দেখতে বসলেন অখিলেশ। টিভিতে কলতলার ঝগড়া সবে শুরু হয়েছে, এমন সময় চায়ের কাপ হাতে তুলে দিয়ে সরমা বলল, ‘আজ একটা ডিসিশন নিলাম বুঝলে। এ বার থেকে পদ্মা কামাই করলে ওর মাইনে কেটে নেব।’
বাড়ির থমথমে পরিবেশের মূল কারণটা তা হলে পদ্মার না আসা। ডুব মারলে মেয়েটা কোনও দিন ফোন করে তা জানায় না। নিজেও ফোন ধরে না। সেদিন সারাটা দিন মেজাজ খাট্টা হয়ে থাকে সরমার। পদ্মাকে জব্দ করার জন্য রাতের এঁটো বাসন বেসিনে ফেলে রাখে। পরদিন কাচার জন্য বাসি জামাকাপড়ের সঙ্গে জুড়ে দেয় পিলো আর বেড কভারও। টিভির দিকে চোখ রেখেই অখিলেশ জিজ্ঞেস করলেন, ‘আজ আসেনি বুঝি।’
‘খবরও দেয়নি। ওর জন্য এগারোটা পর্যন্ত ওয়েট করলাম। ওদের পাইপ কলোনি বস্তির যে মেয়েটা ওপরের তলায় দীপ্তিদের ফ্ল্যাটে কাজ করে, সেই পুতুলের মুখে শুনলাম, পদ্মা স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের লাইন দিতে গেছিল। কিচেন সামলে, গোপাল সেবা সেরে আমাকে লাঞ্চ করতে হল বিকেল চারটের সময়। এ বেলাতেও আসেনি।’ সরমা গজগজ করতেই থাকল। ‘স্বাস্থ্য সাথী কার্ড করতে যাবি, আমাকে কাল বলে রাখলে আমি কি তোকে আটকাতাম?’
অখিলেশ নরম গলায় বললেন, ‘হপ্তায় একটা দিন ছুটি তো ও চাইতেই পারে।’
শুনে তখনই মুখটা কঠিন হয়ে গেল সরমার। বলল, ‘চমৎকার। ছুটি চাওয়ার অধিকার শুধু বাড়ির বৌদেরই নেই, তাই না? পদ্মা কামাই করলে তোমার কী। তুমি তো আর আমার হাতে হাত লাগাবে না। যাও, গিয়ে শুনে এসো, নীচের ফ্ল্যাটে ঝি না এলে অংশুদা কতটা হেল্প করেন রীতা বৌদিকে। একেক দিন অফিসে পর্যন্ত যায় না।’ কথাগুলো বলে রাগ করে বেরিয়ে যায় সরমা।
অভিযোগের তির তাঁর দিকে ঘুরে গেলে অখিলেশ মুখে কুলুপ এঁটে থাকেন। বাসন মাজা বা জামাকাপড় কাচার জন্য পদ্মা কেন এত সাবান খরচ করে, তা নিয়ে একটা প্রশ্নও করেন না। পদ্মার স্পর্ধা দেখলে সরমার মতো একেকদিন তাঁরও মেজাজ খারাপ হয়ে যায়। একেক সময় ও এমন আলটপকা মন্তব্য করে, অখিলেশের ঠোঁটের ডগায় কড়া কথা এসে যায়। কিন্তু সরমার কথা ভেবে অখিলেশ নিজেকে সামলে নেন। ক’দিন আগে ফ্রিজের ভিতরে ঠান্ডাটা কমে গেছিল। কম্প্রেসার বিগড়েছে ভেবে, ফোনে মিস্ত্রি ডাকছেন অখিলেশ। তাঁর সামনেই পদ্মা বলেছিল, ‘আপনেগো ফ্রিজ এত পুরানা, এখন আর চলে না দাদা। বৌদিরে কতদিন ধইর্যা কইতাসি, মাসে মাসে কিস্তির টাকা দিইয়া একডা ডাবল ডোর ফ্রিজ কিইন্যা নাও। আমার মাইয়া মালা সেদিন কিনসে। দ্যাখলে চোখ জুড়াইয়া যায়।’
সরমার মুখেই অখিলেশ শুনেছেন, পদ্মার বড় মেয়ের নাম মালা। জামাই রুলিং পার্টির ক্যাডার, উবর চালায়। মেয়েটা আগে দু’তিনটে বাড়িতে ঠিকে কাজ করত। এখন নাকি চাকরি করে সোনারপুরে চামড়ার ব্যাগ তৈরির কোনও এক কারখানায়। মাধ্যমিক পাশ বলে, পদ্মার ধারণা, মালা খুব বিচক্ষণ। মালা নাকি ওর মাথায় ঢুকিয়েছে, যে বাড়িতে সম্মান দেয় না, সেই বাড়িতে কাজ করার দরকার নেই। মাঝে মাঝেই কথাটা পদ্মা শোনায় সরমাকে। ‘বৌদি গো, আমাগো পাইপ কলোনির ঘরে ঘরেও টিভি, ফ্রিজ, এসি আর মোটরবাইক। তোমাগো সাথে আমাগো কুনও পার্থক্য নাই। একডাই তফাত, তোমাগো ব্যাংকে অনেক টাকা আছে, আমাগো নাই।’
কোভিডের সময় পদ্মার আত্মসম্মানবোধ দেখে একটু অবাকই হয়েছিলেন অখিলেশ। পদ্মাদের বস্তিতে অনেকের অসুস্থ হওয়ার খবর পেয়ে, হাউসিংয়ের কর্তারা ঠিক করেছিলেন, ঠিকে ঝি-দের কিছুদিন ঢুকতে দেওয়া হবে না। যাতে হাউসিংয়ে সংক্রমণ না ছড়ায়। সরমাও তাই মানা করে দিয়েছিল পদ্মাকে, ‘এখন কিছুদিন তোমাকে আসতে হবে না। তবে আমি মাইনে কাটব না। ফি মাসের পয়লা তারিখে এসে তুমি টাকাটা নিয়ে যেও।’
শুনে বেঁকে বসেছিল পদ্মা, ‘আসল কথাডা ক্যান কও না বৌদি। তোমাগো হাউসিনে সবাই যাতায়াত করতাসে, দুধওয়ালা, সবজিওয়ালা … কাউরে তোমরা মানা করো নাই। আমরা বস্তিতে থাকি বইল্যা কি মানুষ না?’ পদ্মা সাফ বলে দিয়েছিল, বিনা পরিশ্রমে ও মাইনে নেবে না। হাউসিংয়ে ঢুকতে কেউ বাধা দিলে বস্তির ছেলেদের নিয়ে এসে হামলা করবে। পদ্মা তখন জেদ করে রোজ কাজে আসত। সিকিউরিটি গার্ডরা বেশ কয়েকবার ওকে আটকানোর চেষ্টা করে, শেষে হাল ছেড়ে দেয়। এই যার ট্র্যাক রেকর্ড, তার মাইনে কেটে নিলে সরমা কত বড় বিপদ ডেকে আনবে, অখিলেশ তা অনুমান করতে পারলেন না।
পদ্মা যে ফাঁকিবাজ নয়, সে ব্যাপারে সরমার সঙ্গে একমত অখিলেশ। যেদিন মেজাজ ভালো থাকে, সেদিন মনপ্রাণ ঢেলে কাজ করে। নীচের ফ্ল্যাটের অংশুমানের সঙ্গে একদিন কথা হচ্ছিল অখিলেশের। মেড-দের বায়নাক্কা দিন কে দিন বাড়ছে। সোসাইটি থেকে একটা কিছু করা দরকার। কথায় কথায় অংশুমান সেদিন বলছিল, ‘আমার কাছে খবর আছে দাদা, বস্তিতে কেউ ওদের ব্রেনওয়াশ করছে। সে-ই ওদের ময়দানে মিটিং-মিছিলে নিয়ে যায়। শীতের সময় কম্বল দেয়। দোলের সময় ওদের বাচ্চাদের রং-পিচকারি আর ক্রিসমাসে কেক–প্যাটিস ডিস্ট্রিবিউট করে। বস্তিতে দুর্গাপুজো, কালীপুজো এমনকি তারা মা পুজোতেও ভালো টাকা কন্ট্রিবিউট করে। লক্ষ করবেন, মেড-রা মাঝেমধ্যেই কোনও না কোনও কারণ দেখিয়ে আমাদের কাছ থেকে টাকা ধার নেয়। হিসেব করে দেখবেন, ওরা এত আগাম নিয়ে রাখে, কোনও কারণে অসন্তুষ্ট হলে আপনি তাড়িয়েও দিতে পারবেন না। দিলে বকেয়া টাকা কোনওদিনই আদায় করতে পারবেন না। এইভারে ওরা আমাদের বুড়বক বানায়।’
পরে অখিলেশ মিলিয়ে দেখেছেন, অংশুমান যা বলেছে ঠিক। পদ্মার নাতনি টুম্পার বিয়ে। কৃষ্ণনগরের ছেলে, আর্মিতে চাকরি করে। নাতনিকে কানের দুল দেবে বলে সরমার কাছ থেকে পদ্মা তিরিশ হাজার টাকা ধার নিয়েছিল। দিদিমাকে নাকি সোনার জিনিস দিতেই হয়। পদ্মার মাইনে থেকে ধারের টাকা কিস্তিতে কেটে নেওয়ার কথা। কিন্তু ছয় মাস পেরিয়ে যাওয়া সত্ত্বেও টেন পার্সেন্টও ফেরত দেয়নি ও। উলটে, নাতনির বিয়ের সময় দু’সপ্তাহ ধরে সরমাকে ও গল্প শুনিয়েছিল, আইবুড়ো ভাত থেকে শুরু করে অষ্টমঙ্গলা পর্যন্ত ওর কত টাকা খসে গেছে। ফ্ল্যাট বাড়ির বিয়ের মতো, বস্তিতেও বিয়ের আগের দিন ওরা নাকি সংগীতের আয়োজন করেছিল।
পদ্মা তখন বলেছিল, ওর মায়ের দিদিমা, ওর মায়ের বিয়ের সময় সাত ভরির সাতনরি হার দিয়েসিল। ‘হুনসি, দ্যাশের বাড়িতে তহন আমাগো গোলাভরা ধান, পুকুরভরা মাছ, আম-জাম-কাঁঠাল ভরা বাগান। দ্যাশ ভাগ হইয়া গেল। একবস্ত্রে বাবা আমাগো লইয়া এহানে চইল্যা আইল। বিয়াতে দেওন-থোওনের ইচ্ছাটা তো আমরা ফেইল্যা আসি নাই। বাঙালগো অক্তে আছে হেইডা। আমার একডাই নাদনি বুঝলা, বৌদি। আমরা রিলেটিফরা সবাই মিইল্যা দু’হাত ঢাইল্যা খরচা করসি। টুম্পার শউরবাড়ির থন কইল, কইলকাতা থেইক্যা খাট–আলমারি পাঠাইতে অইব না। আপনেরা মূল্য ধইরা দিয়েন। আমরাই পছন্দ কইর্যা কিইন্যা নিম। হ্যারা খাটের দামই নিসে সোয়া লাখ টাকা। ঝিমলি দিদিমণির বিয়াতে তোমাগো খাট-আলমারি তো দিতে হয় নাই। দিতে হইলে বুঝতা।’
পদ্মার জাতে ওঠার চেষ্টা মাঝেমধ্যে অসহ্য লাগে অখিলেশের। ঝিমলি লাভম্যারেজ করেছিল। বিয়ের আগে কথা বলতে এসে, হবু জামাই সায়ন বলেই দিয়েছিল, সংসার পাতার জন্য যা কিছু দরকার, তা সবই ওর বেঙ্গালুরুর ফ্ল্যাটে আছে। খাট-আলমারির পিছনে ফালতু খরচা করার দরকার নেই। ও-ই সাজেস্ট করেছিল, রিসেপশনটা দু’তরফ মিলে করা হোক। বলেছিল, ‘আমার বাবা রিটায়ার্ড, আপনিও তাই। আমি চাই, ভবিষ্যতের কথা ভেবে আপনারা দুজনেই খরচ কমান।’ জামাইয়ের বিচক্ষণতা যে পরে একটা সময় পদ্মার আত্মশ্লাঘার কারণ হতে পারে, অখিলেশ ভাবতেও পারেননি।
যে রিয়েল এস্টেট কোম্পানিতে অখিলেশ চাকরি করেন, তার মালিক সুধাময়বাবুর ছেলের পৈতে। বালিগঞ্জ প্লেসে নিজের বাড়িতেই লোকজন খাওয়ানোর ব্যবস্থা করেছেন সুধাময়বাবু। সরমাকে সঙ্গে নিয়ে নেমতন্ন খেতে গিয়েছেন অখিলেশ। উবরে করে বাড়ি ফেরার পথে হঠাৎ সরমা বলল, ‘তোমার মুখে অ্যাদ্দিন শুনতাম, সুধাময়বাবু কোটি কোটি টাকার মালিক। ওঁর ঘরদোরের জিনিসপত্তর আর আত্মীয়স্বজনদের দেখে তো মনে হল না, আমাদের সঙ্গে খুব তফাত আছে। দেখলাম, দুটো মাত্তর তফাত, ওঁর একটা মার্সিডিজ গাড়ি আছে, আর ব্যাংকে প্রচুর টাকা। আমাদের যা নেই।’ শুনে চমকে উঠলেন অখিলেশ। প্রায় এই রকম একটা কথা এর আগেও কার মুখে যেন তিনি শুনেছেন। সমাজচিত্রটা হঠাৎ কেমন যেন বদলাতে শুরু করেছে। সবাই উত্তরণের লক্ষ্যে দৌড়োচ্ছে।