মঙ্গলবার, ১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫

Siliguri | শকুনের খাবার জোগান দিয়ে পুরস্কৃত আজিজর

Date:

মিঠুন ভট্টাচার্য, শিলিগুড়ি: প্রায় কুড়ি বছর ধরে বিলুপ্তপ্রায় শকুন রক্ষায় কাজ করছেন ফুলবাড়ি জটিয়াকালীর বাসিন্দা আজিজর রহমান। তাঁর উদ্যোগকে এবার স্বীকৃতি দিল রাজ্য সরকার। বুধবার সন্ধ্যায় কলকাতার সায়েন্স সিটি অডিটোরিয়ামে আয়োজিত অনুষ্ঠানে পশ্চিমবঙ্গ জীববৈচিত্র্য পর্ষদ আজিজরের ছেলে রাহুল হাসানের হাতে স্মারক ও শংসাপত্র তুলে দিয়েছে। অসুস্থতার কারণে উপস্থিত থাকতে পারেননি তিনি। বাবার হয়ে ছিলেন ছেলে। অনুষ্ঠান মঞ্চে ছিলেন মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, বোর্ড চেয়ারম্যান হিমাদ্রিশেখর দেবনাথ সহ প্রশাসনের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা।

পরিবেশবিদদের মতে, ভারতবর্ষে বিভিন্ন প্রজাতির শকুন দেখতে পাওয়া গেলেও দ্রুত বিলুপ্ত হতে শুরু করেছে প্রাণীটি। রাজাভাতখাওয়ায় কৃত্রিম শকুন প্রজননকেন্দ্র তৈরি করে পরিবেশে ভারসাম্য বজায় রাখার চেষ্টা চলছে। হোয়াইট ব্যাকড ভালচার, স্লেন্ডার বিলড ভালচার এবং লং বিলড ভালচার- উত্তরবঙ্গে মূলত এই তিন ধরনের প্রজাতির দেখা মেলে। সেগুলোর পাশাপাশি অন্য দু’-একটি প্রজাতির শকুনও ফুলবাড়ি বা সংলগ্ন এলাকায় এলে আজিজরের ভাগাড় তাদের খাবারের জোগান দেয়।

তিনি জানালেন, শকুন মূলত নিজের বসবাসের জায়গার আশপাশে একশো কিলোমিটার পর্যন্ত এলাকায় উড়ে বেড়ায়। বর্তমানে খোলা জায়গায় মৃত প্রাণীর দেহ ফেলা প্রায় বন্ধই করে দিয়েছেন মানুষ। সেই কারণে শকুনের খাদ্যের অভাব দেখা দিয়েছে বলে তিনি মনে করেন। পরিবেশপ্রেমী অনিমেষ বসুর কথায়, ‘পরিবেশের স্বার্থেই এই প্রাণীর টিকে থাকা ভীষণ প্রয়োজন।’

পাঁচ বিঘা জমিতে শকুনের জন্য ভাগাড় তৈরি করেছেন আজিজর। হঠাৎ কেন এমন ভাবনা এল মাথায়? বৃহস্পতিবার নিজের বাড়িতে বসে তিনি স্মৃতির গলিপথ ধরে ফিরে গেলেন অতীতে। জানা গেল, বহু বছর আগে শিলিগুড়ি পুরনিগম মৃত প্রাণীর দেহ ফেলার জন্য আশপাশের গ্রামে জায়গা খোঁজা শুরু করে। সে সময় আজিজরের সঙ্গে সুসম্পর্ক ছিল ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার প্রয়াত কৃষ্ণচন্দ্র পালের। কৃষ্ণের কাছ থেকে বিষয়টি শুনে নিজের জমিতে মৃত প্রাণীর দেহ ফেলতে রাজি হন। তারপর বাকি দায়িত্ব নিজের কঁাধেই নিয়ে নেন তিনি। প্রতিবছর শীতের মরশুমের শুরুতেই বিভিন্ন প্রজাতির পাঁচশোরও বেশি শকুন সেখানে আসে। বেশিরভাগই হিমালয়ান গ্রিফন ভালচার।

আজিজর বলছিলেন, ‘এখানে পর্যাপ্ত খাবারের পাশাপাশি ওদের বসবাসের অনুকূল পরিবেশ থাকায় স্বাচ্ছন্দ্যে থাকতে পারে।’ ছেলে রাহুলের বক্তব্য, ‘অনেকেই শকুন সম্পর্কে অসচেতন। ওদের আঘাত করা কিংবা মেরে ফেলা উচিত নয়। বরং অস্তিত্ব রক্ষায় সচেষ্ট হওয়া প্রয়োজন।’

Kuhelika Barman
Kuhelika Barmanhttps://uttarbangasambad.com/
Kuhelika Barman is working as Sub Editor Since 2016. Presently she is attached with Uttarbanga Sambad Digital. She is involved in Copy Editing, Uploading in website and various social media platforms.

Share post:

Popular

More like this
Related

Malda | বিষাক্ত ধোঁয়ায় ঢাকল ওয়ার্ড, শ্বাসকষ্ট রোগী-চিকিৎসকদের! আগুন আতঙ্ক হরিশ্চন্দ্রপুর হাসপাতালে

হরিশ্চন্দ্রপুর: আগুন লাগাকে কেন্দ্র আতঙ্ক ছড়াল মালদা (Malda) জেলার...

Alipurduar | আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালে নেই রেডিওথেরাপির ব্যবস্থা, ক্যানসার রোগীকে নিয়ে ছুটতে হচ্ছে মালদায়

অভিজিৎ ঘোষ, আলিপুরদুয়ার : রাজ্য সরকারের উদ্যোগে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন...

Indian Railways | প্ল্যাটফর্ম বদল হবে না কুম্ভগামী ট্রেনের

প্রণব সূত্রধর, আলিপুরদুয়ার : নয়াদিল্লি স্টেশনে মহাকুম্ভে যাওয়া পুণ্যার্থীদের...

Bagdogra Airport | বাগডোগরা বিমানবন্দরে কয়েকশো কোটির কাজ, দুই ফুলের মিলিজুলি সিন্ডিকেটরাজ

রণজিৎ ঘোষ : রাজনৈতিক মতপার্থক্য বিস্তর। কিন্তু তাতে কী?...