শুভঙ্কর চক্রবর্তী এবং শমিদীপ দত্ত, শিলিগুড়ি : রক্ষকই ভক্ষকের ভূমিকায়। এবার পুলিশের বিরুদ্ধেই ধর্ষণের অভিযোগ উঠল। জলপাইগুড়ির রাজগঞ্জ থানার এসআই সুব্রত গুনের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ তুলেছেন শিলিগুড়ির এক তরুণী। শুক্রবার সন্ধ্যায় অভিযুক্ত এসআই থানার অদূরে তাঁর বাড়িতে ডেকে নিয়ে গিয়ে তরুণীকে ধর্ষণ এবং শারীরিক অত্যাচার করেছেন বলে রাতে শিলিগুড়ি মহিলা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়েছে। অভিযোগ জানাতে গিয়ে থানাতেই অসুস্থ হয়ে পড়েন তরুণী। বারবার বমি করতে থাকেন। রাত ১টা নাগাদ পুলিশই তাঁকে শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে ভর্তি করায়। ঘটনার কথা জানাজানি হতেই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে পুলিশের অন্দরে। ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে বলেও অভিযোগ তুলেছেন তরুণীর মা।
রাতে টেলিফোনে অভিযোগ প্রসঙ্গে এসআই গুন-এর সাফাই, ‘অভিযোগের কথা শুনেছি। আমাদের বড় সাহেবও থানায় এসেছেন। ওই বিষয়েই আলোচনা করছি। মেয়েটি পূর্বপরিচিত। ওর কাছে টাকা পেতাম, তাই হয়তো এসব করছে।’ এদিন মেয়েটির সঙ্গে তাঁর মাও মহিলা থানায় এসেছিলেন। মায়ের বক্তব্য, ‘যে আমার মেয়ের সর্বনাশ করেছে, তার কঠিন শাস্তি চাই।’
নির্যাতিতার কথায়, ‘অভিযোগ চাপা দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। বারবার বললেও আমার শারীরিক পরীক্ষা করাতে চাইছে না পুলিশ। আমি অভিযুক্তের সর্বোচ্চ শাস্তি চাই।’
পুলিশ সূত্রে খবর, নির্যাতিতা তরুণী একটি বেসরকারি সংস্থায় কর্মরত। অভিযোগপত্রে তিনি লিখেছেন, অভিযুক্ত এসআই কিছুদিন আগে তাঁকে ফোন করে জানান, তরুণীর নামে থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে। সেইজন্য থানায় যেতে হবে। তারপর কিছুদিন থেকে নানা অছিলায় অভিযুক্ত তাঁকে দেখা করতে বলতেন। গতকাল অভিযুক্ত তাঁর বাড়িতে দেখা করতে বলেন তরুণীকে।
শুক্রবার সন্ধ্যায় তরুণী রাজগঞ্জ থানার উলটো দিকে থাকা অভিযুক্ত এসআই-এর বাড়িতে গেলে সেখানেই তাঁকে ধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ। শারীরিক নির্যাতনের কথা কাউকে জানালে অভিযুক্ত পরিবার সহ তাঁকে প্রাণে মারার হুমকিও দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন তরুণী।
রাতে তিনি বলেছেন, ‘মহিলা থানায় গেলেও অভিযোগ না নিয়ে দীর্ঘক্ষণ আমাকে অসুস্থ অবস্থায় বসিয়ে রাখা হয়। একসময় রাজগঞ্জে যেতে বলা হয়।’ এরপর থানাতেই চিৎকার করে কাঁদতে থাকেন নির্যাতিতা। শেষপর্যন্ত একপ্রকার বাধ্য হয়েই অভিযোগ গ্রহণ করে পুলিশ। পুলিশের কোনও আধিকারিকই রাতে বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলতে চাননি।