শিলিগুড়িঃ মেদিনীপুরের পর এবার শিলিগুড়ি। সংস্থা বদলে ফেলা হলেও রাজ্যে সরকারি চিকিৎসায় ব্যবহৃত স্যালাইনের মান নিয়ে বিতর্ক যেন থামছে না। প্রসূতি মৃত্যুর ঘটনায় নিম্নমানের স্যালাইন ব্যবহারকে ঘিরে রাজ্য সরকারকে ঘরে-বাইরে প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে। এবার শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে নতুন সংস্থার স্যালাইনে মিলল ছত্রাক। যা নিয়ে নতুন করে ফের প্রশ্নের মুখে স্বাস্থ্য দপ্তর। বিষয়টি জানাজানি হতেই রোগীর পরিবারের সদস্যদের মধ্যে উদ্বেগ বেড়েছে।
সূত্রের খবর, বুধবার হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারে কর্তব্যরত নার্সরা প্রথমে লক্ষ্য করেন একটি স্যালাইনের বোতলে ছত্রাক রয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে তাঁরা বিষয়টি নিয়ে হাসপাতালের সুপারকে জানান। ছত্রাক থাকা স্যালাইনের বোতলটি বদলে ফেলে নতুন বোতল দেওয়া হয় রোগীকে। বিষয়টি নিয়ে জেলা হাসপাতালের সুপার ডাঃ চন্দন ঘোষ বলেন, ‘ঊর্ধতন কর্তৃপক্ষকে স্যালাইনের বিষয়টি জানান হয়েছে। রুটিন চেকআপের সময় বিষয়টি নজরে আসে।’
জানা গিয়েছে, স্যালাইনটি একেবারে নতুন ব্যাচের। কিন্তু নতুন ব্যাচের হওয়া সত্ত্বেও সেটির মধ্যে কি করে ছত্রাক এল তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। এমন ছত্রাক গজিয়ে ওঠা স্যালাইন যদি কোনও রোগীর শরীরে যেত সেক্ষেত্রে বিপদ হওয়ার আশঙ্কা ছিল বলে চিকিৎসকদের একাংশ মনে করেছেন।
এদিকে, হাসপাতাল সূত্রে খবর, ওই ছত্রাক থাকা স্যালাইনের বোতলটি স্বাস্থ্য দপ্তরে পাঠানো হচ্ছে। ইতিমধ্যে, মেদিনীপুরে প্রসূতি মৃত্যুর ঘটনার পর শিলিগুড়ির স্যালাইন প্রস্তুতকারী সংস্থাটিকে রাজ্য সরকার নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। এরপর শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতাল থেকে ওই নিষিদ্ধ সংস্থার সমস্ত স্যালাইনের বোতল সরিয়ে ফেলা হয়েছে। তার জায়গায় নতুন একটি সংস্থার স্যালাইন মজুত করা শুরু হয়েছে। কিন্তু নতুন সংস্থার স্যালাইনও যেন প্রথমেই ভরসা জোগাতে একপ্রকার ব্যর্থ।
স্যালাইনে ছত্রাকের বিষয়টি জানাজানি হতেই রোগীর পরিজনদের মধ্যে উদ্বেগ বেড়েছে। শান্তিনগরের বাসিন্দা অভিষেক সরকার তাঁর স্ত্রীকে হাসপাতালে ভর্তি করেছেন। অভিষেকের কথায়, ‘হাসপাতালে স্ত্রীকে ভর্তি করার পরই চিকিৎসকরা স্যালাইন দিয়েছেন। চিকিৎসকদের হাতেই আমাদের মরণবাঁচন। তাঁরা যাতে অন্তত স্যালাইন দেওয়ার আগে ভালো করে দেখে দেন, সেটাই চাইব।’ চম্পাসারিরা বাসিন্দা সুরজ থাপা তাঁর বাবাকে হাসপাতালে ভর্তি করেছেন। সুরজের বক্তব্য, ‘নার্সিংহোমে গিয়ে চিকিৎসা করানোর মতো আর্থিক সামর্থ নেই। তাই হাসপাতালে এসেছি। স্যালাইন নিয়ে মেদিনীপুরে যা হয়েছে, তাতে সত্যি ভয় হয়েছিল। কিন্তু নতুন স্যালাইনে যদি ছত্রাক পাওয়া যায় তা সত্যিই ভয়ের।’