মিঠুন ভট্টাচার্য, শিলিগুড়ি: আরজি কর মেডিকেল কলেজে তরুণী চিকিৎসকে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় (RG Kar Incident) উত্তাল রাজ্য। পথে পথে প্রতিবাদ চলছেই। এমন আবহে রাজ্যজুড়ে একাধিক ধর্ষণের ঘটনা সামনে এসেছে। তবে, এবার শিউড়ে ওঠার মতো ঘটনা ঘটল নিউ জলপাইগুড়ি থানা এলাকায় (Siliguri news)। পড়শিদের যৌন নির্যাতনের (sexual abuse) শিকার হতে হল ১০ বছরের এক নাবালককে। শুক্রবার ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসতেই হইচই শুরু হয়েছে।
আশঙ্কাজনক অবস্থায় উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে ওই নাবালক। বিষয়টি যাতে প্রকাশ্যে না আসে তারজন্য পরিবারটির ওপর নানাভাবে চাপ সৃষ্টি করা হয়েছিল বলেও অভিযোগ। নাবালকের মা বলছেন, ‘পুলিশের তরফে বিষয়টি সংবাদমাধ্যমকে বলতে নিষেধ করা হয়েছে। আমরা দোষীদের চরম শাস্তি চাই।’
পরে অবশ্য চাপে পড়ে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার পকসো আইনে মামলা রুজু করেছে পুলিশ। স্থানীয় তিন নাবালককে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে। জলপাইগুড়ি জুভেনাইল আদালতের নির্দেশে ১৫-১৭ বছরের সেই তিন অভিযুক্ত নাবালক একটি হোমে রয়েছে।
নাবালকের মায়ের অভিযোগ অবশ্য মানতে নারাজ শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটের ডিসিপি (জোন-১) দীপক সরকার। তাঁর বক্তব্য, ‘পরিবারটি কেন এমন বলছে জানি না। অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা রুজু করে সকল অভিযুক্তকে ধরা হয়েছে। পুলিশের তরফে এমন কিছু বলার কথা নয়।’
অভিযোগ, প্রায় এক মাস ধরে নাবালককে যৌন নির্যাতন করা হচ্ছিল। নাবালকের কাকা জানিয়েছেন, কখনও খাবারের লোভ দেখিয়ে, কখনও ভয় দেখিয়ে ভাইপোকে যৌন নির্যাতন করা হয়েছে। গত বুধবার দুপুর একটা নাগাদ এলাকার একটি ফাঁকা জায়গায় একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হয়। বিষয়টি তাঁর নজরে এলে ভাইপোকে উদ্ধার করে আনেন। এরপর অভিযুক্ত তিন নাবালকের বাড়িতে বিষয়টি বলতে যান আক্রান্ত নাবালকের কাকা এবং ঠাকুরদা। অভিযোগ, অভিযুক্ত এক নাবালকের পরিবারের লোকেরা নির্যাতিতর কাকা ও ঠাকুরদাকে বেধড়ক মারধর করে। এদিকে, বিকেল থেকেই নির্যাতিত নাবালকের শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে। তাকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। বিষয়টি স্থানীয় একটি মহল ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করে বলে প্রতিবেশীদের কয়েকজন জানিয়েছেন। সেদিনই সমস্ত ঘটনার বিবরণ জানিয়ে নাবালকের বাবা নিউ জলপাইগুড়ি থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। হাসপাতাল সূত্রে খবর, বর্তমানে নাবালকের অবস্থা অনেকটাই স্থিতিশীল। উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের সুপার ডাঃ সঞ্জয় মল্লিক বলছেন, ‘শিশুটির শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর বিভিন্ন নমুনা সংগ্রহ করে ফরেন্সিকে পাঠানো হয়েছে।’