সানি সরকার, শিলিগুড়ি: ছোটবেলায় বাবার হাত ধরে শান্তিনিকেতনে গিয়ে রবীন্দ্রনাথ-দর্শন কিশোর শরৎচন্দ্রের মনে কতটা প্রভাব ফেলেছিল, সেটার বড় নির্দশন ইস্টার্ন বাইপাস সংলগ্ন ঠাকুরনগরের (Thakurnagar) ‘রবীন্দ্র মন্দির’ (Rabindra Temple)। কৈশোর শেষে যৌবন পেরিয়ে বার্ধক্যতেও তিনি আগলে রেখেছিলেন সেই স্মৃতি। মনের দেবালয়ে যাঁকে ঠাঁই দিয়েছিলেন শরৎচন্দ্র দাস, তাঁকে আজীবন পুজো করে গিয়েছেন দেবজ্ঞানে। স্কুলের গণ্ডি টপকে ছিলেন কোনওরকমে। তারপর পাড়ি দেন উত্তরবঙ্গে। নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনে নেমে ঘুরতে ঘুরতে ঠাকুরনগর পৌঁছে ধু-ধু প্রান্তর দেখে তাঁর পছন্দ হয়ে যায়। ঠিক করেন, এখানেই সাধনার জন্য রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের (Rabindranath Tagore) মন্দির তৈরি করবেন। নির্মাণের খরচ বহন করতে অর্থ সংগ্রহ করেন ভিক্ষে করে।
কিন্তু এখন মন্দিরের আকাশে ঘনকালো মেঘ জমতে শুরু করেছে। স্থানীয়দের ভাষায়, ‘কুনজর পড়েছে দখলদারদের।’ এই পরিস্থিতিতে কতদিন মন্দিরটিকে বাঁচানো সম্ভব, সেই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে ঠাকুরনগরের অলিগলিতে। জমি মাফিয়াদের থাবা মন্দির সংলগ্ন এলাকায় পড়ায় আশঙ্কিত আশপাশের প্রত্যেকটা মানুষ। তাঁদের একটাই ভয়, মন্দিরের জমিও বেদখল হয়ে যাবে না তো?
তিনি থাকলে এমন পরিস্থিতি তৈরি হত না, অকপট সীমা বিশ্বাস। শরৎচন্দ্র বেঁচে থাকলে জমি দখলের চেষ্টা করার সাহস কেউ দেখাতো না বলে মনে করেন আরও অনেকে। তাই রবীন্দ্র জন্মজয়ন্তীর প্রাকমুহূর্তে রবীন্দ্র মন্দির বাঁচাতে শরৎচন্দ্রকে খুঁজে-ফেরে ঠাকুরনগর।
প্রথমদিকে বাঁধানো ফ্রেমে নিত্যদিন কবিগুরুর পুজো করা হত। পরবর্তীতে শরৎচন্দ্রের সাধপূরণ হয় রবীন্দ্র মূর্তিতে। এখনও পূজিত হয় সেই মূর্তি। শুধু মন্দির গড়ে তোলা নয়, এলাকায় শিক্ষার আলো জ্বালাতে শিশুদের স্কুলমুখী করার পাশাপাশি অভিভাবকদের সচেতন করা, রাস্তা তৈরি, নিয়মিত বৃক্ষরোপণ সহ নানা সামাজিক কর্মকাণ্ড নিরলসভাবে করে গিয়েছেন শরৎচন্দ্র।
এখন তিনি নেই। অভিযোগ, মন্দিরে জমিতে লোলুপ দৃষ্টি পড়েছে জমি মাফিয়াদের। একসময় ১০ বিঘা জমির একটি প্রান্তে ছিল মন্দির। এখনও সেখানেই রয়েছে। কিন্তু জমির পরিধি কমে দাঁড়িয়েছে প্রায় পাঁচ বিঘা। বাকি জমি বেদখল হয়েছে অবাধে, বলছেন এলাকাবাসী। সেই নিয়ে দুটো মামলাও হয়েছে।
স্থানীয় রাজু রায় বললেন, ‘প্রথমে সাহু নদীর চর দখল হয়েছিল। পরে মন্দিরের আশপাশের জমি দখল করে বিক্রি করে দেওয়া হয়। আমরা রুখে না দাঁড়ালে এতদিনে মন্দিরের অস্তিত্বটাও থাকত না।’ কারা এই কারবারের সঙ্গে যুক্ত? সতর্ক উত্তর এল, ‘সবই তো আপনারা জানেন। বুঝে নেন তাঁরা কারা।’
জমি দখলের চেষ্টা রুখে দেওয়ার ব্যাপারে আশ্বাস দিয়েছেন ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ির বিধায়ক শিখা চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলছেন, ‘ওই জমির ওপর যে দখলদারদের নজর পড়েছে, সেই খবর আমার কাছেও এসেছে। যে ঝান্ডাই হোক, জমি বেদখলের কারবার বন্ধ করবই।’
সীমা বললেন, ‘শরৎবাবু থাকলে কিন্তু একছটাক জমি বেদখল হত না। তিনি ঠিক রুখে দিতেন।’ শরৎচন্দ্র মারা গিয়েছেন প্রায় সাত-আট বছর আগে। তারপর থেকেই নাকি এখানে জমি মাফিয়াদের দৌরাত্ম্য বেড়েছে, অভিযোগ এলাকাবাসীর। শরৎচন্দ্রের অবর্তমানে রবীন্দ্র মন্দির দেখভাল করেন শুধাংশু দাস গোস্বামী। তাঁর বক্তব্য, ‘জমি মাফিয়ারা চারিদিকের জমি গ্রাস করেছে। তবে মন্দির ও সংলগ্ন জমি ছুঁতে পারেনি। কোনও অবস্থাতেই সেটা হতে দেব না।’ সরকারের উচিত অবিলম্বে কড়া পদক্ষেপ করা। তাছাড়া মন্দির চত্বরে উন্নয়নমূলক কাজ করলে মাফিয়াদের হাত থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব বলে মনে করেন তিনি।
কিশনগঞ্জঃ নির্বাচনের মাঝেই ফের লক্ষ লক্ষ দেশি-বিদেশি টাকা উদ্ধার করল বিহার পুলিশ। রবিবার এই বিপুল…
কোচবিহার: এবার অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়েও সাফল্যের চিহ্ন রাখল কোচবিহার। শনিবার বিশ্বসেরা এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে যোগ…
বেলাকোবাঃ রাস্তা নির্মাণে নিম্নমানের কাজের অভিযোগে সরব হলেন গ্রামবাসীরা। ঘটনাটি জলপাইগুড়ির সদর ব্লকের বেলাকোবা গ্রাম…
রায়গঞ্জ: অবশেষে ধরা পড়ল ত্রিপুরার প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী দুর্গাপ্রসন্ন দেব খুনের মূল পাণ্ডা রাকেশ বর্মন (৩৩)।…
রায়গঞ্জঃ এক তরুণীকে অপহরণ করে অন্যত্র লুকিয়ে রাখার অভিযোগে মূল অভিযুক্তের কাকাকে গ্রেপ্তার করল রায়গঞ্জ…
উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: হোয়াটসঅ্যাপে ভয়েস মেসেজ পাঠিয়েছিলেন স্বামী। সেই মেসেজ খুলতেই স্ত্রী শুনতে পেলেন…
This website uses cookies.