সাগর বাগচী, শিলিগুড়ি : উত্তরের বিভিন্ন নদী থেকে বালি-পাথর চুরির অভিযোগ নতুন নয়। একই ছবি দেখা যায় মহানন্দাতেও। তবে এবার নদী থেকে বালি চুরির নয়া পন্থা বের করেছে কারবারিরা। নদীতে নামানো হচ্ছে থার্মোকলের ভেলা। নদী থেকে বালি তুলে প্রথমে রাখা হচ্ছে তাতে। ভেলায় বালিবোঝাই করে পাড়ে নিয়ে গিয়ে স্তূপ করে রাখা হচ্ছে। এরপর তা ট্রাকে তুলে পাচার করে দেওয়া হচ্ছে অন্যত্র। ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত প্রতিদিন এমনই ছবি দেখা যাচ্ছে মাটিগাড়া-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের কলাবস্তিতে। অভিযোগ, এই কারবারে স্থানীয় এক পঞ্চায়েত সদস্যের প্রত্যক্ষ মদত রয়েছে। কলাবস্তিতে নদী থেকে বালি-পাথর তোলার ক্ষেত্রে প্রশাসনের তরফে কোনও অনুমতি দেওয়া হয়নি। রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে সেখানে কারবার চলছে। তবে বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন মাটিগাড়ার ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিক দাওয়া লামা ভুটিয়া। তাঁর কথায়, ‘আমার বিষয়টি জানা নেই। অবৈধভাবে বালি-পাথর তোলা হলে নিশ্চিতভাবে পদক্ষেপ করা হবে।’
বর্ষা অনেক আগে শুরু হয়ে গেলেও দার্জিলিং জেলা প্রশাসনের তরফে এখনও নদী থেকে বালি-পাথর তোলার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়নি। কাওয়াখালির বালাসন নদীর একটি ঘাটে রাত হতেই পকলিন, আর্থমুভার নামিয়ে বালি-পাথর তোলার অভিযোগ আগে থেকে রয়েছে। অভিযোগ, এবার কলাবস্তি এলাকা থেকে প্রতিদিন ৩০-৪০ ট্রাক বালি-পাথর তোলা হচ্ছে অবৈধভাবে। নৌকাঘাট, শীতলাপাড়া এলাকায় দাঁড়ালেই এই ছবি চোখে পড়ে। অভিযোগ, কোনও অভিযান করে এই কারবার যাতে বন্ধ করে না দেওয়া হয়, সেজন্য প্রশাসনের একাংশের পকেটে টাকা গুঁজে দেওয়া হচ্ছে।
কলাবস্তির বাসিন্দা রাধা সরকার বলেন, ‘এখানে ঘাটের মধ্যেও ঘাট রয়েছে। কে, কোথায় বালি, পাথর তুলে রাখবে সেই জায়গা ঠিক করে রাখা হয়েছে। এক ট্রাক বালি বা পাথর বাইরে ৭ হাজার টাকায় বিক্রি করে দেওয়া হচ্ছে। এই টাকা যাচ্ছে গ্রামের একটি অংশের পকেটে।’ একই কথা বললেন অপর বাসিন্দা সাবিত্রী বর্মনও।
প্রসেনজিৎ রায় নামে স্থানীয় এক টোটোচালকের কথায়, ‘শাসকদলের গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্যের প্রত্যক্ষ মদতে অবৈধভাবে বালি-পাথর তোলা হচ্ছে। গত বছরও এই কারবার দেদারে চলেছে। পুলিশ একবার এসে শুধু ঘুরে গিয়েছিল। কিন্তু তারপর থেকে প্রশাসনের তরফে কিছু করা হয়নি।’