তমালিকা দে, শিলিগুড়ি: ছোট থেকেই স্বপ্ন ছিল গবেষক হওয়ার। সেই স্বপ্নপূরণ করতে তিনি পাড়ি দিয়েছেন কানাডায়(Canada)। ওয়াটারলু বিশ্ববিদ্যালয়ে কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পিএইচডি করছেন লেকটাউনের বাসিন্দা মধুজা চক্রবর্তী। চলতি বছর স্কটল্যান্ডে বায়োকেমিক্যাল বিষয়ক একটি সমাবেশে কানাডার ওয়াটারলু বিশ্ববিদ্যালয়কে প্রতিনিধিত্ব করেছেন শিলিগুড়ির(Siliguri) তরুণী। তাঁর গবেষণা ভ্যাকসিন তৈরিতে কাজে লাগবে, আশাবাদী মধুজা।
বরাবর মেধাবী হিসেবে পরিচিত দিল্লি পাবলিক স্কুলের এই প্রাক্তনী। নােচও সমান পারদর্শী। ভরতনাট্যম এবং রবীন্দ্রনৃত্য তাঁর প্রিয়। প্রবাসে গিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেছেন মধুজা। চলতি বছর ডিসেম্বরে তঁার পিএইচডি কোর্স শেষ হওয়ার কথা। তার আগেই স্কটল্যান্ডে আয়োজিত সমাবেশে নিজের গবেষণা সম্পর্কে আলোচনা করার সুযোগ পেলেন তিনি। ফোনে মধুজা বলছিলেন, ‘ছোটবেলার স্বপ্ন যেন পূরণ হল। এই কনফারেন্সে অংশ নিয়ে অনেক কিছু শিখতে পেরেছি, জানতে পেরেছি। বিশ্বের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিশেষজ্ঞরা প্রতিনিধিত্ব করতে এসেছিলেন এখানে।’ নিজের গবেষণার ব্যাপারে মধুজা বলেন, ‘চিকিৎসাক্ষেত্রে ভ্যাকসিনের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। আমার এই গবেষণা ভ্যাকসিনের পাশাপাশি ওষুধ তৈরির কাজেও লাগবে বলে আশা করছি।’
ইউরোপিয়ান সোসাইটি ফর অ্যানিমেল সেল টেকনলজি (ইএসএসিটি) আয়োজিত কনফারেন্স আয়োজিত হয় স্কটল্যান্ডে। জুন মাসের ২৩ থেকে ২৬ তারিখ পর্যন্ত পাঁচদিন ধরে চলা সমাবেশে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করা গবেষকরা নিজেদের গবেষণা নিয়ে আলোচনা করেন। মেয়েকে ভালোবেসে ‘তিতলি’ বলে ডাকেন মা সঞ্চিতা চক্রবর্তী। বিদেশের মাটিতে মেয়ের এই সাফল্যে গর্বিত তিনি। বললেন, ‘পড়াশোনায় বরাবর মনোযোগী তিতলি। ছোট থেকে ওর ইচ্ছে ছিল, গবেষণার মাধ্যমে নতুন কিছু আবিষ্কার করবে। মেয়ের সাফল্যে আমারও স্বপ্নপূরণ হল।’ মেয়ের গবেষণায় যাতে সাধারণ মানুষ উপকৃত হন, সেটাই আশা মধুজার বাবা মানস চক্রবর্তীর।
শিলিগুড়ি শহরের ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মধুজা ডিপিএস শিলিগুড়ি থেকে দ্বাদশ পাশ করে কলকাতার হেরিটেজ ইনস্টিটিউট অফ টেকনলজি থেকে বায়োটেকনলজি নিয়ে পড়াশোনা করেছেন। তারপর কানাডার ওয়াটারলু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বায়োকেমিক্যাল এবং বায়োমেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে স্নাতকোত্তরের সুযোগ আসে। স্নাতকোত্তর পাশের পর সেখানই গবেষণার সুযোগ পান শিলিগুড়ির মেধাবী পড়ুয়া।