রায়গঞ্জঃ দুর্গাপুজো মানে শুধু উৎসব নয়, দুর্গাপুজো বাঙালির আবেগ। দশমী মানেই দুর্গা মায়ের ঘরে ফেরার পালা। আর দশমী মানেই বাঙালির চোখে জল। দশমীতে ঢাকের বাদ্যি, উলুধ্বনি আর সিঁদুর খেলায় মেতে ওঠে বাঙালি। দশমীর দিন যে রীতির জন্য বাঙালি নারী অপেক্ষায় থাকে, সেটি হল সিঁদুর খেলা। আজ দশমী। অপরাজিতা পুজো শেষ হতেই শনিবার দুপুর গড়িয়ে সন্ধ্যা পর্যন্ত সিঁদুর খেলায় মাতলেন আপামর বাঙালি। সিঁদুর খেলায় মেতে উঠলেন রায়গঞ্জের মহিলারা।
রায়গঞ্জের বেশ কিছু বিখ্যাত পুজো মণ্ডপে মণ্ডপে ভিড় জমাতে শুরু করেন মহিলারা। বিবাহিত মহিলারা আগে দেবীকে বরণ করেন। মা দুর্গার কপালে সিঁদুর ছুঁইয়ে, সেই সিঁদুর একে অন্যের সিঁথিতে দেন। পরস্পরের মুখেও মাখিয়ে দেন। তাঁরা মনে করেন এটি সৌভাগ্যের প্রতীক। এরপরই শুরু হয় ঢাকের তালে মহিলাদের নাচ। মহিলাদের এই উৎসবের মধ্যে এক অদ্ভুত আনন্দ এবং উচ্ছ্বাস ছিল লক্ষ্য করার মতো।
কসবা সুকান্ত মোড় পুজো কমিটির সদস্যা বাবলি দে সরকার বলেন, “সিঁদুর খেলা আমাদের পুজোর একটি অপরিহার্য অংশ। প্রতিবার বিজয়া দশমীতে আমরা আমাদের দেবী মা দুর্গাকে সিঁদুর দিয়ে বিদায় জানাই। এই রীতিতে নারীরা দেবী দুর্গার শক্তিকে নিজেদের মধ্যে ছড়িয়ে নেওয়ার প্রতীক হিসেবে সিঁদুর ব্যবহার করেন। এটি কেবলমাত্র একটি খেলা নয়, বরং একটি আধ্যাত্মিক অনুভূতি যা আমাদের একে অপরের সঙ্গে গভীরভাবে সংযুক্ত করে। তবে পুজো শেষে মনে একটা শূন্যতা কাজ করে, কিন্তু দেবী আবার আসবেন সেই আশা নিয়ে আমরা অপেক্ষা করি।”
তাপসী চক্রবর্তী, রীনা পাল বলেন, এবারের দুর্গাপুজো সবদিক থেকেই ছিল খুবই বিশেষ। পুজোর ৩ দিনই বিভিন্ন মণ্ডপে উৎসাহ এবং জনসমাগম ছিল চোখে পড়ার মতো। আলোকসজ্জা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, এবং সামাজিক মেলবন্ধন সবকিছুই ছিল অসাধারণ। তবে, পুজোর শেষ দিন সবসময়ই একটি মিশ্র অনুভূতি নিয়ে আসে। আনন্দ আর উৎসবের শেষে দেবীকে বিদায় জানানোর বিষাদ কাজ করে। সকলের মনেই বিসর্জনের পর সেই আনন্দময় সময়গুলো হারানোর কষ্ট থাকে। পাশাপাশি, আসছে বছর আবার হবে, এই বিশ্বাসেই সবাই নতুন করে অপেক্ষা শুরু করেন, আর তাতে সিঁদুর খেলাও যেন এক নতুন শুরুর প্রতীক হয়ে উঠে।