রণজিৎ ঘোষ, শিলিগুড়ি: স্থানীয় স্তরে উন্নয়নমূলক কাজকর্মের জন্য বেশ কিছু উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ তৈরি হয়েছে গত কয়েক দশকে। সেই উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের ভূমিকা এবং ভবিষ্যৎ নিয়ে এবার প্রশ্ন তুললেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী। সোমবার কলকাতার নবান্ন সভাঘর থেকে প্রশাসনিক বৈঠকে মমতা বলেছেন, ‘শুধু গা টেপা আর পা টেপার জন্য ডেভেলপমেন্ট অথরিটিগুলি রাখার কোনও মানে হয় না। শুধু দেদারে লোক ঢুকিয়ে দেওয়া, তারা কে কী কাজ করছে সেসব নিয়ে একটা তদন্ত করে রিপোর্ট দিন। তারপর সরকারিভাবে আমরা সিদ্ধান্ত নেব।’ তাঁর সংযোজন, ‘এসজেডিএ ইতিমধ্যে ভেঙে দিয়ে জেলা শাসককে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এভাবে যেখানে যেখানে কাজ হয়ে গিয়েছে সেখানে অথরিটি রাখার দরকার নেই।’ মুখ্যমন্ত্রী এমন মন্তব্যের পরই কর্মহীন হয়ে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে এসজেডিএ’র কর্মীদের মধ্যে। তবে, এভাবে সরকার চাইলেই উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ বা ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (SJDA-JDA) তুলে দিতে পারে কি না সেটা নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে।
শিলিগুড়ি এবং জলপাইগুড়ির উন্নয়নকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে ১৯৮০ সালে ওয়েস্ট বেঙ্গল টাউন অ্যান্ড কান্ট্রি (প্ল্যানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট) অ্যাক্ট অনুযায়ী এসজেডিএ তৈরি হয়েছিল। কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারের তরফে এই উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে কোটি কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ২০১১ সালের পর এই উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ২০০ কোটি টাকা দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। একইভাবে আলিপুরদুয়ারের ভারত-ভুটান সীমান্তবর্তী এলাকার উন্নয়নে জয়গাঁ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (জেডিএ) (JDA) তৈরি হয়েছিল। সাধারণ মানুষের বক্তব্য, সেই উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে কোনও কাজ হয়নি। শুধুমাত্র কিছু কর্মী নিয়োগ আর শাসকদলের কিছু নেতা-নেত্রীকে সেখানকার বিভিন্ন পদে পুনর্বাসন দিয়ে বসিয়ে রাখা হয়েছে।
রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন দপ্তরের মন্ত্রী এবং এসজেডিএ’র চেয়ারম্যান পদ দীর্ঘদিন সামলেছেন অশোক ভট্টাচার্য। তিনি মনে করছেন, ‘রাজ্য সরকার চাইলে উন্নয়ন কর্তৃপক্ষগুলি তুলে দিতে পারে।’ কিন্তু কেন তুলে দেওয়া হবে? প্রশ্ন তাঁর। অশোক বলছেন, ‘এসজেডিএ সহ প্রতিটা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ২০১১ সালের পর থেকে দুর্নীতিতে ভরে গিয়েছে। কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার সদিচ্ছা থাকলে আগেই মুখ্যমন্ত্রী এসজেডিএ তুলে দেননি কেন? এতদিন এই ঘুঘুর বাসা লালনপালন করে এখন এসে তাঁর মনে হচ্ছে যে এসব তুলে দেওয়া উচিত। যদি তুলে দিতে হয় তাহলে রাজ্যের সব উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকেই তুলে দিতে হবে।’ অশোকের মতে, এই উন্নয়ন কর্তৃপক্ষগুলিকে পুরনিগম বা পুরসভার অধীনে রেখে কাজ চালিয়ে যাওয়া উচিত।
লোকসভা ভোটে দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ারে খারাপ ফলাফলের পর এসজেডিএ’র চেয়ারম্যান পদ থেকে সৌরভ চক্রবর্তীকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেখানে দার্জিলিংয়ের জেলা শাসক প্রীতি গোয়েলকে চেয়ারম্যান করেছে সরকার। তবে, চেয়ারম্যান পরিবর্তন হলেও ভাইস চেয়ারম্যান সহ বাকি বোর্ড সদস্যরা দায়িত্বে রয়েছেন বলে এসজেডিএর সিইও অভিজিৎ সিভালে জানিয়েছিলেন। কিন্তু এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, এসজেডিএ ভেঙে দিয়েছি। সেখানে জেলা শাসককে দায়িত্ব দিয়েছি। মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণার পর থেকে এসজেডিএর বোর্ড সদস্যদের মধ্যে সংশয় তৈরি হয়েছে। তাহলে কি তাঁরা আর এসজেডিএর বোর্ড সদস্য নন? এমন প্রশ্নই ছুড়ে দিয়েছেন একাধিক বোর্ড সদস্য। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক বোর্ড সদস্য বলেছেন, ‘কী যে হচ্ছে বুঝতে পারছি না।’
এদিন এসজেডিএ’র (SJDA) কর্মীদের অনেকেই বলেছেন, ‘সংস্থা ভেঙে দিলে আমাদের কী হবে? আমরা কোথায় যাব।’ বিষয়টি নিয়ে এসজেডিএ’র চেয়ারম্যান প্রীতি গোয়েলের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁকে ফোনে পাওয়া যায়নি।
জলপাইগুড়ি: রাজ্যের পর জাতীয় স্তরেও প্রিয়া ঘোষ জলপাইগুড়ির নাম উজ্জ্বল করলেন। জুন মাসের ২৯-৩০ তারিখে …
অভিরূপ দে, ময়নাগুড়ি: দিনের বেলা বাসের মধ্যে নাবালিকাকে মাদক মেশানো খাবার খাইয়ে পরবর্তীতে তাকে যৌন…
উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: বগটুইয়ের ছায়া বোলপুরে (Bolpur fire)! আগুনে পুড়ে মৃত্যু হল মা ও…
শুভঙ্কর চক্রবর্তী, গজলডোবা: প্রায় দশ বিঘা জমির উপর পাথর দিয়ে পাড় বাঁধানো বিশাল জলাশয়। সুইমিং…
জয়ন্ত ঘোষাল রাজ্যপাল নিয়ে যখনই আমি কিছু লিখি, তখনই আমার সাংবাদিক জীবনের একটি পুরোনো ঘটনা…
অজিত ঘোষ রস সাহিত্যিক রাজশেখর বসুর ছোটগল্প, ‘বিরিঞ্চিবাবা’ অবলম্বনে সত্যজিৎ রায় দুটি সম্পূর্ণ ভিন্ন স্বাদের…
This website uses cookies.