বিশ্বজিৎ সরকার, রায়গঞ্জ: নাবালক, নাবালিকা সন্তানকে সাপের ছোবল থেকে বাঁচাতে নিজেই মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন বাবা। শনিবার রাতের এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে রায়গঞ্জ হাসপাতালে। বর্তমানে ওই তরুণ রায়গঞ্জ মেডিকেলে সিসিইউ বিভাগে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন।
নাম প্রদীপ বর্মন (৩০)। বাড়ি কালিয়াগঞ্জের কুনোর সংলগ্ন বেলাবন্দ এলাকায়। পরিবারের দাবি, পড়ার ঘরে শনিবার রাতে পড়াশোনায় ব্যস্ত ছিল নাবালক-নাবালিকা। খেতে আসার জন্যে ঘরে ছেলেদের ডাকতে যান বাবা প্রদীপ বর্মন। দেখতে পান, একটি বিষধর সাপ ছেলেমেয়েদের পেছনে তাক করে ফণা তুলে রয়েছে। বিন্দুমাত্র বাড়তি সময় নষ্ট না করে সাপটিকে ধরে ফেলেন তিনি। এরপর ওই সাপ নিয়ে জঙ্গলে ছাড়তে গেলে সরীসৃপটি বাঁ হাতের আঙুলে ছোবল মারে। তরুণের চিৎকারে ছুটে আসে পরিবার-পরিজন থেকে শুরু করে পাড়াপড়শিরা। সঙ্গে সঙ্গে তঁাকে উদ্ধার করে কুনোর গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে গেলে রায়গঞ্জ মেডিকেলে রেফার করা হয়। ততক্ষণে রোগীর অবস্থা আশঙ্কাজনক। আপাতত সিসিইউ বিভাগে যমে-মানুষে টানাটানি অবস্থা ওই তরুণের।
অসুস্থ প্রদীপ বর্মনের স্ত্রী আরতি বর্মনের দাবি, ‘আমার স্বামী হাট থেকে মাংস ও শংকর মাছ নিয়ে এসেছিল। রান্নাও করেছিলাম। খাওয়ার জন্যে দুই ছেলেমেয়েকে ডাকতে গেলে দেখে বিছানার ওপরে বিষধর সাপ। ছেলেমেয়েকে বাঁচাতে গিয়ে সাপের ছোবল খেয়ে আমার স্বামী গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।’
জখম তরুণের ভাই খাকাসু বর্মনের বক্তব্য, ‘দুইদিন আগে ভাইপো-ভাইঝির রেজাল্ট বেরিয়েছে। নতুন ক্লাসের বই কিনে পড়ায় মগ্ন ছিল। সেসময় আমার দাদা ঘরে ঢুকে দেখে বিষধর সাপটিকে। ওই সাপটিকে না ধরলে আমার ভাইঝি অথবা ভাইপোকে ছোবল দিত। আপাতত দাদা সিসিইউ বিভাগে ভর্তি। রায়গঞ্জ মেডিকেলের মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসক অরবিন্দ রায় বলেন, ‘চিকিৎসা চলছে। আটচল্লিশ ঘণ্টা না গেলে কিছু বলা সম্ভব নয়।’ বর্তমানে পুরো পরিবারে উদ্বেগ ছড়িয়েছে।