জসিমুদ্দিন আহম্মদ, মালদা: বিজেপি শাসিত ওয়ার্ডের জন্য বরাদ্দ নেই বিধায়ক তহবিলের টাকা। অথচ তৃণমূল পরিচালিত ওয়ার্ডের উন্নয়নের জন্য টাকা দিতে কোনও দ্বিধা নেই তাঁর। ইংরেজবাজারের বিজেপি বিধায়ক শ্রীরূপা মিত্র চৌধুরীর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন ২১ নম্বর ওয়ার্ডের নীচুতলার বিজেপি কর্মীরা। সহমত পোষণ করছেন খোদ বিজেপি কাউন্সিলার সুতপা মুখোপাধ্যায়ও।
যদিও রাজনৈতিক রং দেখে কোনও কাজ করেন না এবং ওই ওয়ার্ড থেকে কোনও প্রস্তাব তাঁর কাছে আসেনি বলে সাফ জানিয়েছেন ইংরেজবাজারের বিধায়ক। এলাকার অনুন্নয়নে ক্ষোভ বাড়ছে সুকান্তপল্লি এলাকার সাধারণ মানুষদের মধ্যে।
মালদা শহরের ২১ নম্বর ওয়ার্ডের সুকান্তপল্লি এলাকা। ঝলঝলিয়া থেকে রাজ্য সড়ক ধরে এগোলে পাইপ ফ্যাক্টরি মোড়ের আগে ডান দিকে ছোট রাস্তা সোজা চলে গেছে ওই অঞ্চলে। পাড়ায় ঢোকার মুখেই দেখা যায় গোটা চত্বরে জলনিকাশি ব্যবস্থার কোনও চিহ্ন নেই।
এক দালান বাড়ির সামনে গিয়ে দেখা গেল একটা সরু পাইপ রাস্তার পাশ দিয়ে চলে গেছে। ওই পাইপ সংযুক্ত রয়েছে হাইড্রেনের সঙ্গে। শিল্পী সাহা নামে এক গৃহবধূ সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘বাড়ির ব্যবহার্য জল পাইপে করে দূরের ড্রেনে ফেলতে হচ্ছে। জমা জল শেষ হলেই পাইপ গুটিয়ে নিতে হয়। নীচু এলাকা বলে বর্ষাকালে কোমর জল হয়। তখন সাপ, ব্যাং-এর সঙ্গে বসবাস করতে হয়। ওই জল যন্ত্রণা থেকে মুক্তি দেওয়ার কোনও উদ্যোগ নেই পুরসভার। ভোটের পরে কোনওদিন বিধায়কের দেখা মেলেনি। বিরোধী দলের কাউন্সিলারের সীমিত ক্ষমতা, তাই আমাদের এলাকায় কোনও কাজ হয় না।’
নিভা সিংহ নামে অন্য গৃহবধূর বক্তব্য, ‘এই এলাকায় অন্তত একশো পরিবার বসবাস করেন। চরম অসহায় অবস্থার মধ্যে রয়েছি আমরা সবাই। ড্রেনেজ ব্যবস্থা নেই। বর্ষায় জলে ডুবতে হয়। ড্রেনের দাবিতে আমরা পুরসভা, বিধায়ক, সাংসদ সকলকে চিঠি দিয়েছি। কিন্তু আমাদের দিকে কেউ তাকান না।’
মিঠুন ঘোষ নামে এক বাসিন্দার দাবি, ‘ওই ওয়ার্ডটি বিজেপির দখলে। আমাদের বিধায়ক বিজেপির। কিন্তু এই ওয়ার্ডের জন্য উনি কোনও আর্থিক বরাদ্দ দেন না। অথচ পাশের ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের ড্রেনের জন্য টাকা দিচ্ছেন। আমরা তাহলে কার কাছে যাব ?’
স্থানীয় নীচুতলার এক বিজেপি কর্মী শশাঙ্ক সাহার দাবি, ‘ইংরেজবাজারের বিধায়ক আমাদের দলের। সেই এলাকা থেকে প্রচুর ভোট পেয়েছেন। কিন্তু ভোটে জেতার পর ওই এলাকার জন্য কিছু করেননি। তৃণমূলের দখলে থাকা ওয়ার্ডের জন্য কাজ করছেন।’
স্থানীয় কাউন্সিলার সুতপা মুখোপাধ্যায়ের দাবি, ‘সুকান্তপল্লি এলাকার ড্রেনের জন্য আমি পুরসভা থেকে শুরু করে বিভিন্ন মহলে জানিয়েছি। আর্থিক বরাদ্দের জন্য আমাদের বিধায়ককেও জানিয়েছি। কিন্তু কোনও ফল হয়নি। মানুষের ক্ষোভ অত্যন্ত ন্যায্য।’
অভিযোগ প্রসঙ্গে ইংরেজবাজারের বিধায়ক শ্রীরূপা মিত্র চৌধুরীর বক্তব্য, ‘আমি পার্টি কালার দেখে কাজ করি না। সবার কথা সমানভাবে ভাবতে হয়। মোদিজি আমাদের শিক্ষা দিয়েছেন সবকা সাথ, সবকা বিকাশ। বিজেপি বিধায়ক হিসেবে এটাই আমার কর্তব্য। পুর এলাকার কাজের জন্য পুরসভার বড় বাজেট রয়েছে। ২১ নম্বর ওয়ার্ডে পুরসভা কাজ করেছে। আমাদের বিজেপি কাউন্সিলারও সেখানে খুব সক্রিয়। কিন্তু সেখানকার কাজের জন্য লিখিত কোনও প্রস্তাব আমার কাছে আসেনি।’