সপ্তর্ষি সরকার, ধূপগুড়ি: ২০১৭ সালের ১৪ এপ্রিল শিলান্যাসের সময় বলা হয়েছিল বছর দেড়েকের মধ্যে তৈরি হয়ে যাবে মার্কেট কমপ্লেক্স। শিলান্যাসের পর পুরোনো বাজার ভেঙে কাজ শুরু করতেই পেরিয়ে যায় এক বছর। এরপর দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকা সংস্থা কাজ করতে না চাওয়ায় অন্য ঠিকা সংস্থাকে এনে ২০১৮ সালের মার্চে কাজ শুরু হলেও বারবার ব্যাঘাত ঘটে নির্মাণে। এর জেরে নির্মাণকাজের মান নিয়েও ওঠে প্রশ্ন। ওপরতলার নির্মাণকাজ ঠিকমতো শুরু হওয়ার আগে ২০২১ সালের অক্টোবরে জেলা পরিষদ হলে সভা ডেকে ১০৩ ব্যবসায়ীর হাতে স্টলের চাবি তুলে দেওয়া হয়। সেই থেকে কেউ দোকান খুলে, আবার কেউ গোডাউন করে চুটিয়ে ব্যবসা করলেও আজও জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদের সুরেশ দে মার্কেট কমপ্লেক্সের (কর্মতীর্থ) উদ্বোধন হয়নি।
ধূপগুড়ি শহরের (Dhupguri) একেবারে প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত এই দ্বিতল বাজার নিয়ে এলাকার বাসিন্দা এবং ব্যবসায়ীদের মনে প্রশ্ন এবং ক্ষোভ অনেক। তবে তা নিয়ে জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদের হেলদোল নেই বললেই চলে। কমপ্লেক্সে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের জন্যে বরাদ্দ ১৯টি স্টল বিলির কাজও এগোয়নি। ক্ষোভের সুরে স্থানীয় এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘১০ কোটি টাকায় নির্মিত কমপ্লেক্সে একটা শৌচালয় নেই। বেশিরভাগ স্টল গোডাউন হিসেবে বন্ধ পড়ে থাকে। বাজারটিকে সচল ও সফল করার ক্ষেত্রে জেলা পরিষদের ভূমিকা নিন্দনীয়।’
এই মার্কেট কমপ্লেক্স নিয়ে আরও এক অন্ধকার দিক হল দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকা সংস্থার বিপুল বকেয়া ফেলে যাওয়া। জানা যায়, নির্মাণকাজের জন্য ধূপগুড়ির বিভিন্ন সরবরাহকারীর কাছ থেকে রড, সিমেন্ট, বালি, পাথর নিয়ে, বিদ্যুৎ ও গ্রিলের কাজ করিয়েও ওই সংস্থা ১ কোটি টাকার বেশি বকেয়া আজও মেটায়নি। শাসকদলের স্থানীয় নেতা থেকে জেলা পরিষদের কর্তাদের বিষয়টি জানানো হলেও এনিয়ে কোনও পদক্ষেপ না করায় ক্ষোভ রয়েছে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের মধ্যে। বিষয়টি নিয়ে সুর চড়িয়েছে পদ্ম শিবিরও। বিজেপির বিধানসভা কমিটির আহ্বায়ক চন্দন দত্ত বলেন, ‘আট বছরে দফায় দফায় কমপ্লেক্স নির্মাণের বরাদ্দ থেকে কাটমানি গিয়েছে শাসকদলের কিছু নেতা এবং একশ্রেণির আধিকারিকের পকেটে। জেলা পরিষদের এজেন্সি স্থানীয় সাপ্লায়ার ও ব্যবসায়ীদের টাকা বাকি রেখে পাততাড়ি গুটিয়েছে। এরপর ধূপগুড়ির মানুষ জেলা পরিষদের লোকেদের আটক করে সেই টাকা আদায় করবেন।’
এনিয়ে বিশেষ আশার কথা বলতে জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদের সভাধিপতি কৃষ্ণা রায় বর্মনের মন্তব্যে উঠে এল বিধানসভা ভোটের কথা। তিনি বলেন, ‘ওই মার্কেট কমপ্লেক্স নিয়ে আমাদের নিয়মিত আলোচনা হয়। আশা করছি বিধানসভা ভোটের আগে পুরো প্রক্রিয়া শেষ করা যাবে।’