উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: উত্তরপ্রদেশের হাথরসে পদপিষ্ট (Hathras Stampede) হয়ে মৃত্যু হয়েছে কমপক্ষে ১১৬ জনের। এই ঘটনায় প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। অনেকেই পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যুর ঘটনায় আয়োজক সৎসঙ্গ কমিটিকে দায়ী করছেন। অনেকে আবার প্রশাসনের দিকে আঙুল তুলেছেন। ঘটনার পরদিন, বুধবার সকাল থেকেই তৎপরতা শুরু করেছে উত্তরপ্রদেশ পুলিশের দল (Uttar Pradesh Police)। সকালেই নারায়ণ সাকার ওরফে ‘ভোলেবাবা’ নামে এক স্বঘোষিত ধর্মগুরুর (Self-styled Godman) আশ্রমে পৌঁছে গিয়েছে বিশাল পুলিশবাহিনী। কিন্তু ধর্মগুরুর সন্ধান এখনও মেলেনি বলে জানিয়েছে পুলিশ।I
এদিনই ঘটনাস্থলে যেতে পারেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী (Uttar Pradesh CM) যোগী আদিত্যনাথ। প্রশাসনের এক আধিকারিক সূত্রে এমনটাই খবর পাওয়া গিয়েছে। এই ঘটনার তদন্তের জন্য বিশেষ কমিটি গড়ার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই কমিটির নেতৃত্বে রয়েছেন আগরার অতিরিক্ত ডিজিপি। পুলিশ সূত্রে খবর, ফুলরাই গ্রাম থেকে ১০০ কিলোমিটার দূরত্বে মৈনপুরি এলাকায় আশ্রম রয়েছে ভোলেবাবার। পদপিষ্টের ঘটনার পর সেই আশ্রমেই গিয়েছেন তদন্ত কমিটির সদস্যেরা। এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত অভিযুক্তদের যেন কঠোর শাস্তি দেওয়া হয়, তার নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন।
হাথরসের জেলা শাসক আশিস কুমার জানান, রতিভানপুরের মুঘলাগড়ি গ্রামে একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। অনুষ্ঠান শেষ হতেই বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় অনেকের। হুড়োহুড়ির কারণ স্পষ্ট নয়। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, নারায়ণ সাকার ওরফে ‘ভোলেবাবা’ নামে এক স্বঘোষিত ধর্মগুরুর জন্য সৎসঙ্গের আয়োজন করেছিল ‘মানব মঙ্গল মিলন সদ্ভাবনা অনুষ্ঠান কমিটি’। সৎসঙ্গকে কেন্দ্র করে স্থানীয়দের মধ্যে প্রবল উৎসাহ তৈরি হয়েছিল। কয়েকহাজার ভক্ত একটি ছোট ঘেরা জায়গায় জড়ো হয়েছিলেন। সেখানে ছিল না ফ্যানের ব্যবস্থা। অনুষ্ঠানের শেষ দিকে ভিড়ের চাপে দমবন্ধকর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। বহু মানুষ একসঙ্গে অনুষ্ঠানস্থল থেকে বার হওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু বেরোনোর রাস্তাটি সংকীর্ণ হওয়ায় হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। অনেকে ভিড়ের চাপ সামলাতে না পেরে পড়ে যান। তাঁদের ওপর দিয়ে চলে যায় জনতা। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় বেশ কয়েকজনের।
মৃতদের পরিবারের জন্য ২ লক্ষ টাকা করে আর্থিক সাহায্যের কথা ঘোষণা করেছেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের তরফেও জাতীয় ত্রাণ তহবিল থেকে মৃতদের পরিবার পিছু ২ লক্ষ টাকা এবং আহতদের ৫০ হাজার টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা জানানো হয়েছে। ঘটনায় শোকপ্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শা, লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধি, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সহ অনেকে।