কোচবিহার: সিপিএমের আমলে কোচবিহারের রবীন্দ্র ভবন তৈরি হয়েছিল। অথচ সেখানে তাঁরা সম্মেলন করার অনুমতি পেল না। বাধ্য হয়ে রাসমেলার মাঠে প্রকাশ্য সমাবেশ ও সম্মেলন করতে হচ্ছে বলে তা জানিয়ে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম রাজ্য সরকারকে কাঠগড়ায় তুললেন। সোমবার সিপিএমের সমাবেশে যোগ দিয়ে তিনি কোচবিহারের জেলা শাসক, পুলিশ সুপার ও পুরসভার সমালোচনা করেন। পাশাপাশি সেলিম তৃণমূল-বিজেপির আঁতাত রয়েছে বলে অভিযোগ করেন। এদিন বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘তৃণমূলকে পেছন থেকে আরএসএস পরিচালনা করছে। তৃণমূলের অন্দরে যত ঝামেলা হচ্ছে তা আরএসএস করাচ্ছে। এটাই আরএসএস-এর পলিসি।’
সোমবার ও মঙ্গলবার কোচবিহারের রাসমেলার মাঠে সিপিএমের ২৩তম জেলা সম্মেলন ও প্রকাশ্য সমাবেশ। নেতৃত্বের অভিযোগ, এর আগে কোচবিহারের অডিটোরিয়ামগুলিতে এই কর্মসূচির চেষ্টা করা হলেও প্রশাসনের তরফে নানা অজুহাতে তা করতে দেওয়া হয়নি। তাই রাসমেলা মাঠে এই কর্মসূচি হচ্ছে। এদিন মরাপোড়া চৌপথি থেকে একটি মিছিল শুরু হয়ে রাসমেলা মাঠে শেষ হয়। সেলিমের পাশাপাশি দলের জেলা সম্পাদক অনন্ত রায় সহ অন্যরা মিছিলে পা মেলান। এরপর রাসমেলা মাঠে শহিদ বেদিতে শ্রদ্ধা জানানোর পর সমাবেশ শুরু হয়। সমাবেশের পর সেখানে প্রতিনিধি সম্মেলন হয়। মঙ্গলবার জেলা কমিটি গঠন হবে। দলের জেলা সম্পাদকের দায়িত্ব কে পাবেন তা তখন নির্বাচন করা হবে। তবে, সেই দায়িত্ব কে পাবেন তা নিয়ে এদিনও কানাঘুষো চলেছে। সম্পাদকের দৌড়ে জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য মহানন্দ সাহা এগিয়ে রয়েছেন বলে শোনা যাচ্ছে।
এদিন অনুপ্রবেশ নিয়ে বিএসএফ ও পুলিশের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলে সেলিম বলেন, ‘সীমানায় বিএসএফ পাহারায় রয়েছে। অথচ তাঁরা অনুপ্রবেশ, পাচার বন্ধ করতে পারছেন না। উলটে সীমান্তের বাসিন্দাদের নানাভাবে হেনস্তা করছেন। পুলিশও তাঁদের কাজ ঠিকমতো করছেন না। তাঁরা শুধু শাসকদলের দাসত্ব করছেন।’ বামেরা অনেকদিন পর কোচবিহারে বড় কোনও কর্মসূচি করছে। এদিন রাসমেলা মাঠে প্রায় ৩ হাজার মানুষের ভিড় হয়। দলীয় সূত্রে খবর, মঙ্গলবার সম্মেলন শেষে ৩০ জনের জেলা কমিটি গঠিত হবে। এদিনের সমাবেশে মূলত সেলিম ও অনন্ত রায় ভাষণ দেন। অনন্ত জানান, সম্মেলনের পর কোচবিহারের স্থানীয় ইস্যুর পাশাপাশি রাজ্য ও কেন্দ্রীয় স্তরের নানা ইস্যু নিয়ে সিপিএমের তরফে জোরদার আন্দোলনে নামা হবে। কোচবিহারের ক্ষেত্রে ফাঁসিরঘাটে তোর্ষায় দ্বিতীয় সড়কসেতু তৈরির দাবি রয়েছে। এছাড়াও মহিলাদের নিরাপত্তা, দুর্নীতি রোধ ও বেকারত্ব মেটানো সহ নানা দাবি রয়েছে।
এদিন দূরদূরান্ত থেকে দলের অনেক পু্রোনো নেতা-কর্মী এই কর্মসূচিতে অংশ নেন। যদিও সিপিএমের অভিযোগ, অনেক জায়গায় তাঁদের কর্মীদের শাসকদলের নেতারা ভয় দেখিয়েছেন। না হলে আরও বেশি ভিড় হত বলে তাঁদের দাবি।