উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্কঃ রাজ্যপাল তথা আচার্যের নিয়োগ করা উপচার্যদের স্বীকৃতি দেবে না রাজ্য উচ্চশিক্ষা দপ্তর। শুক্রবার এমনটাই জানিয়ে দিলেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। তাঁর অভিযোগ, উচ্চশিক্ষা দপ্তরের সঙ্গে কোনও আলোচনা না করেই পদাধিকার বলে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস উপাচার্য নিয়োগ করেছেন। নিজের মর্জিমতো উপাচার্যদের নিয়োগ করে বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে নিয়ন্ত্রণ কায়েম করতে চাইছেন সিভি আনন্দ বোস।
ধনকর জমানা শেষ। রাজ্যে নতুন রাজ্যপাল হয়েছেন সি ভি আনন্দ বোস। ধনকরের জমানায় রাজ্য রাজ্যপালের সংঘাত ছিল নিত্যদিনের। আনন্দ বোসের জমানাতেও একই দৃশ্য প্রত্যক্ষ করছে রাজ্যবাসী। এবার সরকার পোষিত বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে উপাচার্য নিয়োগে সরাসরি সংঘাতে জড়িয়ে পড়ল রাজ্য রাজ্যপাল। বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে উপাচার্য নিয়োগ ঘিরে নতুন করে রাজ্য বনাম রাজভবনের সংঘাত শুরু হয় বৃহস্পতিবার। শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্টে অভিযোগ করেন, রাজ্যপাল বোস নিয়ম ভেঙে ১০টি বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন উপাচার্য নিয়োগ করেছেন ‘বেআইনি ভাবে’। রাজ্যপাল কর্তৃক সদ্য নিয়োগ পাওয়া উপাচার্যদের পদ প্রত্যাখ্যান করার অনুরোধও জানান।
জানা গিয়েছে, উপাচার্য নিয়োগের ক্ষেত্রে উচ্চশিক্ষা দপ্তরের গড়া সার্চ কমিটির একটি বড় ভূমিকা রয়েছে। এই কমিটি সম্ভাব্য উপাচার্যদের নামের তালিকা দেবে । সেই তালিকা থেকেই আচার্য তথা রাজ্যপাল অনুমোদন দেবেন নতুন উপাচার্যের। এত দিন রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে উপাচার্য নিয়োগের ক্ষেত্রে এটাই ছিল দস্তুর। কিন্তু বর্তমান রাজ্যপালের আমলে প্রচলিত সেই পদ্ধতি বদলে যাচ্ছে বলে অভিযোগ ব্রাত্য বসুর। এ প্রসঙ্গে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় এবং দক্ষিণ দিনাজপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘উদাহরণ’ দিয়ে ব্রাত্যের দাবি, রাজ্যের তরফে উপাচার্য নিয়োগের জন্য সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব এবং নামের তালিকা পাঠানো সত্ত্বেও রাজভবনের তরফে সাড়া মেলেনি।
শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর দাবি, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী রাজ্যের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে উপাচার্য নিয়োগ করবেন রাজ্যপাল। কিন্তু ১০টি সরকার পোষিত বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগের ক্ষেত্রে সেই পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়নি। তাঁর মন্তব্য, ‘‘গণতন্ত্রের ক্ষেত্রে ‘চেকস অ্যান্ড ব্যালান্স’ থাকে বলে জানতাম। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার গণতন্ত্র শব্দটাকেই মান্যতা দিতে চাইছে না।’’ উপাচার্য নিয়োগের বিষয়টি নিয়ে তাঁরা আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার কথা বিবেচনা করছেন বলেও জানান ব্রাত্য।
এই প্রসঙ্গে রাজভবনে রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস বলেছিলেন, ‘‘আলোচনা মানেই যে সহমত হতে হবে তার কোনও মানে নেই।’’ ব্রাত্যের অভিযোগ, রাজ্যপাল পুরো বিষয়টি গুলিয়ে দিতে চাইছেন। পুরনো উপাচার্যদের ভূমিকায় বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে গোষ্ঠীতন্ত্র প্রাধান্য পাচ্ছিল বলে রাজভবনের তরফে যে অভিযোগ উঠেছে, সে প্রসঙ্গে ব্রাত্যের প্রশ্ন, ‘‘তা হলে বিষয়টি নিয়ে আমাদের সঙ্গে কোনও রকম আলোচনা করলেন না কেন রাজ্যপাল?’’