জসিমুদ্দিন আহম্মদ, মালদা: পিএইচই’র পাইপলাইন ফুটো করে বাড়িতে জলসংযোগ করে ফেলেছেন কিছু গ্রামবাসী। এমনই অভিযোগ তুলে ৫০ জন গ্রামবাসীর বিরুদ্ধে পুলিশে নোটিশ করল পিএইচই দপ্তর। ইংরেজবাজারের বিনোদপুর অঞ্চলের সাতটারি, নয়াটোলা এলাকায় এমনই অভিযোগ ঘিরে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। প্রত্যেকের বিরুদ্ধে ৩২৬/এ ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। যদিও পিএইচই’র করা অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন গ্রামবাসী। পুলিশি নোটিশ পেয়ে ক্ষুব্ধ গ্রামবাসী শুক্রবার দুপুরে লক্ষ্মীপুরে অবস্থিত পিএইচই দপ্তরে গিয়ে বিক্ষোভ দেখান।
‘জল জীবন মিশন’ এর অন্তর্গত ২০২৪ সালের মধ্যে জেলার প্রতিটি বাড়িতে পরিস্রুত পানীয় জল পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দেয় কেন্দ্রীয় সরকার। প্রকল্পের বাস্তবায়নে জেলা প্রশাসনের নজরদারিতে পিএইচই দপ্তর প্রায় গোটা বছর যুদ্ধকালীন তৎপরতায় গ্রামে-গ্রামে, প্রতিটি বাড়িতে পানীয় জল পৌঁছে দেওয়ার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। ইতিমধ্যেই মালদা জেলার ৮০ শতাংশের বেশি এলাকায় পানীয় জল পৌঁছে গিয়েছে বলে খবর। অভিযোগ উঠছিল, পিএইচই পাইপলাইন ফুটো করে কিছু কিছু মানুষ নিজেরাই জলসংযোগ করে ফেলছেন বাড়িতে। এনিয়ে খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিরক্তি প্রকাশ করেছেন। পিএইচই দপ্তরকে এনিয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে দপ্তরের ইমপ্লিমেন্ট সাপোর্ট এক্সপার্ট এজেন্সির লোকেরা জল চুরির তদন্ত করছেন গ্রামে গ্রামে।
এদিকে, পুলিশি নোটিশ পেয়ে গ্রামবাসী ক্ষোভে ফেটে পড়েন। শুক্রবার অভিযুক্ত গ্রামবাসী ইংরেজবাজার থানায় গিয়ে জানান, ‘তাঁরা সরকারি কাগজ জমা দিলে স্থানীয় পিএইচই অপারেটার তাঁদের বাড়িতে জলসংযোগ দিয়েছে। জল চুরির কোনও প্রশ্ন নেই।’ ইংরেজবাজার থানা থেকে গ্রামবাসীরা সোজা চলে যান লক্ষ্মীপুর পিএইচই’র অ্যাসিস্টান্ট ইঞ্জিনিয়ারের দপ্তরে। মিথ্যা অভিযোগ তোলার প্রতিবাদ জানিয়ে বিক্ষোভ দেখান গ্রামবাসী।
মোজাম্মেল মিয়াঁ নামে এক গ্রামবাসীর অভিযোগ, ‘সরকারি প্রকল্প ‘জল জীবন মিশন’ প্রকল্পে বিনা খরচে জল পাওয়া যায়। আমরা স্থানীয় পিএইচই অপারেটারের কাছে ভোটার কার্ড, আধার কার্ড দিয়ে জলের জন্য আবেদন করেছি। যার ভিত্তিতে তারা আমার বাড়িতে জলসংযোগ দিয়েছে। এখন আমাদের নামে পুলিশি নোটিশ পাঠানো হয়েছে।’
স্থানীয় পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য ঔরঙ্গজেব হোসেন জানান, ‘নিরীহ গ্রামবাসীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করেছে পিএইচই দপ্তর। সরকারি প্রকল্পের সুবিধা পেতে তাঁরা সকলেই জলের জন্য আবেদন করেছিলেন। এখন তাঁদের নামে আবার মামলাও করা হচ্ছে। আমার মনে হয়, ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। এনিয়ে আধিকারিকের সঙ্গে কথা হয়েছে।’
তবে, পিএইচই অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার প্রমিতকুমার দত্ত জানান, ‘আমাদের সাপোর্ট এজেন্সি গ্রামে গ্রামে জল চুরির তদন্ত করছেন। তাঁরা সাতটারি এলাকার ৫০টি বাড়ির রিপোর্ট পেশ করেছেন, যাঁরা নিজে থেকে পাইপ ফুটো করে জলসংযোগ করেছেন। তাঁদের বিরুদ্ধে আমরা থানায় অভিযোগ করেছি। তাঁরা চুরি না করে থাকলে ভয়ের কোনও কারণ নেই।