আলিপুরদুয়ার: ইতিমধ্যেই কালবৈশাখীর দাপট দেখা গিয়েছে আলিপুরদুয়ার জেলার বিভিন্ন জায়গায়। ঝড়ের দাপটে জেলার বিভিন্ন জায়গায় ক্ষয়ক্ষতির খবরও এসেছে। কোনও জায়গায় গাছ ভেঙেছে, কোনও জায়গায় আবার বিদ্যুতের খুঁটিও ভেঙেছে। সামগ্রিকভাবে বললে বিভিন্ন গ্রাম বা শহরে এখনও খুব বড় ক্ষতি না হলেও, ক্ষতি হয়েছে জঙ্গলে। জেলার বক্সা টাইগার রিজার্ভের বড় অংশ নষ্ট হয়েছে প্রকৃতির রোষে। এপ্রিল মাসের ২৯ তারিখের ঝড়ে সব থেকে বেশি ক্ষতি হয়েছিল বক্সায়।
পরবর্তীতে গোটা মে মাস জুড়েই ঝড়ে বিভিন্ন সময় প্রচুর গাছ ভেঙেছে বক্সায়। আলিপুরদুয়ার শহর থেকে দমনপুর হয়ে রাজাভাতখাওয়া গেটের দিকে যেতেই রাস্তার দুধারেই যেমন প্রচুর গাছ পড়ে থাকতে দেখা যাবে, যেগুলো ঝড়ে ভেঙেছে। টাইগার রিজার্ভের ভিতরেও প্রচুর গাছ ভেঙেছে। বিগত কয়েক বছরে এত ক্ষতি হয়নি বলেই বক্তব্য বন দপ্তরের। এবিষয়ে বন বিভাগের দমনপুরের (পূর্ব) রেঞ্জার সুজিত কুমার বর্মার বক্তব্য, ‘ঝড়ে প্রচুর গাছ নষ্ট হয়েছে। উধ্বর্তন কর্তৃপক্ষকে সেই রিপোর্ট দেওয়া হয়েছে। বিগত ১০-১৫ বছরের ঝড়ে এমন ক্ষতি হয়নি।’
দমনপুর রেঞ্জ এলাকাতেই প্রায় ৪০০-৫০০ গাছ ভেঙেছে। গোটা বক্সা টাইগার রিজার্ভের হিসেব ধরলে সেই সংখ্যাটা প্রায় ৫ হাজার বলে বন বিভাগ সূত্রে খবর। যদিও এই বিষয়ে বন কর্তারা অফিসিয়ালভাবে কিছু জানাচ্ছে না। বক্সা টাইগার রিজার্ভের ডেপুটি ফিল্ড ডিরেক্টর পারভিন কাশওয়ান এবিষয়ে বলেন, ‘জঙ্গলে মোট কত গাছ ভেঙেছে সেটা সঠিক হিসেব করা মুশকিল। কিছু জায়গায় কাউন্টিং করা হয়েছে। বন বিভাগে সেই রিপোর্ট দেওয়া হয়েছে। সেখান থেকে অনুমতি আসলেই ভাঙা গাছগুলো আলাদা করা হবে।’
বন কর্তারা জানাচ্ছেন, শুধু ২৯ এপ্রিলই জঙ্গলের মাঝে রাস্তার উপরই ৪০টি গাছ ভেঙে পড়েছিল। ওইদিন রাস্তায় অনেক গাড়িও আটকে যায়। তবে বক্সা টাইগার রিজার্ভে যে ক্ষতি হল সেটা পূরণ করতে বেশ সময় লাগবে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। যে গাছগুলো ভেঙেছে সেগুলোর বেশিরভাগেরই অনেক বয়স হয়েছিল। দমকা হাওয়ায় বড় গাছ শেকড় থেকে উপরে গিয়েছে। বন দপ্তরের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সময় নতুন চারা লাগানো হলেও, সেটা কতটা ওই ক্ষতিপূরণ করতে পারবে সেই নিয়ে প্রশ্ন থাকছেই। অন্যদিকে, প্রায় এক মাস আগে ঝড়ে গাছ ভাঙতে শুরু করলেও এখনও সেই গাছগুলো না সরানো হওয়ায় অনেক গাছই অনেকে কেটে নিয়ে যাচ্ছেন। বিভিন্ন বন বস্তির বাসিন্দারা যেমন লাকড়ি হিসেবে ওই গাছগুলো কেটে নিয়ে যাচ্ছে, তেমনই আবার পাচারকারীদের নজরও রয়েছে ওই ভাঙা গাছগুলোর উপর।