Friday, February 14, 2025
Homeউত্তরবঙ্গCooch Behar | সরস্বতীপুজোর ব্যবসা হারিয়েছে স্টুডিও! কী বলছেন ফটোগ্রাফাররা?

Cooch Behar | সরস্বতীপুজোর ব্যবসা হারিয়েছে স্টুডিও! কী বলছেন ফটোগ্রাফাররা?

পারডুবি ও মেখলিগঞ্জ: কয়েক বছর আগে পিছিয়ে যাওয়া যাক। ছেলেমেয়েকে নিয়ে বাবা-মা সেজেগুজে রাস্তায় বেরিয়েছেন। উদ্দেশ্য কী? না স্টুডিও গিয়ে ছবি তোলা। হ্যাঁ, ঠিকই পড়েছেন। আজ থেকে ২০ বছর আগে পিছিয়ে গেলেও এই কথা পড়ে কারোরই বিশেষ ভ্রূ কুঁচকে উঠত না। শুধু কি এখানেই শেষ? এরপর বাড়ির সকলের অধীর অপেক্ষা কবে সেসব ছবি হলুদ বা সাদা খামে করে দোকান থেকে নিয়ে আসা হবে। সেই সঙ্গে সামর্থ্যে কুলোলে যদি একটা অ্যালবাম কেনা যেতে পারে তাহলে তো সোনায় সোহাগা। এরপর চা, মুড়ি-চানাচুর নিয়ে পুরো পরিবার বসে পড়া হবে সেসব ছবি দেখতে।

সময় বদলেছে। প্রযুক্তির দৌলতে একসময়ের মহার্ঘ ক্যামেরা এখন মুঠোফোনের সৌজন্যে সকলের কাছে। পাল্লা দিয়ে কদর কমেছে স্টুডিওরও। একসময় যেখানে সরস্বতীপুজোর দিন কোচবিহারের বিভিন্ন জায়গার স্টুডিওগুলোতে উপচে পড়া ভিড় দেখা যেত বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের, সোমবার সেখানে বেশিরভাগ কার্যত শুনসান অবস্থাতেই পড়ে রইল। স্টুডিও ব্যবসায়ী অজয় বর্মন জানান, আগে যখন রিল ক্যামেরায় ছবি তোলা হত তখন সরস্বতীপুজোর দিনে ২৫–৩০টা রিল শেষ হওয়া ছিল সাধারণ বিষয়। খুব কম হলেও আট-দশ হাজার টাকার ব্যবসা নিশ্চিত ছিল। এবার সেখানে কোনওক্রমে ব্যবসা হয়েছে সাকুল্যে দুই-তিন হাজার। এবিষয়ে কথা হচ্ছিল তরুণ মৈনাক সরকারের সঙ্গে। তাঁর স্পষ্ট জবাব, ‘এখন ফোন দিয়ে যখন খুশি পছন্দমতো ছবি তোলা যায়। স্টুডিওতে যাওয়ার প্রয়োজন কী?¬’

অবশ্য মাথাভাঙ্গা-২ ব্লকের পারডুবি এবং মেখলিগঞ্জে এরকম স্টুডিও-এর অস্তিত্বই রয়েছে হাতেগোনা মাত্র কয়েকটি। শেষ কয়েক বছরে বেশিরভাগই বন্ধ হয়ে গিয়েছে। অনেকে আবার বাধ্য হয়ে অন্য পেশাকেও বেছে নিয়েছেন। যেমন- পারডুবির স্টুডিও ব্যবসায়ী ভগবান বর্মন এখন চারাগাছ, মাছের চারাপোনা এবং রেডিমেড ফোটো ফ্রেম বিক্রি করে রুজিরুটি চালান। সরস্বতীপুজো উপলক্ষ্যে এদিন দোকানের ঝাঁপ খুলেছিলেন। যদিও ব্যবসার হাল বিশেষ সন্তোষজনক নয়।

এরপরও অবশ্য শুধুমাত্র পেশার প্রতি ভালোবাসার টানে আজও স্টুডিও আঁকড়ে বেঁচে রয়েছেন অনেকে। যেমন ফোটোগ্রাফার শ্যামল নাহার কথায়, ‘১৯৮৫ সালে কলেজের ফাইনাল ইয়ারের পরীক্ষা দিয়েই স্টুডিও খুলেছিলাম। সেই থেকে ডিজিটাল ক্যামেরা পর্যন্ত সব ঠিকঠাক চলছিল। মোবাইল এসে ব্যবসার দফারফা করে ছাড়ল।’ তারপরও পেশার প্রতি ভালোবাসার কারণে ময়নাগুড়ি থেকে মেখলিগঞ্জে নিজের দোকানে আসেন বলে তিনি জানান। একই সুর শোনা যায় আরেক ফোটোগ্রাফার বিদ্যুৎ সরকারের গলাতেও। অবশ্য এদের খানিক আশ্বস্ত করেন তন্ময় দাসের মতো তরুণরা। যাঁর কথায়, ‘স্টুডিওতে গিয়ে ছবি তোলায় একটা ব্যাপার আছে। স্মার্টফোনে যেটা নেই। এবারেও তাই সরস্বতীপুজোয় স্টুডিও গিয়ে ছবি তুললাম।’

Mistushree Guha
Mistushree Guhahttps://uttarbangasambad.com/
Mistushree Guha is working as Sub Editor. Presently she is attached with Uttarbanga Sambad Online. Mistushree is involved in Copy Editing, Uploading in website.
RELATED ARTICLES
- Advertisment -
- Advertisment -spot_img
[td_block_21 custom_title="LATEST POSTS"]

Most Popular