অর্ণব চক্রবর্তী, জাফরাবাদ (সামশেরগঞ্জ): সামশেরগঞ্জে সংঘর্ষে বিধ্বস্ত এলাকায় গিয়ে নিগৃহীতদের আশ্বস্ত করলেন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার। রাজ্য বিজেপির সভাপতি জানান, কেন্দ্রীয় সরকার তাঁদের পাশে রয়েছে। আক্রান্তদের অভাব অভিযোগের বিষয়টি খতিয়ে দেখার পাশাপাশি এলাকার নিরাপত্তায় আরও বেশি বিএসএফ মোতায়েনের আশ্বাস দিয়েছেন। একইসঙ্গে জানিয়েছেন, প্রয়োজনে কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে কথা বলে বিএসএফ ক্যাম্পের ব্যবস্থা করা হবে আইনি প্রক্রিয়া মেনেই।
এদিন দুপুর দেড়টা নাগাদ তিনি রতনপুরের ঘোষপাড়ায় আক্রান্ত পরিবারগুলোর সঙ্গে কথা বলেন এবং ভেঙে যাওয়া দোকানপাট সহ বিভিন্ন জায়গা ঘুরে দেখেন। স্থানীয় বাসিন্দারা বিএসএফ ক্যাম্পের দাবি জানাতে থাকেন তাকে ঘিরে। এক মহিলা বলেন, ‘সারারাত তাণ্ডব চলেছে। ঘরবাড়ি সব শেষ, কিচ্ছু নেই। কী করে বাঁচব আমরা?’ পুলিশ যে কোনও পদক্ষেপই করেনি, সেটাও তাঁরা জানিয়েছেন। অপর এক মহিলা বলেন, ‘আমরা শুধু ভয়ে কেঁদেছি। পুলিশ সব জানে, তাও আসেনি। আমরা যখন মারা যাব, তখন কি পুলিশ আসবে?’
সুকান্ত মজুমদার নিগৃহীতদের আশ্বস্ত করেন। তিনি আশ্বাস দেন, কেন্দ্রীয় সরকার তাঁদের পাশে রয়েছে। তাঁদের অভাব অভিযোগের বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাসও দিয়েছেন। এলাকার নিরাপত্তায় বিএসএফ আরও বেশি করে মোতায়েন করার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। ঘোষপাড়া এলাকা ঘুরে দেখার পর সুকান্ত বলেন, ‘রিফিউজি ক্যাম্পে গিয়েছিলাম, প্রত্যেকের দাবি ছিল, এলাকায় স্থায়ী বিএসএফ ক্যাম্প দরকার। রাজ্য পুলিশের উপর সাধারণ মানুষের বিশ্বাস নেই। আমি রাজ্য সরকারকে আবেদন করব, এখানে কেন্দ্রীয় বাহিনীর স্থায়ী ক্যাম্প করার রাজ্য যাতে কেন্দ্রের কাছে তদ্বির করে।’
সেখান থেকে তিনি এসে পৌঁছান জাফরাবাদে। বাবা ও ছেলের নৃশংস খুনের ঘটনায় আক্রান্ত দাস পরিবারের ঘরে আসেন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী। পরিবারের সকলে জানান, পুলিশ ঠিক সময় এলে হয়তো খুন এড়ানো যেত। নিহত তরুণের দিদি বলেন, ‘যারা আমার ভাই এবং বাবাকে খুন করেছে তাদের ফাঁসি চাই।’ পরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে সুকান্ত মজুমদার বলেন, ‘কথা বললাম পরিবারের সঙ্গে, বিষয়টা খুবই মর্মান্তিক। বাড়ির দুজনকে মেরেছে অন্য সবাই পালিয়ে বেঁচেছেন। এদের পরিবারের পাশে আছি যারা খুন করেছে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাইছি।’
রাজ্য বিজেপির সভাপতির দাবি, ‘এই সমস্ত জায়গায় বিএসএফ ক্যাম্প ছিল। পরে বাম সরকার তুলে দেয়। আপাতত রাজ্য সরকারের উচিত ওই সব সংবেদনশীল এলাকায় বিএসএফ ক্যাম্পের জন্য আবেদন করা। প্রয়োজনে আমরা কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে কথা বলে ক্যাম্পের ব্যবস্থা করব। কিন্তু শুরুতে রাজ্য সরকারকেই বিএসএফ চেয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে, কারণ বিষয়টা আইনি প্রক্রিয়ার ব্যাপার।’