সুবীর মহন্ত, বালুরঘাট: ‘দেহত্যাগ না করলে পদত্যাগ করবেন না মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওঁকে পদের মোহ পেয়ে বসেছে।’ মঙ্গলবার ঠিক এই ভাষাতেই রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধানকে কটাক্ষ করলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার(Sukanta Majumdar)৷ তিনি আরও বলেন, রাজ্যে এখন একটাই দাবি, মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ। আসলে মানুষ শুধুমাত্র সঞ্জয় রায়ের গ্রেপ্তার চায় না। তারা চায় মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ। তাহলেই বিচার মিলবে। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী সবার পদত্যাগ দাবি করলেও নিজে পদত্যাগ করবেন না। তাই তাঁরাও মুখ্যমন্ত্রীকে সরাতে ধারাবাহিক আন্দোলন করে যাবেন।
এদিন আরজি করে খুন ও ধর্ষণ এবং বংশীহারীতে নাবালিকা ছাত্রীকে ধর্ষণের প্রতিবাদে বালুরঘাটে জেলা প্রশাসনিক ভবন ঘেরাও ও বিক্ষোভ কর্মসূচির নেতৃত্বে ছিলেন সুকান্ত। উপস্থিত ছিলেন দলের জেলা সভাপতি স্বরূপ চৌধুরী, জেলা সাধারণ সম্পাদক বাপি সরকার সহ আরও অনেকে। এদিন দলীয় কার্যালয় থেকে মিছিল বের হয়৷ অবশ্য জেলা প্রশাসনিক ভবন চত্বরে আসতেই মিছিল আটকে দেওয়া হয়৷ প্রথম ব্যারিকেড ভেঙে দেয় বিজেপি(BJP)। কিছুক্ষণের জন্য পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি হয় গেরুয়া শিবিরের কর্মী-সমর্থকদের৷ পরে বাঁশের ব্যারিকেড ভেঙে দেন তাঁরা। এদিনের বিক্ষোভ কর্মসূচি থেকে মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবি জানান বিজেপি নেতৃত্বরা৷
আরজি করের ঘটনার প্রতিবাদে সোমবারই রাজ্যের প্রতিটি ডিএম অফিস ঘেরাও বিক্ষোভ করে বিজেপি। বংশীহারীতে ক্লাস ফাইভের ছাত্রীকে ধর্ষণ করে খুনের চেষ্টায় গতকাল জেলায় বনধের ডাক দেওয়া হয়েছিল। তাই বিজেপি তাদের কর্মসূচি পিছিয়ে দিয়েছিল। সেই কর্মসূচি এদিন বালুরঘাটে পালিত হল। এদিনের কর্মসূচি থেকে রাজ্য সরকারকে ভর্ৎসনা করে বিজেপি নেতৃত্ব৷
এদিন জেলা প্রশাসনের উপরেও খড়গহস্ত ছিলেন সুকান্ত। তিনি বলেন, ‘যেভাবে এই রাজ্যে বিনীত গোয়েল মুখ্যমন্ত্রীর দলদাস হয়ে উঠেছেন, তেমনই এই জেলায় মন্ত্রী বিপ্লব মিত্রের চাকর হয়ে রয়েছেন জেলা শাসক, পুলিশ সুপাররা। লোকসভা নির্বাচনের গণনার দিন পুলিশ সুপার গণনাকেন্দ্রে তৃণমূল নেতাদের অবৈধ প্রবেশ রুখতে পারেননি। জেলায় একের পর এক মহিলাকে ধর্ষণের ঘটনা ঘটে গেলেও রুখতে পারেননি। জেলার মহিলা মোর্চার কর্মীদের আমি বলব, তাঁরা যেন পুলিশ সুপারকে চুড়ি উপহার দিয়ে আসেন। দেশের অন্যত্রও মহিলাদের উপর নির্যাতনের ঘটনা ঘটছে। কিন্তু কোথাও এই রাজ্যের মতো ধর্ষকদের বাঁচাতে চক্রান্ত চলে না। আর মুখ্যমন্ত্রী বিধানসভায় দাঁড়িয়ে বলছেন অপরাজিতা বিল এনেছেন। ওই বিলে কচু হবে।’