সুবীর মহন্ত ও নবনীতা মণ্ডল
বালুরঘাট ও নয়াদিল্লি: কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হওয়ার পর বালুরঘাটের খাদিমপুর মাস্টারপাড়ার ছেলে সুকান্ত মজুমদারের আবেগমথিত গলায় উঠে আসছে তাঁর বাবা ও ঠাকুরদার কথা। এতটা আবেগ সাম্প্রতিককালে আগে কখনও দেখা যায়নি তাঁর গলায়। শপথ নিতে যাওয়ার আগে ঘিরে ধরা ক্যামেরার সামনে তিনি বলেই ফেললেন, ‘এত তাড়াতাড়ি আমার মতো সাধারণ কার্যকর্তাকে এত কিছু দিয়েছেন, নরেন্দ্র মোদি ও জেপি নাড্ডাকে ধন্যবাদ। আমি এক সাধারণ মানুষ। ঠাকুরদা চাষ করতেন। বাবা ছিলেন চাকরিজীবী।’
কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভায় সুকান্ত ছাড়া বাংলা থেকে জায়গা পেয়েছেন শান্তনু ঠাকুর। দুজনেই প্রতিমন্ত্রী। তবে সুকান্ত মন্ত্রী হওয়ার পর সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হয়ে উঠেছে অন্য। গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জর্জরিত বিজেপির রাজ্য সভাপতি কে হবেন এবার? নাম উঠছে অনেকেরই। তাতে বিবদমান গোষ্ঠীর দুই নেতা দিলীপ ঘোষ, সুকান্ত মাহাতোর পাশাপাশি রয়েছেন পুরুলিয়ার দু’বারের সাংসদ জ্যোতির্ময় মাহাতো। অনেকে ভোটে হেরে যাওয়া লকেট চট্টোপাধ্যায়ের নামও করছেন। উঠছে জগন্নাথ সরকারের নাম।
বাংলা থেকে অনেকে মন্ত্রী হওয়ার আশায় থাকলেও দুজনকে বাছার ক্ষেত্রে উত্তরবঙ্গ এবং মতুয়া ফ্যাক্টর কাজ করেছে। বালুরঘাটে যেখানে তীব্র উল্লাস, সেখানে অনেকটাই হতাশা জলপাইগুড়ি-আলিপুরদুয়ার-দার্জিলিং-শিলিগুড়ি-মালদায়। মন্ত্রী হওয়ার পর কী বলছেন দুজনে? আপনি কি ভেবেছিলেন, মন্ত্রী হবেন? সুকান্তের ব্যাখ্যা, ‘আমাদের পার্টিতে সবকিছুই নজর রাখেন উপরের নেতারা। দলের সর্বভারতীয় সভাপতি তো বটেই, প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীরাও নজর রাখেন। কাকে, কখন, কোথায় দরকার, সেসব ঠিক করেন। তাই আমাদের আগাম ভাবা বা দাবি করতে হয় না। আমরা রেজিমেন্টেড পার্টির সৈনিক। দল যা দায়িত্ব দেবে, যেখানে লড়তে বলবে, আমরা একবারও চিন্তা করব না। ওয়াঘা বর্ডার হোক বা পলাশীর প্রান্তর, যেখানেই লড়তে যেতে বলবে, লড়ব।’ শান্তনুর কথায় উঠে এল মতুয়ার কথা, ‘মতুয়াদের অবস্থা বিপিএলের থেকেও করুণ। সর্বস্ব হারিয়ে এদেশে এসেছে। মতুয়াদের প্রতি কেন্দ্র ও রাজ্যের নজর রাখা উচিত।’
সুকান্তকে মন্ত্রী করার ব্যাপারটা পুরস্কার না শাস্তি, এ নিয়ে জোর চর্চা শুরু হয়েছে বাংলার রাজনীতিতে। তিনি নিজে কী বলেন, জানতে চাইলে জবাব এল, ‘আমরা পুরস্কার বা তিরস্কার নিয়ে ভাবি না। দল যদি কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর পরিবর্তে বুথ সভাপতির দায়িত্ব দিত, আমি আমার সামর্থ্য নিয়ে সেই কাজেই ঝাঁপিয়ে পড়তাম। আমরা যে বৈভবশালী ভারতের স্বপ্ন দেখি, সেই স্বপ্ন পূরণের জন্য নেতারা যে দায়িত্ব দেবেন, আমরা তা পালন করব। যা আসন পেয়েছি, তার থেকে একটু বাড়ালে আমরা রাজ্য সরকারেও আসতে পারব।’
রাজ্য সভাপতির পদ থেকে তাঁকে তিন বছরেই সরতে হচ্ছে। এ নিয়ে প্রশ্ন তুললে সুকান্তর স্পষ্টকথা, ‘পার্টির যা নিয়ম সেই নিয়ম মেনেই চলব। যা নির্দেশ আসবে সেই নির্দেশ মানব। পদ নিয়ে ভাবি না। কাজ করতে হবে, দলের সিদ্ধান্ত মেনে চলতে হবে। দল আমাকে এই জায়গায় নিয়ে এসেছে, দলই আমাকে নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।’
এর আগে বালুরঘাটের বাসিন্দা, রায়গঞ্জের সাংসদ দেবশ্রী চৌধুরী কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী হয়েছিলেন। জেলা নিয়ে কী ভাবছেন সুকান্ত? হেসে উত্তর দিলেন, ‘এটা আমার জেলার জন্য সুখবর। স্বাধীনতার পর এই প্রথম কেউ বালুরঘাট তথা জেলা থেকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হচ্ছে। আগে আমরা দিল্লির ট্রেন এনেছি। রেলের কাজ করেছি। এখন আমি ফ্লাইট পরিষেবা চালুর চেষ্টা করছি। আমার জেলার যোগাযোগ ব্যবস্থা খুব খারাপ। যদি রাজ্য সরকার আমাকে পঞ্চাশ শতাংশ সহযোগিতা করে, তাহলে এটাও পারব। কাজ কীভাবে করতে হয়, আমি জানি। কাজ হবে। বালুরঘাট থেকে বিমান উড়বে।’ কথা বলতে বলতে যোগ করেন, ‘আমি কৃষক পরিবারের ছেলে। আমার পরিবারের আমিই সবথেকে বেশি পড়াশোনা করেছি। পরিবারের কেউ কোনওদিন রাজনীতি করেননি। গ্রামের মানুষ ছিলেন সবাই। আমাকে কেউ চিনতেন না।’
সকালে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা হয়েছিল। ওই বৈঠকে কী বার্তা দেওয়া হয়? সুকান্তর কাছে জানা গেল, প্রধানমন্ত্রী তাঁর অভিজ্ঞতার কিছু কথা তাঁদের বলেছেন। ‘একজন প্রধানমন্ত্রী হিসাবে শুধু প্রশাসনিক দিকেই নয়, সংগঠনেও যে তাঁর নজর থাকে তা মোদিজির কর্মকাণ্ডে বারবার উঠে এসেছে। এদিন ব্যক্তিগত আলাপচারিতাতেও তিনি নানা বিষয়ে টিপস দিয়েছেন।’
কথাবার্তার সময় বারবার আবেগতাড়িত দেখাচ্ছিল বালুরঘাটের ছেলেকে।
উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: বাঙালির খাবারের প্রতি টান অদম্য। আর তাতে যদি হয় চপ, সিঙারা…
উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: জেলবন্দি অবস্থাতেই আরও বিপাকে পড়লেন আপ নেতা তথা দিল্লির প্রাক্তন স্বাস্থ্যমন্ত্রী…
অভিজিৎ ঘোষ, আলিপুরদুয়ার: অবশেষে আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালে (Alipurduar Hospital) শুরু হতে চলেছে হাইব্রিড সিসিইউ (Hybrid…
উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: রথের দিন জিলিপি খাবে না, এরম বাঙালি বোধহয় খুব কমই আছে।…
মোস্তাক মোরশেদ হোসেন, রাঙ্গালিবাজনা: আলিপুরদুয়ারের (Alipurduar) মাদারিহাট-বীরপাড়া ব্লকের খয়েরবাড়ি ও রাঙ্গালিবাজনায় একের পর এক মহল্লা…
মণীন্দ্রনারায়ণ সিংহ, আলিপুরদুয়ার: কোথাও কোমর, কোথাও বুকসমান জল (Flood Like Situation)। শোয়ার ঘর থেকে রান্নাঘর…
This website uses cookies.