সিডনি: বর্ডার-গাভাসকার ট্রফি। দুই দেশের দুই কিংবদন্তির নামাঙ্কিত সিরিজ। ম্যাচের নির্ণায়ক দিনে মাঠে হাজির দুজনেই। যদিও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ অ্যালান বর্ডারকে। বিজয়ী অধিনায়ক প্যাট কামিন্সের হাতে ট্রফি তুলে দিলেন। অথচ, ব্রাত্য সুনীল গাভাসকার! মাঠে থেকেও দর্শক!
অপমানিত হয়ে চুপ থাকেননি গাভাসকার। কড়া ভাষায় মুখ খুলেছেন টেস্ট ইতিহাসের প্রথম দশ হাজার রানের মালিক। বলেছেন, ‘পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে থাকলে ভালোই লাগত। এটা বর্ডার-গাভাসকার ট্রফি। অস্ট্রেলিয়া-ভারতের মধ্যে সিরিজ। ভারতীয় বলেই হয়তো আমাকে ডাকা হয়নি।’
সিরিজের শেষ দিনেও কমেন্ট্রি বক্সে ছিলেন। সেখানে বসেই প্রত্যক্ষ করেছেন পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান। গাভাসকার বলেছেন, ‘আমি তো মাঠেই ছিলাম। ডাকতেই পারত। কোন দল জিতল, তার ওপর পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান নির্ভর করে না। অস্ট্রেলিয়া যোগ্য হিসেবে জিতেছে। বন্ধু বর্ডারের সঙ্গে আমিও কামিন্সের হাতে ট্রফি তুলে দিতে পারতাম।’
এমন কিছু ঘটার ইঙ্গিত অবশ্য আগেই পেয়েছিলেন। গাভাসকার বলেছেন, ‘আমাকে বলা হয়েছিল, ভারত যদি সিরিজ ড্র করে বা হেরে যায়, তাহলে ট্রফি প্রদান অনুষ্ঠানে আমাকে প্রয়োজন পড়বে না। কথাটা শুনে খারাপ লেগেছিল। তবুও মনে হয়েছিল…। বর্ডার-গাভাসকার ট্রফি যখন, দুজনেরই উপস্থিতি প্রয়োজন ছিল।’
গাভাসকারের তোপের পর ভুল স্বীকার ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার। বলা হয়েছে, ‘সুনীল গাভাসকার, অ্যালান বর্ডার, দুজনকেই ডাকা উচিত ছিল। আমাদের ভুল হয়েছে। আসলে ঠিক ছিল, ভারত জিতলে গাভাসকার বিজয়ী অধিনায়কের হাতে ট্রফি তুলে দেবেন। অস্ট্রেলিয়া জিতলে বর্ডার।’
এদিকে, গাভাসকারের রোষের মুখে গৌতম গম্ভীরও। সিরিজ শেষে দাবি করেন, ব্যাটিং অর্ডার নয়, বদলে ফেলা উচিত কোচদেরই। গম্ভীর দায়িত্ব নেওয়ার পর ১০টি টেস্টে ৬টিতেই হেরেছে ভারত। এরমধ্যে ঘরের মাঠে নিউজিল্যান্ডের কাছে ৩-০ ব্যবধানে হোয়াইটওয়াশের লজ্জা। এবার দশ বছর পর বর্ডার-গাভাসকার ট্রফি হাতছাড়া।
গাভাসকারের প্রশ্ন, ‘কোচরা কী করছে? নিউজিল্যান্ডের কাছে ঘরের মাঠে ৪৬ রানে অলআউট হয়েছিলাম। তখনই ব্যাটিংয়ের হাল বোঝা গিয়েছিল। প্রশ্ন, অজি সফরের আগে কোচরা তাহলে কী করল? কোনও উন্নতি হল না কেন? সবাই ব্যাটারদের দুষছে, প্রশ্ন করছে। কিন্তু কোচদের কেন প্রশ্ন করা হবে না? ওদের পারফরমেন্সের জবাবদিহি চাওয়া উচিত।’
গাভাসকারের যুক্তি, প্রতিপক্ষের সেরা বোলারদের কীভাবে সামলাতে হবে, তার কোনও পরিকল্পনাই ছিল না। শুধু ব্যাটিং অর্ডার বদলে গিয়েছেন গম্ভীররা। এখন মনে হচ্ছে ব্যাটিং অর্ডার নয়, কোচদেরই বদলে ফেলা দরকার। সামনে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি। তারপর ইংল্যান্ড সিরিজ। শুধু থ্রো ডাউন করিয়ে লাভ হবে না। টেকনিক ও মানসিকতায় বদল দরকার।
বিরাট কোহলিদেরও একহাত নিয়েছেন। বারবার ভুল ধরিয়ে দিয়েছেন। যদিও কে শোনে কার কথা? কটাক্ষের সুরে গাভাসকার বলেন, ‘আমরা ক্রিকেটের কী জানি? কিছুই তো পারি না। পয়সার জন্য শুধু টিভিতে বকবক করি। আমাদের পরামর্শকে পাত্তা দেওয়ার প্রয়োজন নেই। ইরফান পাঠান বা আমরা এমনি বকবক করি। এক কান দিয়ে শোনো, আরেক কান দিয়ে বের করে দাও।’