উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: মমতার ‘মৃত্যুকুম্ভ’ মন্তব্যের পাশে দাঁড়িয়ে যোগী প্রশাসনের তীব্র সমালোচনা করলেন জগৎগুরু শংকরাচার্য। বুধবার পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (CM Mamata Banerjee) ‘মৃত্যুকুম্ভ’ মন্তব্যের প্রেক্ষিতে একটি সর্বভারতীয় সংবাদসংস্থাকে প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে উত্তরাখণ্ড জ্যোতিষপীঠের ৪৬তম শংকরাচার্য অভিমুক্তেশ্বরানন্দ সরস্বতী (Swami Avimukteshwaranand Saraswati) বলেন, ‘৩০০ কিলোমিটার ধরে যানজট, এটা অব্যবস্থা না তো কি? মানুষকে ব্যাগপত্র নিয়ে ২৫-৩০ কিলোমিটার হেঁটে যেতে হচ্ছে, স্নানের জন্য যে জল আসছে তা মানুষের মল-মূত্র মিশ্রিত। বিজ্ঞানীরা এই জলকে স্নানের উপযুক্ত বলে মনে করছেন না। অথচ কোটি কোটি মানুষকে এই জলেই স্নান করতে কার্যত বাধ্য করা হচ্ছে।’
শংকরাচার্যের বক্তব্য ‘প্রশাসনের জানা ছিল ১২ বছর পর কুম্ভ হতে চলেছে, তাদের কর্তব্য ছিল নর্দমার মুখ বন্ধ করে দেওয়া বা অন্যদিকে ঘুরিয়ে দেওয়া, কিন্তু তারা তা করেননি।’ তাঁর আরও বক্তব্য, ১৪৪ বছর নিয়ে মিথ্যে প্রচার করা হয়েছে। অযথা হাইপ তোলা হয়েছে। এত মানুষকে কেন আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে, যখন এদের যথাযথভাবে ভিড় মোকাবিলা করার কোনও ব্যবস্থা নেই? এমনকি মানুষ মারা যাওয়ার পরও তা লুকোনোর চেষ্টা করা হয়েছে বলেও অভিযোগ তাঁর। তিনি বলেন, ‘কেউ যদি এর সমালোচনা করে তাহলে আমরা তার বিরোধিতা করতে পারি না।’
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় মহাকুম্ভকে ‘মৃত্যুকুম্ভ’ বলে আক্রমণ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাজেট বিতর্কে নিজের ভাষণে বিরোধীশূন্য বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘মহাকুম্ভ আমি না-ই বা বললাম! ওটা এখন মৃত্যুকুম্ভ হয়ে গিয়েছে। মৃত্যুকূপের মতো।’ আমি মহাকুম্ভকে সম্মান করি। শ্রদ্ধা জানাই। পবিত্র গঙ্গা মা’কে আমি সম্মান করি। কিন্তু পরিকল্পনা না করে এত হাইপ তুলে এত লোকের মৃত্যু! বললেন ৩০ জন। কথাটা কি সঠিক? কত মৃতদেহ ভাসিয়ে দিয়েছেন নদীতে? কত? হাজার হাজার!’ স্বাভাবিকভাবেই মমতার এই মন্তব্যকে হাতিয়ার করেছে বিজেপি। বিধানসভার বাইরে অবস্থানমঞ্চ থেকে শুভেন্দু তৎক্ষনাৎ জানিয়ে দেন, ‘এটা মহাকুম্ভের অপমান, ভারতবাসী এটা সহ্য করবে না।’ তাবৎ হিন্দু সমাজকে এর প্রতিবাদে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানান শুভেন্দু। এরপরই এদিন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ করেন। উত্তরপ্রদেশ বিধানসভায় ক্ষিপ্ত যোগী আদিত্যনাথ মমতাকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘৫৬ কোটি মানুষ মহাকুম্ভে সঙ্গমে পূণ্যস্নান করেছেন। অথচ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভিত্তিহীন অভিযোগ করে এই ৫৬ কোটি মানুষের বিশ্বাসকে নিয়ে খেলা করছেন। ’ যোগীর প্রশ্ন ‘এই দুঃখজনক ঘটনার রাজনীতিকরণ করা কতটা সঠিক ?’ তিনি জানান, এই শতকের মহাকুম্ভ আয়োজন করতে পারাটা বিজেপি সরকারের কাছে সৌভাগ্যের ব্যাপার। শুধু দেশ নয়, সারা বিশ্ব থেকে বহু মানুষ মিথ্যে প্রচারকে উপেক্ষা করে কুম্ভে অংশগ্রহণ করেছেন।