শিলিগুড়ি: শরীর সুস্থ রাখতে প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় অনেকে আপেল রাখেন। তবে এই আপেলই যদি শরীর খারাপের কারণ হয় তাহলে? সিকিম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে সিকিম গভর্নমেন্ট কলেজের রসায়ন বিভাগের গবেষণায় এমনই তথ্য উঠে এল। শুনতে অবাক লাগলেও গবেষণা তাই বলছে। তবে এই ক্ষতির আশঙ্কা দেশি আপেলে নয়, বরং দেখতে লোভনীয় টুকটুকে লাল আপেলে রয়েছে। দেশি না বিদেশি কোন আপেলের গুণগত মান বেশি তা পরীক্ষা করতে গিয়ে এই ভয়ানক তথ্য উঠে এসেছে। সিকিম গভর্নমেন্ট কলেজের রয়াসন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডঃ ভাস্কর চক্রবর্তী বলেন, ‘সিকিম ও শিলিগুড়ির বাজারে বিক্রিত দেশি ও বিদেশি দু’ধরনের আপেল কিনে ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষার পর দেখা যায়, বিদেশি আপেলের উপর সিন্থেটিক প্রলেপ আছে যার ফলে আপেলগুলোকে দেখতে চকচকে মনে হয়। এই সিন্থেটিক প্রলেপ পেটে গেলে কিডনি, লিভার ও হার্টের সমস্যা হবে।’
কলেজের রসায়ন বিভাগের স্নাতকোত্তরের চতুর্থ সিমেস্টারের পড়ুয়াদের সহযোগিতায় বিভাগীয় প্রধান এই গবেষণা করেছেন। কী এই সিন্থেটিক প্রলেপ? এবিষয়ে ভাস্কর জানান, ফলকে সতেজ ও চকচকে রাখার জন্য কারনাউবা ওয়াক্স ব্যবহার করা হয়। এই সিন্থেটিক জৈব তরল পেটে গেলে শরীরের ক্ষতি হয়।
চতুর্থ সিমেস্টারের ছাত্রী নিকিতা ছেত্রীর কথায়, ‘বিদেশ থেকে আমদানি হওয়া আপেল ভারতে আসার পর ফুড টেস্টিং হয়। বাজারে বিক্রির আগে সেগুলিকে দীর্ঘসময় রসালো, চকচকে রাখার জন্য এই সিন্থেটিক প্রলেপ দেওয়া হয়। এই আপেল থেকে কাশ্মীর ও হিমাচলপ্রদেশের তুলনামুলক কম চকচকে ও রসালো আপেলের গুণগতমান অনেক বেশি বলে রাকেশ রাই নামে আরেক ছাত্র জানিয়েছেন।
বিদেশি আপেলের এই ক্ষতিকর দিক থেকে কীভাবে রক্ষা পাওয়া যাবে? তা নিয়ে কলেজের রসায়ন বিভাগের তরফে জানানো হয়েছে, সোডিয়াম বাই কার্বনেট বা খাওয়ার সোডা জলে গুলে সেখানে আপেলগুলো ১০-১৫ মিনিট ভিজিয়ে রাখতে হবে। তাহলে এই সিন্থেটিক প্রলেপ উঠে যাবে। যদি সোডিয়াম বাই কার্বনেট না থাকে তাহলে উষ্ণ গরম সাবান জল দিয়ে আপেলগুলোকে ধুয়ে নিতে হবে। প্রয়োজনে আপেলের খোসা তুলে খেতে হবে। তাঁদের এই গবেষণা সাধারণ নাগরিককে সচেতন হতে সাহায্য করবে বলে যুগল তামাং, নাজমা লেপচা, পেম্পা তামাংদের আশা।
