শুভদীপ শর্মা, লাটাগুড়ি : পড়ন্ত বিকেলে নেওড়া নদী থেকে জল পান করছে হাতির দল। জঙ্গলের এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে বাইসনের পাল। কখনও উঁচু শাল গাছের এক ডাল থেকে অপর ডালে হর্নবিলের উড়ে যাওয়া। জঙ্গলের আনাচে-কানাচে থাকা বিভিন্ন অর্কিড। দু’পাশে সবুজকে সাক্ষী রেখে জিপসিতে ঘুরে বেড়ানো পর্যটকের দল।
জঙ্গলে ঢোকার আগেই জায়েন্ট স্ক্রিনে এইসমস্ত দৃশ্য উপভোগ করতে পারবেন পর্যটকরা। পাশাপাশি জঙ্গলের বেহাল রাস্তাঘাট মেরামত শুরু করেছে বন দপ্তরের লাটাগুড়ি রেঞ্জ। নতুনভাবে সাজিয়ে তোলা হবে নেওড়া জঙ্গল ক্যাম্পকেও। এই উদ্যোগ পর্যটকদের আকৃষ্ট করবে বলে আশাবাদী পর্যটন ব্যবসায়ীরা। ১৬ জুন থেকে প্রতিবছরের মতো এবারও ভারতের প্রতিটি অভয়ারণ্যের মতো লাটাগুড়ির জঙ্গলে পর্যটকদের প্রবেশ তিন মাসের জন্য বন্ধ ছিল। আর এই সময়কে কাজে লাগাতে উদ্যোগী লাটাগুড়ি রেঞ্জ।
এখানে জিপসিতে করে জঙ্গল সাফারির সুযোগ পান পর্যটকরা। এর জন্য লাটাগুড়ি বাজারে বন দপ্তরের টিকিট কাউন্টার থেকে টিকিট কাটতে হয়। ভিড় থাকলে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয় পর্যটকদের। অনেকসময় এই অপেক্ষা করতে করতে বিরক্তি প্রকাশ করেন তাঁরা। তাই পর্যটকদের মনোরঞ্জনের জন্য একগুচ্ছ বন্দোবস্ত করতে চলেছে বন দপ্তরের লাটাগুড়ি রেঞ্জ।
এপ্রসঙ্গে রেঞ্জ অফিসার শুভ্রশঙ্খ দত্ত বলছেন, ‘পর্যটকদের কথা মাথায় রেখে টিকিট কাউন্টারে বেশ কিছু বসার জায়গার পাশাপাশি একটি জায়েন্ট স্ক্রিন লাগানো হবে। যেখানে প্রায় সারাদিনই অডিও ভিজুয়াল মাধ্যমে আগে থেকে রেকর্ড করা জঙ্গলের আনাচে-কানাচে থাকা জীবজন্তু থেকে শুরু করে কোন পথে সাফারি হয়, সে সমস্ত কিছু দেখানো হবে।’
তিনি আরও জানিয়েছেন, শুধুমাত্র টিকিট কাউন্টার নয়, নেওড়া নদীর পাড়ে থাকা লাটাগুড়ি নেওড়া জঙ্গল ক্যাম্পেও এধরনের একটি জায়েন্ট স্ক্রিন বসানো হবে। সাফারির মাঝে নেওড়া জঙ্গল ক্যাম্পে থাকা কলাখাওয়া ওয়াচটাওয়ারে কিছুক্ষণ সময় কাটান পর্যটকরা। সেই কথা মাথায় রেখে এই উদ্যোগ। একইসঙ্গে জঙ্গলের আশপাশের এলাকাকে সাজিয়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে দপ্তরের। বর্ষার সময় জঙ্গলের বেশ কিছু রাস্তাঘাটের হাল বিগড়ে গিয়েছে। সেন্ট্রাল বিট, লাটাগুড়ি বিট সহ বেশ কিছু এলাকায় পথের অবস্থা খারাপ। এদিন থেকে সেগুলোও মেরামত শুরু হয়েছে।