ফালাকাটা: এবার হাতির হানায় মৃত্যু হল বনকর্মীর। শনিবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে জলদাপাড়া পশ্চিম রেঞ্জের ব্যাংডাকি বিট অফিস সংলগ্ন যোগেন্দ্রনগর গ্রামে। বন দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতের নাম রিঠে সুব্বা(৪৫)। রিঠে অরণ্য সাথী পদে বন দপ্তরের ব্যাংডাকি বিটে কর্মরত ছিলেন। গতকাল রাতে একদল বুনো হাতি যোগেন্দ্রনগর গ্রামে ঢোকার চেষ্টা করে। জঙ্গল থেকে বেরিয়ে ধানখেতে হাতির দল চলে আসে। এই খবর পেয়ে রিঠে সুব্বা সহ ৬ জন বনকর্মী হাতির দলকে জঙ্গলে ফিরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন। এলাকায় তখন ক’জন ধান চাষিও খেত পাহারা দিচ্ছিলেন। বন দপ্তর ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রাতে প্রথমবার হাতির দলকে জঙ্গলে ফিরিয়ে দেন বনকর্মীরা। কিছুক্ষণ পর দলছুট একটি হাতি ফের লোকালয়ে বের হয়। আর সেই হাতির সামনেই পড়ে যায় রিঠে। বাকি বনকর্মীরা তখন প্রাণভয়ে পালিয়ে গেলেও রিঠে পালাতে পারেননি। তাঁকে শুঁড় দিয়ে পেঁচিয়ে ছিটকে ফেলে দেয় হাতিটি। এভাবে আক্রমণ করার পর হাতিটি জঙ্গলে ফিরে যায়। তারপর তড়িঘড়ি জখম বনকর্মীকে ফালাকাটা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
মৃতের বাড়ি শালকুমার-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের জলদাপাড়া গ্রামে। হাতিটি যেখানে ওই বনকর্মীকে আক্রমণ করে রবিবার সকালে সেখানে যান যোগেন্দ্রনগরের পঞ্চায়েত সদস্য কৃষ্ণ ওরাওঁ, আলিপুরদুয়ার-১ পঞ্চায়েত সমিতির বন ও ভূমি কর্মাধ্যক্ষ ভোলানাথ রায় সহ অন্যান্যরা। জনপ্রতিনিধিরাও হাতির আক্রমণের ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তাঁদের অভিযোগ, ব্যাংডাকি বিটে পর্যাপ্ত বনকর্মী নেই। দীর্ঘদিন ধরে এখানে বিট অফিসারও নেই। পর্যাপ্ত বনকর্মী না থাকায় হাতির আক্রমণ প্রতিরোধ হচ্ছে না। পঞ্চায়েত সদস্য কৃষ্ণ ওরাওঁ জানান, যেখানে বনকর্মীরাই সুরক্ষিত নয়। সেখানে সাধারণ মানুষ কীভাবে চিন্তামুক্ত থাকতে পারে!
তবে জলদাপাড়ার এডিএফও নবজিৎ দে জানান, মৃত বনকর্মীর পরিবারকে ৫ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। পরিবারের একজন চাকরিও পাবেন। আর পর্যাপ্ত বনকর্মী না থাকায় যে সমস্যা হচ্ছে সে কথা তিনিও মেনে নেন।