রায়গঞ্জ: স্ত্রীকে খুন করার অভিযোগে স্বামীকে বেধড়ক মারধর দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দিল মৃত গৃহবধূর পরিবার। মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে তিনটা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে রায়গঞ্জ শহরের মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে। পুলিশ অভিযুক্ত স্বামীকে আটক করে ইটাহার থানায় নিয়ে যায়। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতার নাম রিতারানি সরকার(২৫)। বাড়ি ইটাহার থানার পতিরাজপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ভেলাগাছি গ্রামে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গতকাল দুপুর বারোটা থেকে গৃহবধূ নিখোঁজ ছিল। এদিন সকালে বাড়ি সংলগ্ন আম গাছে ওই বধূকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখা যায়। খবর পেয়ে ইটাহার থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রায়গঞ্জ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে পাঠায়।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, ছয় বছর আগে কালিয়াগঞ্জের বোচাডাঙ্গা গ্রাম পঞ্চায়েতের ফতেপুর সংলগ্ন চান্দোল গ্রামের বাসিন্দা রিতারানী সরকারের সঙ্গে ইটাহার থানার পতিরাজপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ভেলা গাছি গ্রামের বাসিন্দা পেশায় কৃষক কেশর লাল সরকারের সঙ্গে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই ওই বধূকে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন করত বলে অভিযোগ। গতকাল দুপুরে ওই বধুকে মাঠে ধান কাটতে বলে তার স্বামী। কিছুটা ধান কেটে তার শরীর খারাপ লাগায় বাড়ি চলে যায়। এরপরেই স্বামী বাড়িতে গিয়ে মুখের মধ্যে গামছা গুঁজে বেধরক মারধর করে। এরপর গরু বাঁধার রশি দিয়ে বাড়ি সংলগ্ন আম গাছে ঝুলিয়ে দেয় বলে অভিযোগ। এই প্রসঙ্গে অভিযুক্ত স্বামী কেশর লাল সরকার বলেন, ‘গতকাল আমার স্ত্রীর সঙ্গে ধান কাটা নিয়ে ঝগড়া হয়েছিল। সেই কারণে আমি মারধর দেই। কিন্তু আমার স্ত্রীকে খুন করিনি ও নিজেই আত্মহত্যা করেছে। যদিও ময়নাতদন্তের চিকিৎসকের বক্তব্য, ‘শরীরের একাধিক জায়গায় ক্ষতের চিহ্ন রয়েছে।’ ওই গৃহবধূকে খুন করা হয়েছে বলে প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান।
জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পর মৃত্যুর আসল কারণ জানা যাবে। তবে মৃত গৃহবধূর পরিবারের তরফ থেকে স্বামী সহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়েছে। ইটাহার থানার পুলিশ আধিকারিক বলেন, শরীরের একাধিক জায়গায় ক্ষতের চিহ্ন রয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে। অভিযুক্তরা পলাতক।