অমিতকুমার রায়, হলদিবাড়ি: আর ক’দিন বাদেই পুরোদমে শুরু হবে টমেটো ও লংকার মরশুম। মরশুম শুরু হতে চললেও আজও তালাবন্ধ অবস্থায় পড়ে রয়েছে কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হলদিবাড়ি পাইকারি সবজি বাজার। প্রশাসনিক তৎপরতার অভাবে চার বছরের অধিক সময় অতিক্রান্ত হলেও বাজারটি চালু করা সম্ভব হয়নি। বণ্টন হয়নি একটিও স্টল। দীর্ঘদিন ধরে পড়ে থাকার ফলে নষ্ট হতে বসেছে কৃষকদের স্বার্থে নির্মিত পুরো বাজারটি। চুরি হয়ে যাচ্ছে মূল্যবান বিদ্যুতের যন্ত্রাংশ।
অন্যদিকে বাজারটি চালু না হওয়ার ফলে বিগত বছরের মতো এ বছরও হলদিবাড়ি শহরের বাজার চত্বরে বসবে টমেটো ও লংকার পাইকারি বাজার। যানজটের দুর্ভোগে পড়তে হবে বাজারে আসা সাধারণ মানুষ থেকে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের। হলদিবাড়ি শহরের উপকণ্ঠে কৃষি ফার্মের জমিতে তৈরি করা হয়েছে ওই বাজার। নিয়ন্ত্রিত বাজার কমিটির তত্ত্বাবধানে ২০১৮ সালে গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন তহবিল থেকে প্রায় ১৪ কোটি টাকা ব্যয়ে এর নির্মাণকাজ শুরু হয়। বাজারটি ১২টি ব্লকে ভাগ করে মোট ৬৪টি ছোট-বড় স্টল তৈরি করা হয়েছে। পানীয় জল, শৌচাগার থেকে বিদ্যুৎ পরিষেবা রয়েছে এই বাজারে।
স্পেশাল ল্যান্ড অ্যাকুইজিশন অনুযায়ী নির্ধারিত সেলামি ও স্টলের আকাশচুম্বী ভাড়া নিয়ে ব্যবসায়ীদের আপত্তিতে বাজারটি চালু নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে বলে দাবি ব্লক প্রশাসনের। ব্যবসায়ীরা সেলামি বাবদ টাকা দিতে সম্মত হলেও মাসিক ভাড়া দিতে আপত্তি রয়েছে। অল ইন্ডিয়া কিষান ও খেতমজুর সংগঠনের হলদিবাড়ি ব্লক কমিটির সম্পাদক সাত্তার সরকার বলেন, ‘বর্তমান রাজ্য সরকার কৃষক দরদের নামে কৃষকদের সর্বনাশ করছে।’ বিজেপির দক্ষিণ মণ্ডল সভাপতি দীনবন্ধু রায় বলেন, ‘উন্নয়নের নামে সরকারি অর্থের অপচয় করে তোলামূলের পকেট ভরছে।’ ফরওয়ার্ড ব্লকের লোকাল কমিটির সম্পাদক কমলকুমার রায় বলেন, ‘পরিষেবা নয়, উন্নয়নের নামে বড় বড় অট্টালিকা ও ইমারত তৈরি করা হল তৃণমূল সরকারের মূল লক্ষ্য।’ বাজারটি চালু করার বহু চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছে জেলা কৃষি বিপণন দপ্তর। তাই এই প্রসঙ্গে মুখ খুলতে নারাজ দপ্তরের আধিকারিকরা। হলদিবাড়ির বিডিও রেনজি লামো শেরপা ফোন না ধরায় তাঁর বক্তব্য মেলেনি।