খড়িবাড়ি: ভিসা ছাড়া ভারতে প্রবেশের দায়ে ভারত-নেপাল সীমান্তের পানিট্যাঙ্কিতে ধৃত পাকিস্তানি মহিলা কথা বলছেন ঝরঝরে বাংলায়! গতকাল শায়েস্তা হানিফ নামের ৬৩ বছরের ওই মহিলাকে তাঁর ১২ বছরের ছেলেকে সহ গ্রেপ্তার করা হয়। ধৃতরা পাকিস্তানের করাচির বাসিন্দা। খড়িবাড়ি পুলিশ বৃহস্পতিবার দুপুরে তাঁকে শিলিগুড়ি মহকুমা আদালতে তুলেছে।
তবে করাচির বাসিন্দা পাকিস্তানি মহিলার বিশুদ্ধ বাংলায় কথা বলা দেখে তাজ্জ্বব তদন্তকারী আধিকারিকরা। এদিন আদালতে যাওয়ার পথে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে পরিস্কার বাংলায় জবাব দেন তিনি। শায়েস্তা হানিফ জানান, আদতে তিনি ভারতেরই মেয়ে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশ জানতে পেরেছে, শায়েস্তা হানিফ একসময় আসামের শিলচরের থাকতেন। পাকিস্তানের করাচির বাসিন্দা মহম্মদ হানিফের সঙ্গে মুম্বইয়ে তাঁর পরিচয় হয়। তারপরই প্রেম ও বিয়ে হয়। বিয়ের পর ধর্মান্তরিত হয়ে কিছুদিন পাকিস্তানে থাকার পর হানিফের সঙ্গে কর্মসূত্রে সৌদি আরবের জেড্ডায় চলে যান তিনি। হানিফ সৌদি আরবে স্বর্ণ অলঙ্কার শিল্পী হিসেবে কাজ করতেন। কলকাতার সোদপুরে তার ছোট বোন থাকেন। পুলিশ ও গোয়েন্দা সূত্রে জানা যায়, গত ৮ নভেম্বর ওই পাকিস্তানি মহিলা নিজের ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে সৌদি আরব থেকে বিমানে দিল্লি হয়ে নেপালের কাঠমান্ডুতে পৌঁছন। গতকাল সকালে ছেলেকে নিয়ে নেপালের কাঁকরভিটা দিয়ে পায়ে হেঁটে সীমান্তের মেচি সেতু পেরিয়ে ভারতের পানিট্যাঙ্কিতে প্রবেশের সময় এসএসবি জওয়ানরা তাঁকে আটক করে।
এসএসবি সূত্রে জানা যায়, তাদের কাছে পাসপোর্ট ও নেপালের ভিসা ছিল। কিন্তু ভারতের ভিসা না থাকায় ধৃত পাকিস্তানি মা ও ছেলেকে খড়িবাড়ি পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। তল্লাশিতে তাদের কাছ থেকে ভারত, নেপাল সহ বিভিন্ন দেশের লক্ষাধিক টাকা পাওয়া গিয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে ধৃতদের মধ্য মহিলাকে শিলিগুড়ি মহকুমা আদালতে ও নাবালক ছেলেকে দার্জিলিং জুভেনাইল আদালতে পাঠানো হয়। এদিন খড়িবাড়ি থানা থেকে আদালতে যাওয়ার সময় ওই পাকিস্তানি মহিলা সাংবাদিকদের সঙ্গে পরিষ্কার বাংলায় বলেন, বেড়াতে এসছি। তবে ভারতের ভিসার জন্য আবেদন করেছিলাম কিন্তু পাইনি। এখানে আমার বোনের বাড়িত রয়েছে কলকাতায়। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে তদন্তের স্বার্থে আদালতে সাতদিনের পুলিশি হেফাজতে নেওয়ার জন্য বিচারকের কাছে আবেদন জানান হয়েছে। পাশাপাশি ওই মহিলা সত্য কথা বলছেন কিনা তার তদন্তে নেমেছে খড়িবাড়ি থানার পুলিশ।