আসানসোলঃ এক মহিলা রোগীর এইচআইভি পরীক্ষার রিপোর্ট ভুল। রিপোর্ট পজিটিভ আসায় চিকিৎসা না করেই ছুটি দিয়ে দিল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এমনই অভিযোগ উঠেছে আসানসোল জেলা হাসপাতালের বিরুদ্ধে। হাসপাতাল থেকে দেওয়া মহিলার ডিসচার্জ সার্টিফিকেটে এইচআইভি পজিটিভ উল্লেখ থাকায় বিপাকে পড়ে যায় রোগী ও তার পরিবার। পরবর্তীতে ফের আরও একবার মহিলার এই মারণরোগের পরীক্ষা করা হলে তাতে রিপোর্ট নেগেটিভ আসে বলে খবর। এই ঘটনায় আসানসোল হাসপাতালের বিরুদ্ধে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারীকের কাছে কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগ এনেছেন রোগীনির পরিবার।
জানা গিয়েছে, গত ২৫ অগাস্ট পশ্চিম বর্ধমান জেলার আসানসোলের সালানপুর ব্লকের এক মহিলার রক্ত পরীক্ষায় এইচআইভি পজিটিভ রিপোর্ট আসে আসানসোল জেলা হাসপাতালে। এরপরই রোগীনিকে ছুটি দিয়ে দেয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ডিসচার্জ সার্টিফিকেটেও উল্লেখ করা হয় মহিলা আইচআইভি আক্রান্ত। রোগীর পরিবারের অভিযোগ, রিপোর্টে এইচআইভি পজিটিভ থাকায় জোর করে স্বেচ্ছায় ছুটি নিতে বাধ্য করা হয় হাসপাতাল থেকে।
এরপরই সেই মহিলা রোগীকে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয় কুলটির একটি বেসরকারি হাসপাতালে। ডিসচার্জ সার্টিফিকেটে এইচআইভি পজিটিভ লেখা থাকায় তারাও চিকিৎসা করতে অস্বীকার করে। ফলে বাধ্য হয়ে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় ঝাড়খণ্ডের রাঁচির রিমস হাসপাতালে। সেখানে ফের মহিলার এইচ আইভি পরীক্ষা করা হয়। সেখানকার রিপোর্টে নেগেটিভ লিখে দেওয়া হয়।
গোটা বিষয়টি নিয়ে রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তরে ঐ মহিলার ভাই একটি অভিযোগ দায়ের করেন। একইভাবে অভিযোগ করা হয়, কলকাতার স্বাস্থ্য কমিশনের চেয়ারম্যান থেকে পশ্চিম বর্ধমানের জেলাশাসক, জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক পর্যন্ত একাধিক আধিকারিককে। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ডাঃ ইউনুস খান বলেন, ‘জেলা হাসপাতালের সুপারের নেতৃত্বে ৩ সদস্যের এক কমিটি তৈরি করা হয়েছে। অভিযোগের ভিত্তিতে সব অভিযুক্তদের ডেকে তাদের বক্তব্য শোনা হবে। পুরো ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এই প্রসঙ্গে আসানসোল জেলা হাসপাতালের সুপার ডাঃ নিখিল চন্দ্র দাস বলেন, এই ঘটনায় কমিটি গঠন করা হয়েছে। চিকিৎসক বা নার্স মহিলার চিকিৎসার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তাদের বক্তব্য নেওয়া হয়েছে। প্রত্যেকের লিখিত বক্তব্য পাওয়ার পর পুরো রিপোর্টটি সিএমওএইচের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। তিনি আরও বলেন, ‘যা ঘটেছে তা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। যেহেতু ঘটনার তদন্ত চলছে তাই এ নিয়ে আমি আর এর বাইরে কোন মন্তব্য করতে পারব না।’