গঙ্গারামপুর: অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় জেলা সফরে আসার আগে চাকরি দেওয়ার নাম করে তপন ব্লক তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি অনাদি লাহিড়ির বিরুদ্ধে টাকা নেওয়ার একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছিল। এবার তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক গৌড়বঙ্গ ছাড়তে না ছাড়তেই জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের কাছে জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষের বিরুদ্ধে চাকরির নামে টাকা নেওয়ার লিখিত অভিযোগ জমা পড়ল। শুধু জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষের বিরুদ্ধেই নয়, গঙ্গারামপুরের তৃণমূল ব্লক সভাপতির ভাইয়ের বিরুদ্ধেও একইভাবে অপর একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। যদিও ভাইরাল ভিডিওর সত্যতা যাচাই করেনি উত্তরবঙ্গ সংবাদ। স্বাভাবিক ভাবে এ নিয়ে তৃণমূলের অন্দরে চাপা ক্ষোভ তৈরি হয়েছে।
কুশমণ্ডি ব্লক কিষান খেত মজদুরের ব্লক সভাপতি আসরফ আলির একটি লেটার প্যাডে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে অভিযোগ জানানো হয়েছে, মফিজউদ্দিন মিয়াঁ যখন জেলা কিষান খেত মজদুর তৃণমূলের সভাপতি ছিলেন, তখন কুশমণ্ডি ব্লক কিষান খেত মজদুর সভাপতি নির্বাচিত হন আসরফ আলি। সে সময় থেকে আসরফের সঙ্গে মফিজউদ্দিন মিয়াঁর সম্পর্ক ভালো হয়। অভিযোগ, ২০১৭ সালে আসরাফের ছেলে ও ভাইজির চাকরি দেবার নামে ধাপে ধাপে ১১ লক্ষ টাকা নেন। সেই টাকা ফেরত পাওয়ার জন্য বারবার চাইতে গেলে জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ আজকাল করে বেশ কয়েক বছর পার করে দিয়েছেন।
তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে এমনই অভিযোগ করার পাশাপাশি প্রতিলিপি জেলা সভাপতি মৃণাল সরকার ও জেলা তৃণমূল চেয়ারম্যান নিখিল সিংহরায়ের কাছেও দেওয়া হয়েছে।
কুশমণ্ডি ব্লক কিষান খেত মজদুরের ব্লক সভাপতি আসরফ আলির সঙ্গে মফিজউদ্দিন মিঁয়ার বিরুদ্ধে ওই একই রকমের অভিযোগ করেছেন বংশীহারী ব্লকের উমা সরকার নামে সংগঠনের এক মহিলা নেত্রী। উমা সরকারের অভিযোগ, ‘চাকরি করে দেওয়ার নাম করে প্রায় ৪ লক্ষ টাকা নিয়েছে মফিজউদ্দিন। সেই টাকা ফেরত চাইতে গেলে বিভিন্নভাবে ঘোরানো হচ্ছে। টাকা ফেরত পাওয়ার জন্য অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায় সহ জেলা তৃণমূলের সভাপতির কাছে লিখিত অভিযোগ করেছি।’
পাশাপাশি, গঙ্গারামপুর ব্লক তৃণমূল সভাপতি সুশান্ত ভট্টাচার্যের ভাই শংকর ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে চাকরি দেওয়ার নামে টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। একটি ভিডিও বার্তায় বলা হয়েছে, চাকরি দেওয়ার নামে গঙ্গারামপুর ব্লক তৃণমূল সভাপতির ভাই এক ব্যক্তির কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন। চাকরি না হওয়ায় তাঁর কাছ থেকে টাকা ফেরত চাওয়া হলে তিনি বারবার ঘোরাচ্ছেন। এমনকি, সেই ব্যক্তিকে টাকা ফেরতের জন্য ১ লক্ষ টাকার চেক দেওয়া হয়। কিন্তু সেই চেকে টাকা নেই। যদিও এ বিষয়ে জেলা তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি মৃণাল সরকার বলেন, ‘লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি দলের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার।’
জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ মফিজউদ্দিন মিয়াঁ বলেন, ‘উমা সরকারকে আমি চিনি না। আসরাফ আলি কুশমণ্ডি ব্লক কিষান খেত মজদুরের সভাপতি ছিলেন সেই সুবাদে চিনি। কিন্তু আমার বিরুদ্ধে যে সব অভিযোগ করা হচ্ছে সব মিথ্যে।’ মফিজউদ্দিন বলেন, ‘পঞ্চায়েতের টিকিট যাতে না পাই সেজন্য আমাদের দলের কয়েকজন নেতা কালিমালিপ্ত করার চেষ্টা করছেন।’