শিলিগুড়ি: ডিসেম্বর মাসে টানা গরমের জেরে ক্ষতির মুখে স্ট্রবেরি চাষ। বিগত বছরগুলিতে মাটিগাড়ার স্ট্রবেরি অসম ও সিকিমে রপ্তানি করা হয়েছিল। সেখানে এবছর জানুয়ারি মাস পর্যন্ত স্ট্রবেরির ফলন নেই। ডিসেম্বরজুড়ে গরমের জেরে অনেক স্ট্রবেরি গাছ নষ্ট হয়ে গিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে স্ট্রবেরি চাষ নিয়ে আশাহত চাষিরা।
মাটিগাড়ার-২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের পতিরামজোত এলাকায় মাতৃছায়া রোডে বেশ কয়েকবছর যাবত স্ট্রবেরি চাষ চলছে। গত দু’বছরে স্ট্রবেরি চাষে বৃদ্ধি হচ্ছিল। ২০২২ ও ২০২৩ সাল মিলিয়ে প্রায় পনেরো লক্ষ টাকার স্ট্রবেরি বিক্রি করা হয়েছিল। কিন্তু এবছর ডিসেম্বর মাস থেকে গরম আবহওয়ার জেরে চারা গাছের বৃদ্ধি হচ্ছিল না।
স্ট্রবেরি চাষি রমাপদ সরকারের কথায়, ‘তিন বিঘা জমিজুড়ে চারাগাছ লাগিয়েছিলাম। কিন্তু চরা গরমে এক বিঘার বেশি জমিতে লাগানো চারাগাছ মরে যায়। শত চেষ্টা করেও চারাগাছ বাঁচানো সম্ভব হয়নি।’
বিগত বছরে দেখা গিয়েছে, জানুয়ারি মাসে শিলিগুড়ির বাজার মাটিগাড়ার স্ট্রবেরিতে ছেয়ে রয়েছে। কিন্তু এবছর দেখা গেল, জমিতে হাতে গোনা কিছু স্ট্রবেরি পরে রয়েছে। যেগুলির ঠিক করে বৃদ্ধি হয়নি। সুইট চার্লি, উইন্টারডন, ফেস্টিভ্যাল, নেভিলার মতো নামা প্রজাতির চারা গাছ লাগানো হয়েছিল।
হরিন্দ্র সরকার নামে এক চাষির কথায়, ‘২ লক্ষ টাকার চারাগাছ ব্যাঙ্গালুরু, কলকাতা থেকে কিনে নিয়ে এসেছিলাম। তাছাড়া, সার, জলের ব্যবস্থা করতে আরও এক লক্ষ টাকা খরচ করা হয়েছিল। নভেম্বর মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে স্ট্রবেরির চারা লাগিয়ে সেগুলি বড় করে তোলার প্রক্রিয়া শুরু করেছিলাম। কিন্তু লাভের মুখ দেখা তো দূরস্ত, পুরোটাই লোকসান হয়ে গিয়েছে। এবছর আবহওয়া ভাল পাওয়া যাবে না বলে আভাস পেয়েছিলাম।’ যদিও ক্ষতির কথা চিন্তা না করে স্থানীয়রা চাষ শুরু করেন।
পতিরামজোত এলাকায় স্ট্রবেরি চাষ শুরু করেছিলেন চন্দন ব্যাপারী নামে এক ব্যক্তি। কিন্তু আবহওয়ার তারতম্যের কারণে প্রায় পাঁচ বছর আগে তিনি চাষ বন্ধ করে দেন। তিনি জানান, এই এলাকায় আবহওয়া পরিবর্তন হওয়ায়, স্ট্রবেরি চাষ আগামী দিনে আরও ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে।