রিমি শীল, কলকাতা: আরজি করের ঘটনায় পথে নেমে প্রতিবাদে প্রথম থেকেই সক্রিয় হতে দেখা গিয়েছে সিপিএমকে (CPM)। এই আন্দোলনকে দীর্ঘায়িত করতে চাইছেন আলিমুদ্দিনের কর্তারা। পুজোর পরেও যাতে আরজি করের ঘটনার (RG Kar protest) প্রতিবাদ চলতে থাকে, সেই পরিকল্পনাই এখন নিচ্ছেন তাঁরা। সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই লোকাল কমিটি, এরিয়া কমিটি, জেলা কমিটিগুলিকে রাজ্যের শীর্ষ নেতৃত্বের তরফে বার্তা দেওয়া হয়েছে, যাতে সাংগঠনিকভাবে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই আন্দোলনকে বুথস্তর থেকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায়। শুধুমাত্র শহরাঞ্চলে সীমাবদ্ধ থাকলেই হবে না, প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলেও সংগঠনকে মজবুত করে আন্দোলন চালিয়ে যেতে হবে।
রাজনৈতিক মহলের মতে, সিপিএম নেতারা আন্দোলনকে দীর্ঘায়িত করতে চাইছেন। তাদের লক্ষ্য ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচন। ততদিন পর্যন্ত এই ইস্যুকে হাতছাড়া করলে চলবে না। শুধু নির্যাতিতার হয়ে প্রতিবাদ নয়, এই আন্দোলনের মাধ্যমে যাতে নির্বাচনি সুবিধাও ঘরে তোলা যায়, সেই পথেই পরিকল্পনা নিচ্ছেন সিপিএম নেতারা। পুজোর মরশুমেও আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। কোন গতিপথে তা এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে, সেই বিষয়ে আলোচনামাফিক এগোনো হবে। পুজো কাটলেও ধারাবাহিকভাবে এই ইস্যুকে ২০২৬ পর্যন্ত জিইয়ে রাখতে চাইছেন তাঁরা।
রাজনৈতিক পতাকাবিহীন নাগরিক আন্দোলনের ছত্রচ্ছায়ায় ইতিমধ্যেই বাম মনোভাবাপন্ন, বামপন্থীরা ক্রমাগত আন্দোলনে অংশ নিয়ে চলেছেন। যাতে আন্দোলনে দলীয় রাজনীতির রং না লাগে, সেই বিষয়টিতে বিশেষভাবে দৃষ্টিপাত করা হয়েছে। রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বিজেপি, কংগ্রেসের তুলনায় নাগরিক সমাজের আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় মিশে গিয়ে আরজি কর আন্দোলনকে উজ্জীবিত রাখছেন বাম নেতারা।
ঘরোয়া আলোচনায় সিপিএমের অন্দরে চর্চা, শহরাঞ্চল বাদ দিলে গ্রামাঞ্চলে সঠিক নেতৃত্বের অভাবে আন্দোলনের রেশ দীর্ঘদিন ধরে রাখা কঠিন। অনেক ক্ষেত্রেই স্বাস্থ্য, শিক্ষা, জমি সহ নানাক্ষেত্রে দুর্নীতির বিস্তর অভিযোগ থাকলেও সংগঠনের হাল যথাযথ না হওয়ায় আন্দোলনকে সক্রিয় করে তোলা দুষ্কর হয়ে দাঁড়িয়েছে। শাসকদলের কাছে আরজি করের ঘটনা মাথাব্যথার সমান। তাই এই সুযোগ হাতছাড়া করলে চলবে না। সম্প্রতি দলের রাজ্য নেতাদের মধ্যে বৈঠকেও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। জানা গিয়েছে, পুজোতেও ধারাবাহিকভাবে রাজ্যজুড়ে প্রতিবাদে মিটিং-মিছিল হবে। সমস্ত ক্ষেত্রে দলীয় পতাকার নীচে নয়, বরং বিভিন্ন নাগরিক সমাজের সংগঠনের আড়ালে কর্মসূচি নেওয়া হবে। পুজোর পরেও যাতে আন্দোলনের রাশ তাদের হাতে থাকে, সেই চেষ্টাতেই এখন অনড় সিপিএম। বর্তমানে রাজ্য কমিটির বৈঠক চলছে। সেখানেও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে সূত্রের খবর।