রণজিৎ ঘোষ, শিলিগুড়ি: উত্তরবঙ্গের চা শ্রমিকদের (Tea Garden Workers) ন্যূনতম দৈনিক মজুরি নির্ধারণ করতে পারেনি উপদেষ্টা কমিটি। সে কারণে এবার বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নিল শ্রম দপ্তর। শনিবার শিলিগুড়িতে শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটক বলেছেন, ‘বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠনের বিষয়ে মালিক ও শ্রমিকপক্ষ একমত হয়েছে। দ্রুত রাজ্য সরকার এই কমিটি গঠন করবে। তাদের রিপোর্ট আসার পর ফের শ্রমিক ও মালিকপক্ষকে নিয়ে বৈঠক হবে।’ রাজ্য সরকার দ্রুত ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণে আগ্রহী বলে শ্রমমন্ত্রী জানিয়েছেন।
উত্তরের চা শ্রমিকদের মজুরি নিয়ে দীর্ঘদিনের অভিযোগ রয়েছে। শ্রমিকরা যে দৈনিক মজুরি পান তা দিয়ে সংসার চালানো সম্ভব নয় বলে শ্রমিক সংগঠনগুলির দাবি। তারা দীর্ঘদিন ধরে ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণের দাবি জানিয়ে আসছে। ২০১৫ সালে উত্তরকন্যায় এক বৈঠকে ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণে উপদেষ্টা কমিটি গড়া হয়। মাঝে ১০ বছর কেটে গিয়েছে। শ্রমমন্ত্রীর দাবি অনুযায়ী, এই কমিটি এখনও পর্যন্ত ১৯টি বৈঠক করেছে। কিন্তু তারপরও শ্রমিক এবং মালিকপক্ষ ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারেনি।
শনিবার শিলিগুড়ির স্টেট গেস্টহাউসে ন্যূনতম মজুরি উপদেষ্টা কমিটির বৈঠক বসে। বৈঠকে শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটক, রাজ্যসভার সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়াও এই কমিটির চেয়ারম্যান রাজ্য শ্রম দপ্তরের প্রধান সচিব, শ্রম কমিশনার উপস্থিত ছিলেন। সেই সঙ্গে হাজির ছিলেন মালিক এবং শ্রমিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা। তবে দু’ঘণ্টা আলোচনার পরও ন্যূনতম মজুরি নিয়ে কোনও সমাধান সূত্র বের হয়নি।
বৈঠক শেষে শ্রমমন্ত্রী বলেন, ‘এদিনের বৈঠকে শ্রমিক এবং মালিকপক্ষের বক্তব্য শোনা হয়েছে। তবে, চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছানো যায়নি। এতগুলি বৈঠকের পরও শ্রমিক এবং মালিকপক্ষ একটা নির্দিষ্ট মজুরিতে পৌঁছাতে পারেনি। পরিস্থিতি বুঝে আমরা বিশেষজ্ঞ কমিটি গড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এই কমিটিতে কারা থাকবেন, সেটা স্টেট প্রোডাক্টিভিটি কাউন্সিল ঠিক করে দেবে। তবে, আমরা চাই, এই কমিটি একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সমীক্ষার কাজ করে রিপোর্ট দিক।’
চা শ্রমিকদের জয়েন্ট ফোরামের আহ্বায়ক জিয়াউল আলমের বক্তব্য, ‘কেরল, ‘কর্ণাটক, তামিলনাডুতে ন্যূনতম মজুরি জারি হয়েছে। কিন্তু আমাদের রাজ্যে এত বছরেও ন্যূনতম মজুরি চুক্তি করা গেল না। এখন সমস্তটা রাজ্য সরকারের হাতে।’ মালিকপক্ষের কোনও প্রতিনিধি এদিন বৈঠক শেষে কথা বলতে রাজি হননি। বিকেলে টেলিফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও কেউ ফোন ধরেননি।