রণজিৎ ঘোষ, শিলিগুড়ি : পাহাড়ের চা বাগান শ্রমিকদের পুজো বোনাসের নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ফার্স্ট ফ্লাশের চা পাতা তুলতে দেওয়া হবে না। এমনই হুঁশিয়ারি দিল ইন্ডিয়ান গোর্খা জনশক্তি ফ্রন্ট। সংগঠনের সভাপতি অজয় এডওয়ার্ড বলেছেন, ‘পুজো বোনাসের এখনও নিষ্পত্তি হয়নি। শ্রম দপ্তর আগে সেই সমস্যা মেটাক। তারপরই পাহাড়ের বাগানে চা পাতা তুলতে দেওয়া হবে।’ শিলিগুড়ির অতিরিক্ত শ্রম অধিকর্তা শ্যামল দত্তর বক্তব্য, ‘পাহাড়ের চা বাগানের বোনাস নিয়ে আমি কিছু বলতে পারব না। যা বলার দপ্তরের মন্ত্রী বলবেন।’
পাহাড়ের চা শ্রমিকদের পুজো বোনাস নিয়ে সমস্যা এখনও জিইয়ে রয়েছে। কয়েক দফার বৈঠকের পরও মালিক এবং শ্রমিকপক্ষের রফা না হওয়ায় শ্রম দপ্তর ১৬ শতাংশ হারে বোনাস দেওয়ার অ্যাডভাইজারি দিয়েছিল। সেই নির্দেশে বাগানগুলি শ্রমিকদের অ্যাকাউন্টে বোনাস দিয়ে দিয়েছে। কিন্তু শ্রমিক সংগঠনগুলির দাবি, ২০ শতাংশ হারেই বোনাস দিতে হবে। পুজোর পরেও রাজ্যের তরফে একবার বৈঠক করা হয়েছে, কিন্তু সমস্যা মেটেনি।
এই অবস্থায় পাহাড়ে ২৭ ফেব্রুয়ারি থেকে ফার্স্ট ফ্লাশের চা পাতা তোলার নির্দেশিকা দিয়েছে ভারতীয় চা পর্ষদ। তার আগে ৮ ফেব্রুয়ারি মিরিকে অজয়ের পার্টি ইন্ডিয়ান গোর্খা জনশক্তি ফ্রন্টের তরফে মিছিলের ডাক দেওয়া হয়েছে। যে তিনটি দাবিকে সামনে রাখা হয়েছে তার প্রথমেই রয়েছে, ফার্স্ট ফ্লাশের চা তোলার আগে ২০ শতাংশ হারে পুজোর বোনাস মেটাতে হবে। দ্বিতীয়ত, চা বাগানের শ্রমিকদের পাঁচ ডেসিমাল জমির পাট্টা দেওয়া চলবে না। শ্রমিকদের দখলে থাকা পুরো জমির পাট্টা দিতে হবে। তৃতীয়ত, চা শিল্পে দ্রুত ন্যূনতম মজুরি চুক্তি কার্যকর করতে হবে।
ইন্ডিয়ান গোর্খা জনশক্তি ফ্রন্টের নেতা মহেন্দ্র ছেত্রী বলেন, ‘চা শ্রমিকদের সঙ্গে প্রতারণা আমরা মেনে নেব না। আগে শ্রমিকদের দাবি মেটাতে হবে, তারপরই চা বাগানে কাজ হবে।’
পাহাড়ের শাসক ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার মুখপাত্র শক্তিপ্রসাদ শর্মার বক্তব্য, ‘চা বাগান শ্রমিকদের ভুল বুঝিয়ে এই শিল্পে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করা হচ্ছে। এটা মেনে নেওয়া হবে না। শ্রমিকরাও অজয় এডওয়ার্ডদের চালাকি বুঝে গিয়েছেন। বাগান খুললে সব শ্রমিকই কাজে যাবেন।’