শুভজিৎ চৌধুরী, ইসলামপুর: দীর্ঘদিন ধরে নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ থাকার জেরে ধুঁকছে ইসলামপুর গার্লস হাইস্কুল (Islampur Girls High School)। এই বিদ্যালয়ে ৪৪টি স্থায়ী শিক্ষকের পদ থাকলেও রয়েছেন মাত্র ১৪ জন (Teacher Crisis)। প্রতিবছর কয়েকশো পড়ুয়া ভর্তি হয় এখানে। এবার সেই সংখ্যা তিনশোর কাছাকাছি। সবমিলিয়ে ২২০০ পড়ুয়া রয়েছে। ফলে এত কম সংখ্যক শিক্ষক নিয়ে প্রতিটি ক্লাসের সব বিভাগের সমস্ত বিষয়ের নিয়মিত ক্লাস নেওয়া প্রায় অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে।
জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক মুরারিমোহন মণ্ডল আশ্বাস দিয়েছেন, ‘যেসব স্কুলে শিক্ষক সংখ্যা কম, সেখানকার জন্য শিক্ষক চাওয়া হয়েছে। নতুন নিয়োগ হলে সব বিদ্যালয়েই দেওয়া হবে।’ অভিভাবকদের প্রশ্ন, ‘তাহলে কি নতুন করে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত হবে পঠনপাঠন?’
এই পরিস্থিতিতে কিছুটা স্বস্তি দিচ্ছে প্রাক্তনীদের উদ্যোগ। নিজেদের প্রিয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এহেন সমস্যা মেটাতে তাঁরা বিনা পারিশ্রমিকে স্কুলে পড়াচ্ছেন। শিক্ষক প্রশিক্ষণ নেওয়া ২৩ প্রাক্তন পড়ুয়া ক্লাস নিচ্ছেন নিয়মিত। শিবেশ দেবনাথের মেয়ে একাদশের পড়ুয়া। বলছিলেন, ‘এভাবে বেশিদিন চলতে পারে না। গার্লস স্কুলে শিক্ষক সংখ্যা একেবারেই কম। প্রাক্তনীরা পড়াচ্ছেন, সেটা অবশ্যই প্রশংসাযোগ্য। তবে পঠনপাঠনের মান বাড়াতে প্রয়োজন স্থায়ী শিক্ষক নিয়োগ।’
স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রত্যেক ক্লাসে রয়েছে ৩টি করে বিভাগ। সমস্ত বিভাগ মিলিয়ে প্রত্যেক পিরিয়ডে ২২টি করে ক্লাস হয়। স্বাভাবিকভাবেই ১৪ জন স্থায়ী, ১ জন করে অস্থায়ী এবং কম্পিউটার বিষয়ক মিলিয়ে ১৬ জন শিক্ষিকার পক্ষে সব ক্লাস নেওয়া সম্ভব হত না। আপাতত সেই সমস্যা এড়ানো গিয়েছে প্রাক্তনীদের সহযোগিতায়। তবে স্থায়ী সমাধান চাইছে সবপক্ষ।
ইসলামপুর গার্লস হাইস্কুলের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষিকা মনীষা সাহার কথায়, ‘যত তাড়াতাড়ি সম্ভব স্কুলে শিক্ষক নিয়োগ করা জরুরি। প্রাক্তন ছাত্রীরা সাহায্যের জন্য এগিয়ে না এলে এত পরিমাণ ছাত্রীদের পড়ানো অসম্ভব ছিল।’ তিনি জানালেন, কয়েকবছর আগে ম্যানেজমেন্ট কমিটি এবং অভিভাবকদের সঙ্গে বৈঠকে প্রাক্তনীদের পড়ানোর বিষয়টি ঠিক হয়েছিল। এখন তাঁরাই ভরসা।