আলিপুরদুয়ার: গত ২ মে থেকে রাজ্য সরকারের আওতাধীন সমস্ত সরকারি স্কুল গুলোয় গরমের ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। আপাতত গরমের ছুটি বেশ আয়েশেই কাটাচ্ছেন স্কুল পড়ুয়া থেকে অনেক শিক্ষক শিক্ষিকারা। তবে কোনও শিক্ষিকদের আবার এই ছুটির মধ্যেই ঘনঘন ফোন ধরতে হচ্ছে পড়ুয়াদের অভিভাবকদের। ছুটি কাটানোর সময় এই রকম ফোন পেয়ে কিছুটা ‘বিরক্ত’ হয়ে পড়ছেন অনেকেই। আর অভিভাবকদের জিজ্ঞাসার কারণটাও যদিও বড়ই। ‘স্কুল কবে খুলবে?’
মঙ্গলবার থেকে ছুটি শুরু হয়েছে। তবে এই ছুটি শেষ হবে কবে সেই নিয়ে কিন্তু থাকছে অনেক প্রশ্ন। কেননা স্কুল কর্তৃপক্ষর কাছে স্কুল বন্ধ নিয়ে যে নোটিশ এসেছে সেখানে ছুটি শুরুর তারিখ থাকলে, শেষ নিয়ে কোনও তারিখ দেওয়া নেই। ওই নোটিশে বলা রয়েছে নতুন নোটিশ না দেওয়া পর্যন্ত এই ছুটি চলবে। এবিষয়ে জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক(মাধ্যমিক) সুজিত সরকার যেমন বলেন, ‘সরকারি নির্দেশিকায় শুধু ছুটির তারিখ জানানো হয়েছে। সেটা স্কুল গুলোকে জানানো হয়েছে। এরপরে শেষ নিয়ে কোনও নির্দেশিকা আসলে সেটাও স্কুল কর্তৃপক্ষদের জানিয়ে দেওয়া হবে।’ তাহলে এবছর ছুটি কতদিন? সেই প্রশ্ন ঘুরছে রাজ্যর অন্য জায়গার মত আলিপুরদুয়ারেও। ছুটি নিয়ে ধোঁয়াশায় থাকা পড়ুয়া ও অভিভাবকরা স্কুলের দ্বারস্থ হচ্ছে বিষয়টি নিয়ে খোঁজ করতে। বিভিন্ন স্কুল শিক্ষকরাও এমন অভিজ্ঞতাই ভাগ করে নিচ্ছেন। শিক্ষকরা জানান, বিগত বছর গুলোর হিসেব বলছে গরমের ছুটি সাধারণত ২০-২৫ দিনের মধ্যেই হয় এবং অন্যান্য বছর পরিষ্কার ছুটি শুরু ও শেষের তারিখ নির্দিষ্ট করে বলা থাকে।
এবছর কেন এই রকম ব্যতিক্রমি নির্দেশ সেই নিয়েই উঠছে প্রশ্ন। জেলা শহরের পূর্ব শান্তিনগর জিএসএফপির প্রধান শিক্ষক সাত্যেন্দ্র নাথ সাহার এই নিয়ে বক্তব্য, ‘গরমের ছুটি কবে শেষ হবে সেটা আমাদের জানা নেই।আর পড়ুয়াদের অভিভাবকরা অনেকেই ফোন করে সেটাই জিজ্ঞেস করছে। এখন অভিভাবকরা অনেক বেশি সচেতন এই নিয়ে। তবে আমাদের কাছে তো এটার কোনও উত্তর নেই। ছুটি নিয়ে নির্দেশিকার অপেক্ষায় আমরাও। ‘আলিপুরদুয়ার শহরের ম্যাকউইলিয়াম হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক সুধাংশু বিশ্বাস আবার জানালেন ফোনে যোগাযোগের পাশাপাশি অনেকে আবার স্কুলে চলে আসছে ছুটি শেষের খোঁজ নিতে। বিশেষজ্ঞ মহল মনে করছে, মে মাসের শেষ সপ্তাহে গরমে ছুটি শেষ হয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলো খুলতে পারে, তবে গরম বেশি থাকলে জুন মাসে গিয়ে খুলতে পারে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলো।
অন্যদিকে, সরকারি নির্দেশিকায় গরমের ছুটি শুরু হলেও আলিপুরদুয়ারের মত জায়গাতেই অনেক বেসরকারি স্কুল এখনও খোলা রয়েছে,অনেক গুলো আবার সকালে করা হয়েছে। স্কুল কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে যখন গরম আরও বাড়বে তখন স্কুল ছুটি দেওয়া হবে গরমের জন্য। আপাতত ছুটি দেওয়ার মত পরিস্থিতি আসেনি। সরকারি স্কুল গুলো যখন বন্ধ, বেসরকারি স্কুল খোলা তখন সাধারণ অভিভাবকরা শাওয়াল করছেন সরকারি স্কুলের ছুটিতে স্থানীয় প্রশাসনের মতের গুরুত্ব দেওয়া হোক।এই রকম অবস্থায় অনেক সরকারি স্কুল আবার অনলাইনে পড়া চালানোর দিকে ঝুঁকতে চাইছেন।
আলিপুরদুয়ার নিউটাউন গার্লস হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা কুসুমিকা মৈত্র যেমন জানান, আরও দিন পনেরো আপাতত দেখা হবে। যদি স্কুল না খুলে তবে অনলাইনে ক্লাস করানো হবে পড়ুয়াদের। আপাতত ছাত্রীদের কয়েকদিন ছুটি উপভোগ করা উচিত বলে মত ওঁর। স্কুল খুলতে দেরি হলে অনলাইন ক্লাস করানো হবে জানান ফালাকাটা গার্লস হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা শিপ্রা সাহা রায়ও।