নীলাংশু চক্রবর্তী, উছলপুকুরি: সুটুঙ্গা নদীর কোল ঘেঁষে উছলপুকুরি গ্রাম পঞ্চায়েতের দেউতিরহাট বাজারটি অবস্থিত। সেখানে দিশারি ক্লাব ও পাঠাগার প্রাঙ্গণে এবছর দেখা যাবে দক্ষিণ ভারতের মন্দির! ওই মন্দিরের আদলে মণ্ডপ তৈরির কাজ চলছে সেখানে।
মেখলিগঞ্জ ব্লকের অন্যতম বড় বাজেটের এই পুজোটির বাজেট প্রায় ১০ লক্ষ টাকা ধরা হয়েছে। কৃষিনির্ভর এই জনপদটিতে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষ বসবাস করেন। গ্রামীণ এলাকার পুজো হলেও এখানকার প্যান্ডেল, আলোকসজ্জা, প্রতিমা বরাবরই নজর কাড়ে দর্শনার্থীদের। এবছর পুজোর ১২২তম বছর। পুজো কমিটির সভাপতি ধনঞ্জয় বর্মন জানালেন, এলাকাবাসীর দেওয়া চাঁদার ওপর নির্ভর করে পুজোর আয়োজন করা হয় প্রত্যেকবার। নটরাজের আদলে মূর্তি আনা হবে মাথাভাঙ্গা থেকে।শতাব্দীপ্রাচীন এই পুজোর সমস্ত আচার-অনুষ্ঠান নিষ্ঠাভরে পালন করা হয়। অষ্টমীতে বিশেষ ভোগের আয়োজন করা হয়। সন্ধিপুজোয় ১০৮টি প্রদীপ জ্বালিয়ে মায়ের কাছে পরিবারের মঙ্গলের জন্য প্রার্থনা করেন সকলেই। মাকে দেওয়া হয় ১০৮টি পদ্মফুল। অষ্টমীর ভোগে স্থানীয় এলাকায় উৎপাদিত সুগন্ধি চাল দিয়ে তৈরি পরমান্ন ঠাকুরকে নিবেদন করা হয়।
স্বর্গীয় খরগনাথ বর্মন এই পুজো প্রথম শুরু করেন। ক্লাবটির সদস্য সৌরভ মজুমদার বলেন, ‘এই এলাকায় একটিমাত্র পুজো হয়। নাহলে ঠাকুর দেখতে যেতে হত দূরে জামালদহ, রানিরহাট অথবা চ্যাংরাবান্ধায়।’ এবছর পুজো উপলক্ষ্যে ক্লাবের তরফে বিভিন্ন সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। পুজো কমিটির তরফে কানু বর্মন জানান, নবমীতে দুঃস্থদের বস্ত্র বিতরণ করা হবে। ১৪ অক্টোবর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান রয়েছে। সেদিন গায়িকা মাহি বিশ্বাস মঞ্চে থাকবেন।
ক্লাবের সদস্যরা ছাড়া স্থানীয়রাও হাত লাগিয়েছেন পুজোর কাজে। এলাকাবাসী কণিকা রায়, নীলিমা শর্মা, সুনীলকুমার মজুমদাররা সারাবছর এই পুজোর জন্য অপেক্ষা করেন।পুজো কমিটির কোষাধ্যক্ষ দেবরাজ দেবশর্মা জানান, গ্রামীণ এলাকায় ভালো পুজোর জন্য তাঁদের স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েতের তরফে বিশেষ পুরস্কার দেওয়া হয়েছিল। এবারও তাই সবাইকে তাঁদের ভাবনা দিয়ে চমকে দিতে চাইছে দিশারি ক্লাব ও পাঠাগার।