বীরপাড়া: পুজোয় চা শ্রমিকদের ১৯ শতাংশের কম বোনাস মানবে না গেরুয়া শ্রমিক সংগঠন ভারতীয় টি ওয়ার্কার্স ইউনিয়ন (বিটিডব্লিউইউ)। মঙ্গলবার বীরপাড়ায় সংগঠনটির নবম বার্ষিক সম্মেলনে একথা জানান বিজেপির জেলা সভাপতি তথা আলিপুরদুয়ারের সাংসদ মনোজ টিগ্গা। তাঁর কথায়, ‘গত বছর সর্বোচ্চ ১৯ শতাংশ হারে বোনাস পান শ্রমিকরা। এবছর তার চেয়ে বেশি হারে বোনাস আদায়ের চেষ্টা করা হবে। তবে ১৯ শতাংশের কম মানা হবে না।’
বোনাস নিয়ে প্রতি বছর চা শ্রমিক ও মালিকপক্ষে টানাপোড়েন চলে। গত বছর বোনাস নিয়ে অসন্তোষের জেরে বন্ধ হয়ে যায় বীরপাড়ার দলমোর, রামঝোরা ও কালচিনি ব্লকের দলসিংপাড়া চা বাগানগুলি। এবছর অনাবৃষ্টি, রোগপোকার আক্রমণজনিত কারণে উৎপাদনের হার অনেকটাই কম, দাবি মালিকপক্ষের সংগঠনগুলির। এদিকে, দোরগোড়ায় পুজো। এরই মধ্যে বোনাস নিয়ে ওই সংগঠনটির বার্তায় জল্পনা শুরু হয়েছে তরাই ডুয়ার্সের চা শ্রমিক মহলে। মনোজ অবশ্য বলেন, ‘বোনাস নিয়ে বাগান বন্ধের পুনরাবৃত্তি চাই না। প্রয়োজনে বোনাস নিয়ে বৈঠকের টেবিলে লড়াই হবে। কিন্তু কোনও মালিকপক্ষ যেন বাগান ছেড়ে চলে যাওয়ার সুযোগ না পায় সেদিকেও নজর রাখা হবে।’
বীরপাড়ার দুর্গাবাড়িতে আয়োজিত সম্মেলনে এদিন আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি এবং দার্জিলিংয়ের বিভিন্ন চা বাগানের প্রতিনিধিরা অংশ নেন। চা বাগানে বাস পরিষেবা, চিকিৎসা পরিষেবা চালু, শ্রমিকদের ছাতা সহ কাজের প্রয়োজনীয় নানা সামগ্রী পাওয়ার সুযোগসুবিধা ফের চালুর দাবিতে আন্দোলনের বার্তা দেওয়া হয়। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক রাজেশ বারলা বলেন, ‘আমরা বরাবরই শ্রমিকদের স্বার্থে লড়াই করি। পাহাড় এবং সমতলের ১৭০টি চা বাগানে আমাদের সংগঠন রয়েছে।’
আলিপুরদুয়ার জেলায় ৬৪টি চা বাগান রয়েছে। ভোটের ফল নির্ণায়ক চা শ্রমিকরাই। চা শ্রমিকরা যে বিজেপি থেকে মুখ ফিরিয়েছে, লোকসভা ভোটের পর ঘুরিয়ে মানছে গেরুয়া শিবির। এদিকে ভোটের টিকিট না পাওয়ায় বেঁকে বসেছেন জন বারলা। বিটিডব্লিউইউয়ের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ছিন্ন হয়েছে। বর্তমানে তিনি নতুন সংগঠন গড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
এরই মধ্যে হারানো মাটি ফিরে পেতে মরিয়া গেরুয়া শিবির। রাজনৈতিক মহলে জল্পনা, পুজো বোনাস নিয়ে আন্দোলন করে ঘুরে দাঁড়াতে চায় টিম গেরুয়া। মনোজ বলেন, ‘হয়তো বিটিডব্লিউইউ এতদিন সেভাবে আন্দোলন করতে পারেনি। অথবা করলেও তা নজরে পড়ার মতো ছিল না। তবে ন্যূনতম মজুরি চালু, শ্রমিকদের অবসরের বয়স বাড়ানো সহ নানা সুযোগসুবিধা ফের চালুর দাবিতে তীব্র আন্দোলন শুরু করা হবে।’
তাঁর আরও অভিযোগ, বসতভিটের পাট্টা দিয়ে চা শ্রমিকদের রিফিউজি করতে চাইছে শাসকদল। কারণ পাট্টার জমি হস্তান্তরিত হয় না। বাবার নামে পাট্টার জমিতে সন্তানের অধিকার থাকে না। তাই পাট্টার পরিবর্তে শ্রমিকদের জমির স্থায়ী মালিকানা দাবি করেছেন তিনি।