কুশমণ্ডি ও কালিয়াগঞ্জ: একদিকে রাজনীতি অন্যদিকে প্রশাসনিক পদ, তার উপর আবার সরকারি চাকরি। এতচাপ কি আর একজনের পক্ষে নেওয়া সম্ভব! তবে প্রথম দুটো জোরদার থাকলে শেষের কাজটা নিয়ে যে কেউ খুব একটা মাথা ঘামায় না, তা আরও একবার প্রমাণিত হল গভর্নমেন্ট ইংলিশ মিডিয়াম মডেল স্কুলের করণিক পদের এক কর্মীকে নিয়ে। তিনি অধিকাংশ দিন স্কুলে যান না, কিন্তু কোনও কথাই ওঠে না। এরপরেই উঠছে প্রশ্ন। তিনি যে শুধু কর্মী নন, একাধারে দোর্দণ্ডপ্রতাপ তৃণমূল নেতা, একইসঙ্গে কালিয়াগঞ্জ পুরসভার উপপুরপ্রধান পদে বহাল।
শনিবার গিয়ে দেখা গেল এদিনও স্কুলে আসেননি ঈশ্বর রজক। তবে অন্যদিনের মতো শনিবারও কালিয়াগঞ্জ পুরসভার উপপুরপ্রধানের চেয়ারে বসে থাকতে দেখা যায় তাঁকে। ‘আপনি স্কুলে যান না?’ প্রশ্ন শুনে সাদা টাওয়েল মোড়া চেয়ারে বসে এক দৃষ্টিতে খবরের কাগজ থেকে চোখ ঘোরালেন । তাঁর সাফাই, ‘আমি মাসে ১০ দিন স্কুলে যাই। এই ব্যাপারে এসডিও সব জানেন। আমি স্কুলের কাগজপত্রের কাজ বাড়িতে এনে করি। দীর্ঘদিন ধরেই এইভাবে কাজ করার আমার অভ্যাস আছে। তবে কর্মক্ষেত্রে কোনও ক্ষতি হলে অবশ্যই আমি প্রতিদিন স্কুলে যাব।’
অভিযোগ, এভাবেই কুশমণ্ডি ব্লকের কালিকামরা পঞ্চায়েতের পুনোট গ্রামে গভর্নমেন্ট ইংলিশ মিডিয়াম মডেল স্কুলের করণিকের কাজ টিকিয়ে রেখেছেন ঈশ্বর রজক। স্কুলে যে নিয়মিত যান না, সেকথা অকপটে স্বীকারও করেছেন ঈশ্বরবাবু।
এবিষয়ে এবিটিএ‘র কুশমণ্ডি জোনাল নেতা আবদুল জলিলের তীব্র প্রতিক্রিয়া, ‘নিয়মিত স্কুলে আসেন না, অথচ প্রতিমাসের বেতন তোলেন ঈশ্বরবাবু। কারণ তিনি তৃণমূলের নেতা। চাকরি না করে বেতন তোলা যায়, এর উদাহরণ তিনি। স্কুলে করণিকের চাকরির বেতন আবার পুরসভার উপপুরপ্রধান পদের সরকারি ভাতা কীভাবে তুলছেন এক ব্যক্তি? এটাও সম্ভব তৃণমূল বলেই।’
এমনকি করণিক স্কুলে নিয়মিত আসেন না একথা অস্বীকার করেননি ওই স্কুলের দায়িত্বে থাকা টিআইসি ওবায়দুর রহমান। তিনি বলেন, ‘আগামীদিনে নিয়মিত আসার জন্য বলব।’ এই প্রসঙ্গে গঙ্গারামপুরের এসডিও অভিষেক শুক্লার মন্তব্য, ‘আমি বিষয়টি খতিয়ে দেখছি।’ তৃণমূল যুব কংগ্রেসের জেলা সভাপতি অম্বরীশ সরকার এমন ঘটনা জানতে পেরে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, ‘বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখব। প্রয়োজনে ঈশ্বরবাবুর সঙ্গে কথাও বলব।’