সুভাষ বর্মন, শালকুমারহাট: জলদাপাড়া হোক পর্যটনের মডেল গ্রাম। দু’দিনের বিশেষ কর্মসূচি শেষ হওয়ার পর এমনটাই চাইছেন সাংবাদিক পড়ুয়ারা। রবিবার ফিল্ড স্টাডি ও সেমিনার অনুষ্ঠিত হয় জলদাপাড়া গ্রামেই। এই কর্মসূচির মূল উদ্যোক্তা বিধায়ক সুমন কাঞ্জিলাল আগামীতে যাবতীয় তথ্য সহ একটি প্রোজেক্ট রিপোর্ট তৈরি করে পর্যটন দপ্তরে পাঠাবেন বলে জানিয়েছেন।
শালকুমার-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের জলদাপাড়া গ্রামের নামেই জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের নাম। কিন্তু জলদাপাড়াকেন্দ্রিক পর্যটন মানে সবাই মাদারিহাটকেই চেনেন। কারণ, মাদারিহাটেই রয়েছে জলদাপাড়া প্রবেশের মূল গেট। তাই এতদিন জলদাপাড়া গ্রাম পর্যটনে পিছিয়ে ছিল। এখন নানাভাবে এই গ্রামের গুরুত্ব বাড়ছে। সম্প্রতি বিধায়ক এজন্য উদ্যোগী হন। দু’দিনের বিশেষ কর্মসূচিতে এই গ্রামে আসেন কলকাতার মহারাজা মণীন্দ্রচন্দ্র কলেজের সাংবাদিকতা ও গণজ্ঞাপন বিভাগের অধ্যাপক ও পড়ুয়ারা। তাঁরা শনিবার গ্রামের শিশুদের বস্ত্রদান করেন। রবিবার সকালে ফিল্ড স্টাডি করতে বাড়ি বাড়ি যান। দুপুরে স্থানীয় একটি রিসর্টে অনুষ্ঠিত হয় সেমিনার। ‘পরিবেশবান্ধব পর্যটনে জলদাপাড়া গ্রাম’ এই বিষয় নিয়েই সেমিনার হয়।
সাংবাদিক পড়ুয়া অর্কপ্রভ চক্রবর্তী বলেন, ‘জলদাপাড়া পর্যটনের মডেল গ্রাম হতে পারে। এই গ্রামের পিছিয়েপড়া মানুষ তাতে উন্নতির ছোঁয়া পাবেন। আমাদের সেটাই উদ্দেশ্য।’
মহারাজা মণীন্দ্রচন্দ্র কলেজের সাংবাদিকতা ও গণজ্ঞাপন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডঃ বিশ্বজিৎ দাসের কথায়, ‘ইন্টারনেটে ক্লিক করলে জলদাপাড়া পর্যটন বলতে মাদারিহাটকেই বোঝায়। যতদিন শালকুমারহাটের জলদাপাড়া গ্রাম ইন্টারনেটে না আসবে ততদিন পর্যটনকে সঠিক পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া যাবে না। জঙ্গল, বন্যপ্রাণীর পাশাপাশি এখানে প্রান্তিক মানুষের জীবনযাত্রা ও সংস্কৃতিও পর্যটনে গুরুত্বপূর্ণ।’ এর ফলে আগামীতে জলদাপাড়া গ্রাম পর্যটনে যথেষ্ট গুরুত্ব পাবে বলেই মনে করছেন বিধায়ক। তাঁর কথায়, ‘ওই কলেজের পড়ুয়ারা যে জলদাপাড়া গ্রামের ডেটা তৈরি করবেন তা পরে সংগ্রহ করা হবে। তার ভিত্তিতেই একটি প্রোজেক্ট রিপোর্ট তৈরি করে পর্যটন দপ্তরকে দেওয়া হবে। বেসরকারি স্তরেও প্রচার হবে।’
এমন উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়ে শালকুমার-১ গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান শ্রীবাস রায় বলেন, ‘জলদাপাড়া গ্রামে আলিপুরদুয়ার-১ পঞ্চায়েত সমিতি একটি গেস্টহাউস তৈরি করবে। এবার শালকুমারহাটে জলদাপাড়ার দ্বিতীয় গেট দিয়ে এলিফ্যান্ট রাইডও শুরু হয়েছে। আর বিধায়কের চেষ্টায় দু’দিনের এই বিশেষ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে জলদাপাড়া গ্রামের প্রচার এখন সর্বত্র হবে। এভাবে পর্যটনের প্রসার ঘটলে গ্রামেরই আর্থসামাজিক উন্নতি হবে।’

