তুফানগঞ্জ: চলছে আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনা। মরশুম বদলের শুরুতে ঘরে ঘরে সর্দি-কাশি ও জ্বরের প্রকোপ বাড়বে। আক্রান্ত হওয়ার দু’-এক দিনে তা সেরেও যাবে এমনটা সাধারণ বিষয়। কিন্তু চিন্তার ব্যাপার, এ মরশুমে তেমনটা হচ্ছে না। দুই-তিনদিনের জায়গায় রোগ সারতে সময় লাগছে ২৫ দিন থেকে ১ মাস। আর এই সময়ে আক্রান্তরা ছুটে বেড়াচ্ছেন হাসপাতাল বা ডাক্তারের চেম্বারে।
এই আবহে তুফানগঞ্জ মহকুমা হাসপাতালের বহির্বিভাগ বা চিকিৎসকদের চেম্বার গত কয়েকদিনে ক্রমাগত ভিড় বেড়েছে জ্বর-সর্দিকাশিতে আক্রান্ত রোগীদের। মিলছে ডায়ারিয়া আক্রান্ত রোগীও। যদিও এ ব্যাপারে চিকিৎসকদের আশ্বাস, মরশুমি রোগ দীর্ঘ সময় চললেও ভয়ের কারণ নেই। আবহাওয়ার তারতম্যের ব্যবধান কমলেই রোগের প্রকোপ কমবে বলে মনে করছেন তাঁরা।
মঙ্গলবার কামাত ফুলবাড়ি এলাকার রোগীর পরিজন মহুয়া বর্মন ৫ বছরের শিশুকে নিয়ে আসেন মহকুমা হাসপাতালে। টিকিট কেটে বহির্বিভাগের লাইনে দাঁড়িয়ে তিনি জানালেন, এক সপ্তাহ ধরে নাতির সর্দিকাশি না কমায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। এখানে এসে জানতে পারেন আরও অনেক শিশু এই সমস্যার শিকার হয়েছে।
আরেক রোগীর পরিজন বালাভূত এলাকার বাসিন্দা নজরুল হকের কথায়, ‘বাড়িতে সবার একে একে জ্বর হয়েছে। ফার্মাসি থেকে আনা ওষুধ খেয়েও জ্বর কমছে না। তাই আজ এখানে এসেছি। ডাক্তার আশ্বাস দিয়েছেন হাসপাতালের দেওয়া ওষুধেই কাজ হয়ে যাবে।’ এবিষয়ে বিশিষ্ট চিকিৎসক শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ শরিফ মালিকের বক্তব্য, ‘ভাইরাসজনিত কারণে ছড়াচ্ছে জ্বর, সর্দি ও কাশি। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকার কারণে সবচাইতে বেশি সমস্যা হচ্ছে শিশুদের। এছাড়াও রয়েছে বয়স্করা। অবাক করা বিষয়, এ মরশুমে এই সমস্যাগুলি রোগীদের দেহে স্বাভাবিকের চেয়েও বেশি দিন ধরে থাকছে। এক্ষেত্রে অনেকে ভেঙেও পড়ছেন।’ তাঁর আরও সংযোজন, আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। যেহেতু এটি ভাইরাসজনিত সমস্যা, তাই জ্বর সর্দিতে আক্রান্তদের সংস্পর্শে আসা একেবারে উচিত নয়। একইসঙ্গে সোশ্যাল গ্যাদারিংয়ে শিশুদের না নিয়ে যাওয়াই ভালো।’
তুফানগঞ্জ মহকুমা হাসপাতাল সূত্রে খবর, বর্তমানে দৈনিক ৭৫০ জনের মতো রোগী চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে আসছে। যার প্রায় ৭০ শতাংশ শিশু। তারপরেই রয়েছে বয়স্কের সংখ্যা। গত কয়েকদিন ধরে শহর ও শহরতলি এলাকায় উপসর্গগুলো ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পাওয়ায় আতঙ্কে রয়েছেন সাধারণ মানুষ।