উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: আইন কলেজের ক্যাম্পাসেই ছাত্রীকে ধর্ষণে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ নেতা মনোজিৎ মিশ্র গ্রেপ্তার হতেই তাঁর বিরুদ্ধে একের পর এক কুকীর্তির অভিযোগ সামনে আসতে শুরু করেছে। জানা গেছে, বিয়ের প্রস্তার দিয়ে একাধিক বার মেয়েদের যৌন হেনস্তা ও শ্লীলতাহানি করেছে মনোজিৎ। প্রতিবাদ করলে মারধর করা হত। ‘তুই কি আমায় বিয়ে করবি (তুমি কি আমায় বিয়ে করবে)’ মেয়েদের লক্ষ্য করে এই শব্দবন্ধটা মনোজিতের মুখে প্রায়শই শোনা যেত বলে জানিয়েছেন তার সহপাঠীরা বা ওই কলেজের ছাত্রীরা। সব অভিযোগ লিখিত আকারে দায়ের না হলেও তার হাতে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন অনেকেই।
২০১৩ সালের কলেজে ভর্তি হয় মনোজিৎ। কিন্তু খারাপ ব্যবহারের জন্য ২০১৪ সালে তাকে কলেজ থেকে বহিস্কার করা হয়। কিন্তু প্রভাব খাটিয়ে ফের ২০১৭ সালে কলেজে রি অ্যাডমিশন হয় মনোজিতের। ২০২২ সালে কলেজে পড়াশোনার পাট চুকে গেলেও কলেজে প্রতিনিয়তই আসত সে। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় গুন্ডা দিয়ে পেটানোর হুমকি দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। চেতলা থানায় তার বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টারও অভিযোগ রয়েছে। বেআইনি অস্ত্র নিয়ে একবার সে গ্রেপ্তারও হয়। অনেক ছাত্রীকে শ্লীলতাহানি করার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। কেউ প্রতিবাদ করলে তার বাবা-মাকে গ্রেপ্তার করিয়ে দেওয়ার হুমকি দিত এই ছাত্রনেতা। মনোজিতের কলেজের কয়েকজন জুনিয়র এবং সহপাঠীরা জানিয়েছেন, মনোজিত অনেক দিন ধরেই মেয়েদের নিয়ে অশালীন মন্তব্য করত। মেয়েদের অশ্লীল ছবি ও ভিডিও বানাত এবং সেগুলি বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে দিত। ২০১৬ সালে গুন্ডা নিয়ে এসে কলেজে ভাঙচুর চালানোর অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে। কলেজে শ্লীলতাহানি, মদের আসর বসানো ছিল তার কাছে খুব স্বাভাবিক ঘটনা। কলেজ কর্তৃপক্ষ বা পুলিশ কেউই মনোজিতের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নিতে সাহস দেখায় নি।
কিন্তু গত বুধবার কলেজের ছাত্রীকে কলেজের ইউনিয়ন রুমে ও নিরাপত্তারক্ষীর ঘরে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে মনোজিৎ ও তার সঙ্গীদের বিরুদ্ধে। এই ঘটনা সামনে আসতেই পুলিশ মনোজিৎ ও তার সঙ্গীদের গ্রেপ্তার করে। তার বিরুদ্ধে একাধিক ধারায় মামলা দায়ের হয়েছে। মনোজিতের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে সরব হয়েছে গোটা রাজ্য পুলিশও তদন্তে নেমে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ সূত্র হাতে পেয়েছে। যার জেরে মনোজিত ও তার সঙ্গীদের শাস্তি পাওয়ার সম্ভাবনা উজ্জ্বল বলেই মনে করা হচ্ছে।