Top News

ফোনের ওপাড়ে তখনও প্রেমিকা, ভূমিকম্প কেড়ে নিল প্রাণ, মৃত্যুর মুহূর্তের সাক্ষী রইলেন প্রেমিক

উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্কঃ শুক্রবার রাতে শক্তিশালী ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে মরক্কো। স্থানীয় সময় অনুযায়ী রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ ভূমিকম্প হয়। রিখটার স্কেলে যার মাত্রা ছিল ৬.৮। এর পর ছোট ছোট কয়েকটি আফটার শকেও কেঁপেছে মরক্কো। মারাকাশ শহর থেকে ৭২ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে ছিল ভূমিকম্পের উৎসস্থল। মরক্কোর এই ভয়াবহ ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা দু’হাজার ছাড়িয়ে গিয়েছে। আহতের সংখ্যাও দু’হাজারের বেশি বলে জানা যাচ্ছে। ধ্বংসস্তূপের নীচে এখনও অনেকের আটকে থাকার আশঙ্কা করছে প্রশাসন।

আফ্রিকার উত্তর-পশ্চিমের ছোট পাহাড়ি দেশ মরক্কো। ভূমিকম্পে বিপর্যস্ত গোটা দেশ। ধ্বংসস্তূপে পরিনত হয়েছে একাধিক গ্রাম। গত ছয় দশকের মধ্যে মরক্কোর মাটিতে এটাই সবচেয়ে ভয়ঙ্কর ভূমিকম্প। এই ভূমিকম্পের অভিঘাতে নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে আটলাস পর্বতমালা থেকে মাত্র কয়েক কিলোমিটার দূরের তিখত গ্রাম। বর্তমানে কার্যত শ্মশান এই গ্রাম। শুক্রবারের আগে পর্যন্তও এই জমজমাট ছিল গ্রামটি। আর এখন শুধুই ধ্বংসস্তূপ। যে দিকেই চোখ যায়, স্বজনহারাদের কান্না, চিৎকার, হাহাকার। গ্রামের আর একটি বাড়িও আস্ত নেই। ধ্বংসস্তূপে কেউ খুঁজে বেড়াচ্ছেন স্ত্রী-পুত্র-স্বামীকে, তো কেউ মা-বাবাকে। কেউ প্রেমিকাকে।

এরমাঝেই এক মর্মান্তিক ঘটনা বললেন মরক্কোর তিখত গ্রামের বাসিন্দা ওমর আইত এমবারেক। এমবারেক ধ্বংসস্তূপের মাঝে খুঁজে বেড়াচ্ছেন তাঁর প্রেয়সীকে। শুক্রবার রাতে ফোনে প্রেমিকার সঙ্গে কথা বলছিলেন ওমর। আর সেই সময়ই কেঁপে ওঠে মাটি। চারিদিকে চিৎকার, বাঁচার আর্তনাদ। তারপর থেকে ফোনের ওপারে থাকা প্রেয়সীর কোনও খোঁজ নেই। তত ক্ষণে সব শেষ। ফোনে বার বার কথা বলতে চেয়েও সাড়া পাননি তিনি। পরে জানতে পারেন বাড়ি চাপা পড়়ে মৃত্যু হয়েছে প্রেমিকা মিনা আইত বিহিরও। কোনওক্রমে নিজে প্রাণে বেঁচে মিনার তাঁর বাড়িতে ছুটে গিয়েছেন ওমর। ধ্বংসস্তূপ হাতড়ে প্রেমিকা মিনার দেহ খুঁজে বার করেছেন তিনি। মিনার দেহ যখন খুঁজে পাওয়া যায়, তখনও তাঁর হাতে ফোন ধরা ছিল। ওমর জানিয়েছেন, কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই তাঁর সঙ্গে মিনার বিয়ে হওয়ার কথা ছিল। সেই নিয়েই দুই পরিবারের ব্যস্ততা তুঙ্গে ছিল। আর তার মধ্যেই এই ঘটনা। মিনার দেহ এখন গ্রামেরই এক অস্থায়ী কবরস্থানে শায়িত রয়েছে। পাশাপাশি কম্বল মুড়ি দিয়ে রাখা হয়েছে আরও প্রায় ৭০টি মৃতদেহ।

তিখত গ্রামের অন্তত ১০০টি পরিবারের বাস ছিল। তিখতের বাসিন্দা, বছর ৩০-এর যুবক মহসিন আকসুম সংবাদমাধ্যমে বলেন, ‘‘আমাদের গ্রাম শেষ হয়ে দিয়েছে। অসংখ্য মানুষের সঙ্গে আমাদের সাজানো গোছানো গ্রামটিরও মৃত্যু হয়েছে।’’

Sandip Sarkar

Sandip Sarkar Reporter based in Darjeeling district of West bengal. He Worked in Various media houses for the last 22 years, presently working in Uttarbanga Sambad as Sr Sub Editor.

Recent Posts

Delhi | ফের দিল্লির একাধিক হাসপাতালে বোমাতঙ্ক! তল্লাশি অভিযান বম্ব স্কোয়াডের

উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: বেশ কিছুদিন আগেই দিল্লির (Delhi) একাধিক স্কুল বোম মেরে উড়িয়ে দেওয়ার…

5 mins ago

Akhilesh Yadav | ওস্তাদো কি ওস্তাদ সেই অখিলেশ

রূপায়ণ ভট্টাচার্য, রায়বরেলি: গৌরীগঞ্জে কংগ্রেসের বহু পুরোনো অফিসের প্রাচীরে তখন পার্টির পতাকা লাগানো হচ্ছিল। অবাক…

18 mins ago

Railway | আলিপুরদুয়ার ডিভিশনে কাজ শুরু, ১৩০ কিমি গতিতে ছুটবে ট্রেন

চাঁদকুমার বড়াল, কোচবিহার: বর্তমানে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের (Railway) পাঁচটি ডিভিশনে গড়ে ১০০ থেকে ১১০ কিমি…

20 mins ago

গরমে বাড়িতে বানান আম পোড়া শরবত, রইল সহজ রেসিপি…

উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: গরমকালের জন্য আদর্শ কাঁচা আম পোড়ার শরবত। গরম যতই অসহনীয় হোক,…

26 mins ago

Abhijit Ganguli | পদ্ম প্রার্থী অভিজিতের মামলা শুনলেন না বিচারপতি সেনগুপ্ত! কেন?

উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক:  পদ্মের অভিজিতের (Abhijit Ganguli) মামলা ছেড়ে দিলেন কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High…

37 mins ago

গরমে বাড়িতে পিঁপড়ের উপদ্রবে অতিষ্ঠ? কীভাবে রেহাই পাবেন?

উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: গরম বাড়লেই পিঁপড়ের উপদ্রব বাড়ে সারা বাড়িতে। ঘরোয়া কয়েকটি জিনিসেই পিঁপড়ের…

45 mins ago

This website uses cookies.