উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্কঃ সোমবার নাগরাকাটার বামনডাঙ্গা চা বাগানের বিপর্যস্ত এলাকা পরিদর্শনে যাওয়ার পথে আক্রান্ত হয়েছেন বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু ও বিজেপি বিধায়ক শংকর ঘোষ। তাঁদের গাড়ি দাঁড় করিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন কিছু মানুষ। সেই সময়ই বিক্ষোভকারীদের ছোড়া ইটের আঘাতে চোখের নীচে হাড় ভেঙে খগেন মুর্মুর। মারধর করা হয় শিলিগুড়ির বিজেপি বিধায়ক শংকর ঘোষকেও। ভাঙচুর করা হয় তাঁদের গাড়িও। রক্তাক্ত অবস্থায় খগেন মুর্মুকে নিয়ে আশা হয় শিলিগুড়ির একটি বেসরকারি হাসপাতালে। সেখানেই চিকিৎসা চলছে খগেন মুর্মু ও শংকর ঘোষের।
বিজেপির অভিযোগ, সংখ্যালঘুদের লেলিয়ে দিয়ে এমন কাণ্ড ঘটিয়েছে তৃণমূল। অপরদিকে এই হামলার নেপথ্যে জনরোষের তত্ত্ব খাড়া করতে মরিয়া তৃণমূল। এই ঘটনায় শাসকদলের মদত, প্রশাসনিক ব্যর্থতাকেই কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছে বিজেপি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেছেন, ওই দুর্গত এলাকায় ৩০-৪০টা কনভয় নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। আর তাতেই ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে স্থানীয় বাসিন্দাদের। এবার এই বিষয়টি পালটা দিলেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
মঙ্গলবার দুধিয়ায় দুর্গত এলাকা পরিদর্শনে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তারপর খগেন মুর্মুকে দেখতে মাটিগাড়ার একটি বেসরকারি হাসপাতালে যান। এরপর সাংবাদিক বৈঠক করেন। সেখানেই এই হামলা প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “ভিআইপির নাম করে তাঁরা গতকাল ৩০টা গাড়ি ৪০ টা গাড়ি নিয়ে ঢুকেছে। আমি তিনটে গাড়ি নিয়ে যাই দুর্গত এলাকায়। একটা সামনে থাকে, একটা মাঝে আর একটা পিছনে। একে রাস্তা খারাপ। তারপর যদি ৪০ টা গাড়ি নিয়ে ঢুকি তাহলে কি পাহাড়ে প্রেশার পড়ে না? আমি তাই স্ট্রিকলি বলেছি, আমাদের কেউ গেলে ৩টের বেশি গাড়ি নিয়ে যাবে না।”
মুখ্যমন্ত্রী এই মন্তব্য প্রসঙ্গে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “গতকাল বামনডাঙ্গা চাবাগানের দুর্গত এলাকায় যাচ্ছিলেন ৮ জন বিধায়ক, ৩ জন সাংসদ ছিলেন, পাঁচ খানা গাড়ি ছিল, আর ১২টা মিডিয়ার গাড়ি ছিল।” এরপরই মুখ্যমন্ত্রীর নাম না করে তিনি বলেন, “যিনি বলছেন, তাঁর জন্য চার ঘণ্টা রাস্তা বন্ধ থাকে, দড়ি ঘেরা থাকে, আর তিনি ২৫০-৩০০ গাড়ি নিয়ে বের হন। ওনার জোড়া হেলিকপ্টার রয়েছে, জোড়া চাটার্ড ফ্লাইট রয়েছে, তারপরও যখন রাস্তায় বের হন, রাস্তা বন্ধ করে দেন। তাঁর মুখ থেকে এসব কথা মানায় না।”
প্রসঙ্গত, সোমবার দুপুরে দুর্যোগকবলিত নাগরাকাটায় একাধিক এলাকা পরিদর্শনে গিয়েছিলেন মালদহ উত্তরের সাংসদ খগেন মুর্মু এবং শিলিগুড়ির বিধায়ক শংকর ঘোষ। বামনডাঙ্গায় ঢোকার আগে বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয় তাঁদের। তাঁদের গাড়ি লক্ষ্য করে নদীর ধার থেকে পাথর তুলে ছুড়তে থাকেন বিক্ষোভকারীরা। লাঠি, জুতো নিয়ে চড়াও হন অনেকে। গাড়ি থেকে নেমে বিক্ষোভকারীদের বোঝানোর চেষ্টা করার সময়ই ইটের আঘাত লাগে খগেন মুর্মুর চোখের নীচে। মারধর করা হয় শংকর ঘোষকেও। অভিযোগ দায়ের হওয়া সত্ত্বেও ঘটনার ৩৬ ঘণ্টা পরেও কোনও অভিযুক্তকেই গ্রেপ্তার করেনি পুলিশ।

