মাথাভাঙ্গা: সরস্বতীপুজোর দিনটিকে এমনিতে বলা হয় ‘বাঙালির ভালোবাসা দিবস’। এবার দু’দিন পুজোর তিথি পড়ায় রবিবারের পর সোমবারও তরুণ-তরুণীদের উৎসবের উৎসাহ ছিল চোখে পড়ার মতো। বিদ্যার দেবী সরস্বতীর অন্য নাম পলাশপ্রিয়া। পলাশ ফুল এই পুজোর অন্যতম উপাচার। এর সঙ্গে এই পুজোর অনুষঙ্গ হিসেবে চাহিদা বেড়েছে রকমারি গোলাপের।
মাথাভাঙ্গা শহরে এদিন এক একটি ডাচ গোলাপ ১০০ টাকায় আর রানাঘাটের লাল গোলাপ এক একটি ৫০ টাকায় বিক্রি হল। শহরের ফুল বিক্রেতা দিলীপ চক্রবর্তী বলেন, ‘সরস্বতীপুজো বাঙালির ভ্যালেন্টাইন্স ডে। তাই প্রতি বছরই প্রিয়জনকে দেবার জন্য গোলাপ ফুলের চাহিদা থাকে। এ বছর ডাচ গোলাপ এবং রানাঘাটের গোলাপ ছাড়াও স্থানীয় ফুলচাষিদের চাষ করা গোলাপ মিলিয়ে মোট তিন হাজার গোলাপ বিক্রির জন্য তুলেছিলাম। সন্ধের মধ্যে এসব বিক্রি হয়ে গিয়েছে। মুনাফাও হয়েছে বেশ।’
ফেরার পথে পা বাড়িয়ে শীত। আর তার সঙ্গে প্রকৃতির মিষ্টি রোদে কলেজ পড়ুয়া তরুণ প্রজন্মের পলাশের কুঁড়ির মতো অস্ফুট আবেগ যেন সরস্বতীপুজো প্রাঙ্গণে এগিয়ে এসেছে গোলাপ হাতে। প্রেমের দিবস বলে কথা তাই গার্লফ্রেন্ডের হাতে পছন্দের গোলাপ তুলে দিতে সোমবার সকালেই ধূপগুড়ি থেকে মাথাভাঙ্গায় ছুটে এসেছেন সাগ্নিক মিত্র। সাগ্নিক স্বীকার করলেও শহর লাগোয়া হাজরাহাটের সুজন সরকার, অমিত সরকাররা প্রিয়জনের জন্য গোলাপ কিনলেও সংবাদমাধ্যমের কাছে বললে পাছে বাড়িতে ধরা পড়ে যাবে এই ভয়ে দুজনেই জানায় তাদের কোনও গার্লফ্রেন্ড নেই।
যে সামনে নেই সে কী মনে থাকতে পারে না? কবি তো বলেছেন মনে তার নিত্য আসা যাওয়া। আর কবির কথা একটু ঘুরিয়ে বললে বলতে হয়, মুখ ফুটুক না ফুটুক আজ বসন্ত। কে না জানে বসন্ত মানেই গোলাপের দিন। শহরের অপর ফুল ব্যবসায়ী সুনু দাস এক হাজার গোলাপ তুলেছিলেন বিক্রির জন্য। এক কথায় নিঃশেষিত। সুনু্ বলেন, ‘গত বছর সরস্বতীপুজো এবং ভ্যালেন্টাইন্স ডে একই দিন ১৪ ফেব্রুয়ারি পড়েছিল বলে বেশি ফুল তুলেছিলাম। এবছর ভেবেছিলাম বেশি ফুল তুললে বিক্রি নাও হতে পারে কিন্তু আমার ধারণা ভুল। গোলাপ না থাকায় অনেক ক্রেতাকেই ফিরিয়ে দিতে হয়েছে।’ তবে শুধু ছেলেরাই নয় এদিন গোলাপের দোকানে বিভিন্ন বয়সি মহিলা ক্রেতাদের সংখ্যাও নেহাত কম ছিল না। তবে ক্যামেরা দেখে অনেককেই আড়ালে চলে যেতে দেখা গেল। এ বছর ডাচ গোলাপ এবং রানাঘাটের গোলাপ ছাড়াও স্থানীয় ফুলচাষিদের চাষ করা গোলাপ মিলিয়ে মোট তিন হাজার গোলাপ বিক্রির জন্য তুলেছিলাম। সন্ধের মধ্যে এসব বিক্রি হয়ে গিয়েছে।