অনীক চৌধুরী, জলপাইগুড়ি: শরতের আকাশে সাজোসাজো রব। শিল্পীরা ব্যস্ত মণ্ডপ সাজাতে। কুমোরটুলিতে মা সেজে উঠছেন। পুজোর আগে সবাই ব্যস্ত নিজেদের সাজপোশাক গুছিয়ে নিতে। অনেকেই শপিং মল, পাড়ার দোকান, বিউটি পার্লারমুখী। সেইসঙ্গে দর্জির দোকানে ভিড় জমিয়েছেন মহিলারা। ব্লাউজ, কুর্তি তৈরির পাশাপাশি শাড়ির ফলস আর পিকোর কাজ করতে হিমসিম খাচ্ছেন জলপাইগুড়ি শহরের দর্জিরা। চন্দভান মণ্ডল জানালেন, হাতে নেওয়া সমস্ত কাজ কীভাবে শেষ করবেন তা তিনি বুঝতে পারছেন না। রামপদ সরকার, মহম্মদ কাসেমদেরও একই কথা।
দিনভর বিভিন্ন দোকান ঘুরে পুজোর বাজার সারছেন শহরবাসী। পুজোর সাজে নতুন শাড়িতে ফলস-পিকো না করিয়ে নিলে হয়! সেই কাজ সারতেই মেয়েরা দিনবাজার, টেম্পল স্ট্রিট, বয়েলখানা বাজারে দর্জির দোকানে ভিড় জমিয়েছেন। দর্জিরা পুরোনো কাজের চাপে ব্যস্ত। অনেকেরই করুণ আর্জিতে বাধ্য হয়েই নতুন কাজ নিচ্ছেন দর্জিরা। রাত জেগে কাজ শেষ করতে ব্যস্ত তাঁরা। অনেকে নিজেদের কাজের দর বাড়িয়ে নিয়েছেন। সাধন নামে একজন বললেন, ‘এখন ব্লাউজের অর্ডার বেশি রয়েছে। তাই ফলস-পিকোর কাজ নিতে চাইনি। কিন্তু, কয়েকজন এমনভাবে অনুরোধ করলেন, যে আর না করতে পরিনি।’ তিনি জানালেন, কাজ নিয়ে ৩০-৩৫টা শাড়ি জমে গিয়েছে। তাই নতুন করে কাজ নেননি। বাকিরা যাঁরা শাড়ির কাজ নিয়ে এসেছিলেন তাঁদের মহালয়ার পরে আসতে বলেছেন।
একটু বেশি টাকা খরচ করে শাড়ির কাজ করিয়ে নিতে চান রিয়া সেন, প্রতিমা রায়, বিদিধা দত্তরা। দর্জিরা একেকটা শাড়ির ফলস-পিকোর জন্য ১০০-১২০ টাকা নিচ্ছেন। পদ্মা সরকার বললেন, ‘সাতদিন আগে এবার সাতটা শাড়ি ফলস-পিকো করাতে দিয়েছি। আজ নিতে এলাম। আরও কিছু কেনা বাকি, সেগুলো কিনে আবার দর্জির দোকানে আসব।’ স্নেহা চৌধুরী জানালেন, বাজারে এসে দক্ষ দর্জিকে দিয়েই শাড়ির পিকোর কাজ করিয়েছেন। সবাই যখন ফলস-পিকোর কাজ করতে ব্যস্ত তার মাঝে অন্য সুর টেম্পল স্ট্রিটের দর্জি চন্দভানের কথায়। তাঁর বক্তব্য, ‘ব্লাউজের কাজ ভালোই আসছে। তবে আগের মতো বাজার ভালো নয়। শাড়ির কাজও খুব একটা আসেনি।’ তবুও পরিস্থিতি হয়তো বদলে যাবে। রামপদরা স্বপ্ন দেখছেন