কল্লোল মজুমদার,মালদা: গত শীতের মরশুমে হতাশ করেছিল পঞ্চানন্দপুর। কিন্তু এবার পঞ্চানন্দপুরের গঙ্গাবক্ষে ভিড় জমিয়েছে হাজার হাজার পরিযায়ী পাখি। কিন্তু আতঙ্কের কারণ চোরাশিকারি। ভাত, মাছের সঙ্গে মাংসের লোভে বিষ মিশিয়ে দেদার চলছে পাখি শিকার। যা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে বন দপ্তরের ভূমিকায়।
পাখিপ্রেমীদের তরফে অভিযোগ উঠেছে, বিষ সহ চোরাশিকারিদের হাতেনাতে ধরে বন দপ্তরের হাতে তিনজনকে তুলে দেওয়া হলেও কর্মীরা ধৃতদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার ব্যাপারে উদাসীন। যা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন জেলার পাখিপ্রেমীরা। কারণ, মাত্র কয়েকদিনের মধ্যেই জামিন পেয়ে গিয়েছে ধৃতরা। এই নিয়েও বন দপ্তরের ভূমিকায় উঠেছে প্রশ্ন। যদিও ওই এলাকার বন দপ্তরের রেঞ্জার সরস্বতী মণ্ডল জানিয়েছেন, ‘ধৃতদের জেল হেপাজত হয়েছে। নিয়মিত নজরদারি চালাচ্ছেন বনকর্মীরা।’
মালদা(Malda) জেলার কালিয়াচক-২ নম্বর ব্লকের পঞ্চানন্দপুরের একপাশ দিয়ে বয়ে গিয়েছে গঙ্গা নদী। প্রতি বছর বন্যার জল কমলে নদীবক্ষে জেগে ওঠে বিশাল বিশাল চর। গঙ্গার মাছের লোভে ওই চরগুলিতে প্রতি বছরের মতো এবারও ভিড় জমিয়েছে বিদেশি হাঁসের দল। কী কী হাঁস এসেছে, সেই প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক বিপ্লব মুখোপাধ্যায় জানান, ‘বড়ি হাঁস, চখাচখি, পিইং হাঁস, ছোট লালশির, মেটে হাঁস, বড় দিঘর, বড় রাঙামুড়ি, রাঙামুড়ি, বামুনিয়া হাঁস, ভূতিহাঁস, স্বর্ণালোচনের মতো বিভিন্ন প্রজাতির পরিযায়ীরা ভিড় জমিয়েছে গঙ্গার চরে। এছাড়াও, নানা ধরনের ছোট জলজ পাখি সহ পাটকিলেশির গাঙচিল, কালাশির গাঙচিলের দেখা মিলেছে। মনে হচ্ছে আগামীতে আরও পাখি আসতে চলেছে।’
আইনজীবী তথা ওয়াইল্ডলাইফ ফোটোগ্রাফার কৃষ্ণগোপাল দাসের অভিযোগ, ‘পরিযায়ী পাখিদের বাঁচাতে চোরাশিকারিদের বিরুদ্ধে আরও কঠোর হতে হবে বন দপ্তরকে। না হলে আগামীতে এই চরগুলিতে পরিযায়ী পাখি আসা বন্ধ হয়ে যাবে। যেভাবেই হোক, চোরাশিকারিদের বিরুদ্ধে সকলকে দলবদ্ধ হতে হবে।’
এদিকে একটি সূত্রের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, সম্প্রতি ধৃত চোরাশিকারিদের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হলেও বিষ দিয়ে মেরে ফেলার কথা মামলায় উল্লেখ করা হয়নি। এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ এক পাখিপ্রেমী তাপস কুণ্ডুর অভিযোগ, ‘চোরাশিকারিদের বিরুদ্ধে বন দপ্তর কঠোর না হলে পাখি মারা বন্ধ করা যাবে না। কিন্তু আমরা যা খবর পাচ্ছি তা অত্যন্ত হতাশাজনক।’