নাগরাকাটাঃ হাতির হামলায় বিছানার ওপর ভেঙে পড়া দেওয়ালের একাংশে চাপা পড়ে জখম হলেন এক মহিলা। ভাঙা দেওয়ালের খাঁজে লুকিয়ে পড়ে বরাত জোরে বাঁচলেন আরও এক মহিলা। ঘটনাটি ঘটে শুক্রবার ভোর রাতে নাগরাকাটার সুলকাপাড়ার ভক্তাধূড়া গ্রামে। একের পর এক বাড়িতে হামলা চালায় দলছুট। ক্ষতিগ্রস্ত হয় ওই এলাকার মোট ৪ টি বাড়ি।
জানা গিয়েছে, এদিন ভোর রাতে ভক্তাধূড়ায় দলছুট হাতি প্রথম হামলা চালায় সেখানকার ফ্রান্সিং ভেংরা নামে এক ব্যক্তির বাড়িতে। এরপর ভেঙে দেয় বিনোদ মিঞ্জ নামে আরও এক বাসিন্দার বাড়ির দেওয়াল। এরপর চলে আসে দেবী প্রধান নামে এক মহিলার বাড়িতে। দেওয়াল ভাঙার আওয়াজ পেয়ে ঘুমিয়ে থাকা ওই ওই মহিলা চোখ মেলতেই দেখেন মূর্তিমান বিভীষিকার মতো সামনে একটি হাতি দাঁড়িয়ে আছে। ভাঙা দেওয়ালের খাঁজের ভেতর বসে পড়ে আত্মগোপন করলে তিনি প্রাণে বাঁচেন।
এরপরের ঘটনা আরও মারাত্মক। হাতিটি সেখান থেকে বেরিয়ে ঝালো ওরাওঁ নামে এক মহিলার বাড়ির দেওয়াল ভাঙা শুরু করে। ঝালোও সেসময় ঘুমিয়ে ছিলেন। ইট-সিমেন্টের চাঙর তাঁর বিছানার ওপর এসে পড়ে। তিনি ভাঙা দেওয়ালের নীচে চাপা পড়েন। পরে স্থানীয়রাই তাঁকে উদ্ধার করে সুলকাপাড়া গ্রামীন হাসপাতাসে নিয়ে আসে। ক্ষতিগ্রস্থ দেবী তামাং বলেন, নিমেষের মধ্যে একের পর এক বাড়িতে হামলা চালিয়ে হাতিটি গাঁ ঢাকা দেয়। এমন ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির মুখে যেন কাউকে পড়তে না হয়।
অন্যদিকে ওই পঞ্চায়েতেরই অধীন সোমাপাড়া নামে আরও একটি এলাকায় জঙ্গল থেকে বেরিয়ে লোকালয়ে এসে হামলা চালায় দুটি হাতি। জোড়া হাতির হামলায় ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে এলাকার ৩ টি বাড়ি। ক্ষতিগ্রস্থ একটি পরিবারের কর্ত্রী পুষ্পা বেগম বলেন, বাসন কোসন, আসবাবপত্র কোন কিছুই অক্ষত নেই। সাবাড় করে ঘরে মজুত চাল-আটাও। সব মিলিয়ে সুলকাপাড়ায় এক রাতে ৭ টি বাড়ি হাতির হামলার শিকার। একাধিক বাড়ির পরিস্থিতি এমনই যে পরিবারগুলি কোথায় থাকবেন বুঝে উঠতে পারছেন না। বন দপ্তরের খুনিয়া রেঞ্জের রেঞ্জার সজল দে বলেন, আহত মহিলাকে বন দপ্তরের পক্ষ থেকে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়। হাতির গতিবিধির প্রতি বনকর্মীরা নজর রেখে চলেছেন।
এদিকে শুক্রবার রাতে মেটেলি ব্লকের কিলকোট চা বাগানেও দলছুট হাতির হামলায় একটি রেশন দোকান ও বাড়ি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে বলে বন দপ্তর সূত্রের খবর। এই মূহুর্তে দলছুট কিংবা দু তিনটি দলের হাতিগুলিকে বাগে আনাই বন দপ্তরের কাছে চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।